কি দিয়ে শুরু করবো?
ঘরের পাশেই ছিলো কামরাঙ্গাগাছ,
থোকায় থোকায় ঝুলে থাকতো ফলগুলো
এপাড়া ওপাড়া দু পাড়ার পুচকেরা বসে থাকতো সে গাছের তলে,
পাখিরাও যেনো ইচ্ছে করেই ফেলে দিতো কামরাঙ্গা
কত আনন্দে হুড়োহুড়ি করে কুড়িয়ে নিতো সবাই।
বাড়ির পেছনে বিশাল বাঁশঝাড়
সাথে হরেক রকমের গাছের ছমছমে ভুতুড়ে পরিবেশ,
বড় বড় গাব গাছের সরু ডালে কত চড়েছি
বড়দের চোখ ফাঁকি দিয়ে পেড়েছি পাকা গাব,
দাদু বলতো ঐখানে যেওনা,তেঁতুল তলার গাব গাছে শিংওয়ালা ভুত আছে-
ভয়ে চোখ দুটো ছানাবড়া হয়ে যেতো
আজ সেখানেই গড়ে উঠেছে সু-উচ্চ অট্টালিকা,
হয়তো দাদুর মনেই নেই ভুতুড়ে গাব তলাতেই এখন আড্ডাখানা।
মনে পরে এখনো খুব
পাখি ডাকা ভোর না হতেই চলে যেতাম নিতাইদের ফুল বাগানে,
যদি কেউ আমার আগেই চলে যায়
জোৎস্নার আলোকে ভোর ভেবে চলে যেতাম প্রায়,
এসব কান্ড দেখে বাবা চটে যেতেন খুব
শাসন বারন বকুনি খেয়েও কমতোনা সে লোভ।
সেই কবে বানের জলে স্নান করেছি মনে নেই
এখনো বানের পানি আসে,
কেউ স্নান করেনা সে জলে,হয়না ছুটা ছুটি ভেলা ভাসিয়ে-
পদ্ম পাতায় বসে এখনো ব্যাঙ ডাকে
শালুক শাপলা কত ফুটে থাকে,শুধু পদ্মকুড়োনীরা হারিয়ে গেছে।
এখানেই ছিলো খেলার মাঠ,বট গাছটাও হারিয়ে গেছে কালের স্রোতে
মেঠোপথ টা হয়ে গেছে কংক্রিট আর পিচ ঢালাইয়ের রাস্তা,
হা-ডুডু কানামাছি বৌ-ছি খেলার নাম শুনলে হা হয়ে তাকিয়ে থাকে ছেলে মেয়েরা”
যেনো তারা রূপকথার গল্প শুনছে।
কুপির আলো আর ছনের ঘরের গল্প কেউ শুনতে চায়না
অথচ সেগুলোই স্মৃতিময় সোনালী দিন হয়ে গেথে আছে হৃদয়ে,
এখানে সেখানে আরো কত কি ছিলো-
পূর্ণতা শুন্যতার হিসেব করে এ জীবনটা গেলো।