সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:৩০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

টাকার অভাবে মৃত্যুর প্রহর গুনছে ভাঙ্গুড়ার আ: রাহিম!

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ১২ জুলাই, ২০২৪, ৪:০৭ অপরাহ্ণ

‘বাবার তো টাকা নাই, আমি কি বাঁচব’ এই আকুতি নিয়ে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে দশম শ্রেণিতে পড়ুয়া স্কুল ছাত্র আ: রাহিম(১৪)। সমবয়সীরা যখন স্কুলে যায় তখন ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকে রাহিম। দেড় বছর আগেও রাহিম ছিল সুস্থ-স্বাভাবিক। পড়া শোনা ও খেলা ধুলায় মেতে থাকতো সারাদিন। গরিব বাবা-মায়ের কাজে সহযোগিতা করতো সে। কিন্তু দেড় বছর আগে হঠাৎ করেই শুরু হয় পেট ব্যাথা ও বমি। এরপর ধীরে ধীরে কঙ্কালসার হতে থাকে রাহিমের শরীর। প্রায় হারিয়েই গেছে বাকশক্তি। খেতে পারে না কোনো কিছুই। ফ্যাকাসে হয়ে পড়েছে চোখ মুখ। শরীর শুকিয়ে কাঠ। বুক-পিঠ ও পাঁজরের হাড় বেরিয়ে পড়েছে। অজানা রোগে আক্রান্ত রাহিমকে দেখে মনে হবে কোনো জীবন্ত লাশ!

ছেলের এমন করুণ অবস্থা দেখে দিনমজুর বাবা শেষ সম্বল ও বিক্রি করে দেশের বিভিন্ন যায়গায় ডাক্তার ও কবিরাজ দেখান। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। ডাক্তার কোনো রোগ ধরতে পারেননি। এই দেড় বছরের ব্যবধানে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের লামকান গ্রামের বকুল হোসেন-মিম খাতুন দম্পতির বড় ছেলে রাহিম এখন মৃত্যু পথযাত্রী। শীর্ণকায় শরীরে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে শিশুটি।

জানা যায়, দিনমজুরি করে কোনোমতে সংসারের খরচ চালান বকুল হোসেন। দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার বড় রাহিম। দেড় বছর আগে হঠাৎ করেই শুরু হয় শিশুটির পেট ব্যাথা ও বমি। এরপর স্থানীয় হাসপাতাল ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রাহিমকে। সেখানেও রোগ ধরা না পড়ায় পরবর্তীতে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার সাভার কেয়ার হাসপাতাল ও ঢাকা বার্ডেম হাসপাতালে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ ব্যাগ রক্ত দেয়া হয়েছে রাহিমকে। এর মধ্যে ছেলের চিকিৎসা করানোর জন্য ধারদেনা ও নিজের শেষ সম্বল জমি বিক্রি করে প্রায় দশ লক্ষাধিক টাকা খরচ করেছেন বাবা বকুল হোসেন।

রাহিমের বাবা-মা জানান, সঠিক রোগ ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা বলেছেন, উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে রাহিমকে। অতিসত্তর রোগ নির্ণয় এবং উন্নত চিকিৎসা দেওয়া না গেলে রাহিমকে বাঁচানো সম্ভব নয়। কিন্তু দিন মজুরি কাজ করা রাহিমের বাবার পক্ষে দেশে ডাক্তার দেখানোই এখন কষ্ট্যসাধ্য, সেখানে বিদেশে নেওয়ার ভাবনা অসম্ভব তাদের কাছে। বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা। কিন্তু বিদেশে নিয়ে চিকিৎসার খরচ জোগানো সম্ভব নয় বাবা বকুল হোসেনের। ছেলেকে নিয়ে এখন মহাখালী শেখ রাসেল গ্যাস্টোলিভার হাসপাতালে ছেলের মৃত্যুর প্রহর গুনছেন অসহায় বাবা। টাকার কাছে হেরে যেতে বসেছে রাহিমের জীবন। হাল ছেড়ে দিয়েছেন বাবা বকুল হোসেন। কিন্তু ছেলের কষ্ট এবং বাঁচার করুণ আকুতি দেখে সইতে পারছেন না মা মিম খাতুন। প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবানদের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

ছেলেকে বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে অশ্রসিক্ত মা মিম খাতুন চলনবিলের আলোকে বলেন, রাহিম আমার প্রথম ছেলে। তার এমন কষ্ট সহ্য হচ্ছে না। আমার স্বামীর পক্ষে টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয় বলে তিনি হাল ছেড়ে দিয়েছেন কিন্তু আমি তো মা। কোনো মায়ের পক্ষেই সম্ভব না ছেলের মৃত্যু মেনে নেওয়া। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সমাজের বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ, আমার বুকের ধনকে আপনারা বাঁচান।

এ ব্যাপারে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছা: সুলতানা জাহান বকুল চলনবিলের আলোকে বলেন, পরিবারটি খুবই অসহায়। আমার কাছে তারা এসেছিল। আমি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। আসলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা দেওয়ার মতো বরাদ্দ নেই। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী অথবা সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে এলে শিশুটি চিকিৎসা পেতো বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আ: রাহিমের চিকিৎসার জন্য কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে তার বাবার এই নাম্বার-০১৭৪৪-১৬৪৭৫০ (বিকাশ পার্সোনাল)


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর