নদীমাতৃক বাংলাদেশের ঢাকা বিভাগের পার্শবর্তী রাজশাহী বিভাগের অন্তর্গত সিরাজগঞ্জ জেলাধীন চৌহালী উপজেলা রক্ষা বেরিবাঁধ চৌহালী উপজেলার আপামর জন সাধারণের প্রানের দাবি। নদী খনন করে পাড় বেঁধে চর ও মেইনল্যান্ডকে রক্ষা করার যে দাবিটি বর্তমান সময়েই যে শুধু করা হচ্ছে এমন নয় । বরং আমাদের পূর্বপুরুষগণও এই দাবি সর্বোচ্চ মহল পর্যন্ত করেছিলেন। ভাবতে কষ্ট হয় এই ভেবে যে, মৌলিক অধিকার বঞ্চিত এই হিংস্র যমুনা নদী বিধ্বস্ত চৌহালীর মানুষের কথা উচ্চ মহলের কেউই আন্তরিকতার সাথে ভাবেনি! ছোট খাটো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট বা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দেখা যায়। কিন্তু চৌহালী নামক একটি উপজেলার অবহেলিত, অধিকার বঞ্চিত , ভাগ্য বিরম্বিত জনপদকে নিয়ে টেকসই ও ইতিবাচক পদক্ষেপ কেন গ্রহন করা হচ্ছেনা তা আমার বোধগম্য নয়! শুধু তাই নয় , চৌহালী সরকারি কলেজের ভবনগুলো অত্র উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহার করায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যহত হয়েছে।
এই এলাকার হাজার হাজার শিক্ষার্থী মৌলিক অধিকার ‘শিক্ষা’ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। কার্যকরি পদক্ষেপ না থাকায় ভূখন্ড / চাষাবাদের জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় খাদ্য শস্য উৎপাদন করতে না পারায় মৌলিক অধিকার ‘খাদ্য’ থেকে এ এলাকার মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। নদীর বুকে জেগে উঠা চরে কৃষি বিভাগের উপস্থিতিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে আধুনিক চাষাবাদের ব্যবস্থাও করা হয়নি। বসতভিটা হারিয়ে ভূমিহীন হয়েছে, গৃহহীন হয়ে মৌলিক অধিকার ‘বাসস্থান’ থেকে বঞ্চিত হয়েছে এলাকার শত সহস্র পরিবার। সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কার্যালয় না থাকার দরুন ও প্রয়োজনীয় রাস্তাঘাট না থাকায় সরকারি প্রায় সকল সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এলাকার জনগণ। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের উপার্জন না থাকায় মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। বারংবার বসতবাড়ি ভেঙ্গে এক চর থেকে আরেক চরে পুনরায় বসতি স্থাপন করতে নিঃস্ব থেকে আরো নিঃস্ব হতে হচ্ছে হাজার হাজার পরিবারকে । বাপ দাদার বসতভিটা ছেড়ে অন্যত্র পাড়ি জমাতে হয়েছে অনেক পরিবারকে। বিভিন্ন জায়গায় আশ্রিত থেকে জীবিকা নির্বাহ করতে হচ্ছে হাজারও পরিবারকে । তাদের নাম ঠিকানায় এখনও চৌহালী’র নাম লেখা আছে ।
নির্বাচনের সময়ে তাদেরকে ভোট প্রদানের নিমিত্তে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে , মিথ্যে আশ্বাস দিয়ে এলাকায় আনা হয়। তার পর যে লাউ সেই কদু। এ যে কত বড় যন্ত্রণার কথা (!!!) তা লিখে প্রকাশ করার মত ভাষা জ্ঞান আমার মত ক্ষুদ্র একজন লেখকের না থাকারই কথা। যেহেতু চৌহালী নামক ভূখন্ডের সাথে মিশে আছে আমার নারীর সম্পর্ক সেহেতু হৃদয়ের দংশিত অনুভূতি প্রকাশ করার দুঃসাহস দেখানো আমার জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ। আমি বাংলাদেশের প্রথম শ্রেনীর একজন নাগরিক হয়ে আমার নাগরিক অধিকারের কথা বলবনা তা কি করে হয়! এমতাবস্থায়, বাংলাদেশের অন্য আর দশটি উপজেলার মত চৌহালী উপজেলাটিকেও সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় অধিকার প্রদান করে ঢেলে সাজানোর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা’র সুদৃষ্টি কামনা করছি। আমরা চৌহালীবাসি মাথা উঁচু করে বাঁচতে চাই। আমাদের মৌলিক অধিকারগুলো ফিরে পেতে চাই।
লেখকঃ মোঃ আঃ হান্নান মোরশেদ ( রতন)
(মাস্টার্স অব সোসাল সাইন্স) সমাজকর্মী
চৌহালী, সিরাজগঞ্জ।