আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী শুরু হচ্ছে খোলা বাজারে চাল বিক্রির কার্যক্রম (ওএমএস)। একই সঙ্গে শুরু হচ্ছে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী। নবেম্বর পর্যন্ত চলবে এই খাদ্যবন্ধব কর্মসূচী। অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে এই কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জনকণ্ঠকে বলেন, চালের বাজার নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে একযোগে ওএমএস এবং খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী হাতে নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ওএমএস কর্মসূচীর মাধ্যমে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ৪ হাজার টনের বেশি চাল বিক্রি করা হবে। এর পাশাপাশি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী মিলে বিপুল পরিমাণ চাল বাজারে যাবে। এতে বাজারে চালের ওপর চাপ কমবে এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে থাকবে। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আশাকরি চালের দাম নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। আউশ উঠতে যাচ্ছে। সামনে আমন উঠবে।
সূত্র জানায়, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বিভিন্ন শহরে একযোগে ২ হাজার ১৩টি ডিলারের মাধ্যমে ওএমএসের কার্যক্রম চলবে। প্রতি ডিলার দিনে দুই টন করে চাল বরাদ্দ পাবেন। একজন ডিলার দিনে ৪০০ পরিবারের কাছে এই চাল বিক্রি করবেন। এতে দিনে মোট ১৬ লাখ ১০ হাজার ৪০০ পরিবার ৩০ টাকা কেজি দরে ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন এই কর্মসূচীর মাধ্যমে।
এছাড়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় সারা দেশে মোট ৫০ লাখ পরিবার সুবিধা পাবেন। দেশের ৫০ লাখ হতদরিদ্র পরিবারকে এই কর্মসূচীর আওতায় আনা হয়েছে। ১৫ টাকা কেজি দরে তারা এই চাল সংগ্রহ করতে পারবেন। এই কর্মসূচীর আওতায় এক পরিবার মাসে ৩০ কেজি করে চাল সংগ্রহ করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী একসঙ্গে চালু হলে আমি মনে করি চালের দাম স্থিতিশীল অবস্থায় চলে আসবে। আমাদের সরকারী পর্যাপ্ত মজুদ আছে, আমরা তো মানুষের জন্যই মজুদ করি। যারা এ চাল নিবে তাদের তো বাজার থেকে আর চাল কিনতে হবে না। সেখানে তো আমরা ভরসা করতেই পারি।
খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় বছরের কর্মাভাবকালীন ৫ মাস (মার্চ-এপ্রিল, সেপ্টেম্বর-নবেম্বর) পরিবার প্রতি ১৫ টাকা কেজি দরে মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেয়া হয়। অন্যদিকে ওএমএস কর্মসূচীর আওতায় যে কেউ ডিলারের কাছ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে সর্বোচ্চ ৫ কেজি চাল কিনতে পারেন।
চালের দাম বাড়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন দুটি মৌসুমের সন্ধিক্ষণ, বোরো চলে গেছে, আমন আসবে। অনেক জায়গায় খরার কারণে মানুষ আমন লাগানো নিয়ে ভয়-ভীতিতে ছিল। এর সঙ্গে পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। পরিবহন খরচের হারের চেয়ে চালের দামটা বেশি বেড়েছে। সেখানে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীও আছে। এটা পরিষ্কার কথা, আমাদের অস্বীকার করার কিছু নেই। তবে সেটাও আমরা মনিটরিং করছি। অবৈধ মজুদের বিষয়ে আমাদের তো নিয়মিত মনিটরিং আছেই। সেটা আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে মাঠে নামতে বলেছি। পাঁচটি মনিটরিং কমিটি হয়েছে আগেই, সেগুলো সক্রিয় হবে। জেলা প্রশাসকদের এখানে বসেই নির্দেশ দেয়া হয়েছে, তারা যাতে বাজারটা পুরোপুরি মনিটরিং করেন। কোথাও অবৈধভাবে ধান ও চালের মজুদ থাকলে আগে যেভাবে ক্র্যাশ প্রোগ্রাম চালানো হয়েছে সেভাবে চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।