সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৫১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

মুসলিম জীবনে পবিত্র ইদে মিলাদুন্নবী (সাঃ) গুরুত্ব – মাওলানা শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: সোমবার, ৩ অক্টোবর, ২০২২, ৯:১২ অপরাহ্ণ

আজ পবিত্র ১২ রবিউল আউয়াল। ইসলাম ধর্মের সর্বশেষ নবী ও রাসুল হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর পবিত্র জন্ম ও ওফাতের পুণ্য স্মৃতিময় দিন, পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী। ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের একই দিনে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তাই এই দিনটি মুসলমানদের কাছে বিশেষ গুরুত্ববহ। এই দিনটিকে মনে করা হয় অশেষ পুণ্যময়, আশীর্বাদধন্য একটি দিন হিসেবে।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) নবুয়তপ্রাপ্তির আগেই খ্যাতি অর্জন করেছিলেন ‘আল-আমিন’ নামে। এই খ্যাতি ছিল তাঁর ন্যায়নিষ্ঠা, সততা ও সত্যবাদিতার ফল। এসব সদ্গুণ ধর্ম-সম্প্রদায়নির্বিশেষে সর্বশ্রেষ্ঠ মানবিক গুণাবলি হিসেবে সব কালে, সব দেশেই স্বীকৃত। এসব ছাড়াও তাঁর মধ্যে সম্মিলন ঘটেছিল সমুদয় মানবীয় সদ্গুণের: করুণা, ক্ষমাশীলতা, বিনয়, সহিষ্ণুতা, সহমর্মিতা, শান্তিবাদিতা। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি কর্মময়তাও ছিল তাঁর কাছে গুরুত্বপূর্ণ। পরবর্তী সময়ে তিনি ইসলামের সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ নবী হিসেবে বিশ্বমানবতার মুক্তি ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠায় ব্রতী হয়েছিলেন। অসাধারণ চিন্তাশীল মানুষ ছিলেন তিনি এবং চিন্তাকে কাজে রূপ দিতে তাঁর সমগ্র জীবন হয়ে উঠেছিল বিপুল কর্মময়।
আরব ভূখণ্ডে তাঁর আবির্ভাব ঘটেছিল এমন এক যুগে, যখন পুরো অঞ্চলটি নিমজ্জিত ছিল অশিক্ষা, কুসংস্কার, গোষ্ঠীগত হানাহানি, নির্মম দাসপ্রথা, নারীর প্রতি চরম বৈষম্যসহ নানা রকম সামাজিক অনাচারে। সেই নৈরাজ্যকর অমানিশায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাব ঘটে আলোর দিশারি রূপে। অন্যায়-অবিচার-অজ্ঞানতার আঁধার থেকে মানুষকে তিনি চালিত করেন সত্য ও ন্যায়ের আলোকিত পথে। ইসলামের সেই আলোর দিশা ক্রমে ব্যাপ্ত হয়ে পড়ে পৃথিবীর বিভিন্ন কোণে। সার্বিক অর্থে মানবজাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্যই আবির্ভাব ঘটেছিল এই মহামানবের।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মুসলমানদের রাসুল; কিন্তু অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলোর মানুষকেও তিনি ভালোবাসতেন সমানভাবে। তাঁর সত্য ও ন্যায়ের আদর্শ ছিল সর্বমানবিক। মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে মানবিক মঙ্গল সাধিত হয়; করুণা ও ভালোবাসা মানবজাতিকে হিংসা ও হানাহানি থেকে মুক্ত রাখতে পারে। আজকের পৃথিবীতে যে হিংস্র হানাহানি চলছে, তা থেকে পরিত্রাণের পথ রয়েছে এই মহান ব্যক্তিত্বের প্রদর্শিত শান্তি ও সমঝোতার পথে। হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও করুণার অনন্য দৃষ্টান্ত। শুধু কথায় নয়, প্রতিটি বাস্তব কাজের মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের মনে এই শুভবোধ জাগ্রত করার চেষ্টা করেছেন যে, মানুষ হলো আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা জীব।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর