হাসপাতালের মধ্যে চিকিৎসাবিহীন ভাবে এক অজ্ঞাত যুবক (২২) তিনদিন যাবত পরে থাকলেও অসুস্থ ওই যুবকের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসেনি কেউ। হৃদয় বিদারক এ ঘটনাটি ঘটেছে বরিশালের গৌরনদী ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শনিবার রাতে ওই যুবককে হাসপাতালের মধ্যে থেকে উদ্ধার করে চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন এক সরকারী কর্মচারী।
স্থানীয়রা জানান, গত বুধবার (২৪ আগষ্ট) অসুস্থ ওই যুবককে হাসপাতালে ভর্তি করেন পুলিশ সদস্যরা। ভর্তির পর প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেয়া হলেও বৃহস্পতিবার ((২৫ আগষ্ট) থেকে ওই যুবক চিকিৎসাবিহীন ভাবে হাসপাতালের মধ্যে পরে থাকলেও হতভাগ্যে ওই যুবকের হয়নি কোন চিকিৎসা।
সরকারী কর্মচারী ও গৌরনদীর টিখাসার এলাকার বাসিন্দা মোঃ শিপন হাওলাদার জানান, শনিবার রাতে হাসপাতালের সিঁড়ির গোড়ায় মেঝে থেকে ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে সে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। তার চিকিৎসা নিজের সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাবো। তিনি আরও জানান, তিনদিন যাবত হাসপাতালের মেঝেতে থাকায় যুবকের শরীরে পোকায় ও পিঁপড়ায় বাসা বেঁধেছিলো। এছাড়াও এতদিন না খেয়ে থাকায় সে খুবই অসুস্থ।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ মুনীর জানান, ওই যুবককে নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করে বেডে দেয়া হয়েছে। সে কি রোগে আক্রান্ত তা জানতে পরিক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার মাজেদুল ইসলাম কাওছার জানান, ওই যুবক তিনদিন হাসপাতালের মেঝেতে ছিলো না। ২৪ আগষ্ট তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পর যাবতীয় চিকিৎসা দিয়ে বেডে রাখা হয়েছিলো। কিন্তু রোগি মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় নিজেই নিচে নেমে এসেছে। হাসপাতালের স্টাফরা তাকে কয়েক বার নিচ থেকে উপরে বেডে নিয়ে রেখেছেন।
তিনি আরও জানান, রোগীকে চিকিৎসা কিংবা ওসুধপত্র দেওয়ার দায়িত্ব চিকিৎসকদের। কিন্তু অজ্ঞাত রোগীদের ¯^জনদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব কিন্তু চিকিৎসকদের নয়। অনেক সময় জটিল রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার করতে হয়। এক্ষেত্রে অজ্ঞাত রোগী হলে কেউ রিসিভ করতে চায় না। অজ্ঞাত রোগীর চিকিৎসার ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন, সমাজসেবা অফিস, পুলিশ ও সচেতন জনগণ মিলে সমন্বিতভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করলে এসব রোগীকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার পাশাপাশি রোগীর স্বজনদের খুঁজে পাওয়া সম্ভব বলেও ডাঃ মাজেদুল কাওছার উল্লেখ করেন।
এ বিষয়ে জানতে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মনিরুজ্জামানের ০১৭১১৩৬৮৮২৪ নম্বরে ফোন করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া যায়নি।