রবিবার, ০৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৫০ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

পানিশূন্য চলনবিল! চাটমোহরে পানি সংকটে দিশেহারা পাট চাষিরা

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০২২, ৮:১৫ অপরাহ্ণ

দেশের বৃহত্তম বিল চলনবিলসহ নিচু অঞ্চল আষাঢ় মাসেই তলিয়ে যায়। নদী-নালা, খাল-বিল থৈ থৈ করে পানিতে। এখন শ্রাবণ মাস, চলনবিলে এবার ভরা বর্ষাতেও পানি নেই। এর প্রভাব পড়েছে তিন জেলার ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া এই বিলের ওপর নির্ভশীল মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দুই-তিন দশক আগেও আষাঢ় শ্রাবণ মাসে চলনবিল থাকত পানিতে টইটম্বুর। এখন গোটা বিল পানিশূন্য। জলবায়ু পরিবর্তনের নির্মম উদাহরণ হতে চলেছে এই চলনবিল।

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় চলতি মৌসুমে পাটের বাম্পার ফলন হলেও তীব্র তাপতাহ ও পানির অভাবে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কৃষক। তাপদাহে জমিতেই মরে যাচ্ছে পাট অপরদিকে পাটের আঁশ শুকিয়ে যাচ্ছে। বৃষ্টি না হলে ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে সোনালী আশ পাটে। অধিকাংশ খাল, বিল, ডোবা এবং জলাশয়ে পানি নেই। যেটুকু পানি আছে তা পাট পচানোর জন্য যথেষ্ট নয়। ফলে পাট চাষিরা বৃষ্টির আশায় পাট কেটে জমিতে ফেলে রেখেছে।

আবার কেউ গাড়িতে করে বিল এলাকায় নিয়ে জাগ দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অনেকে আবার বাড়ি বা সড়কের পাশের ডোবা, খাল ও জলাশয়ের অল্প পানিতেই পাট পচানোর জন্য জাগ দিচ্ছেন। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর উপজেলার কৃষকরা রেকর্ড পরিমান জমিতে পাট বপন করেছে। এপ্রিলের শেষের দিক থেকে কয়েক দফায় বৃষ্টির দেখা দেওয়ায় চাষিরা পেঁয়াজ ঘরে তোলার সঙ্গে সঙ্গে জমিতে পাট বপন করেন। কৃষকরাও পাট বোনার উত্তম সময় ভেবে সুযোগ কাজে লাগান। চলতি মৌসুমে ৮ হাজার ৮০০শত ৯০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় জমিতেই পাট শুকিয়ে যাচ্ছে। পাট আবাদের শুরুতে আগাম বন্যায় নিচু জমির কিছু পাট তলিয়ে নষ্ট হয়। এখন অনাবৃষ্টি আর টানা খরার কারনে পাট জাগ দেওয়ার পানি পাচ্ছেন না কৃষকেরা।
হরিপুর এলাকার পাট চাষী আব্দুস সালাম বলেন, এ বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে পাট আবাদ করেছেন। ফলনও ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না।

উপজেলার হরিপুর, মুলগ্রাম, পার্শ¦ডাঙ্গা ও গুনাইগাছা ইউনিয়নে ঘুরে কয়েকজন পাটচাষির সাথে কথা হলে তারা বলেন, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে এখন শ্রাবণ এলো চলতি বছর এ অঞ্চলে বৃষ্টি ও বর্ষা সেভাবে হয়নি। ফলে পাট গাছ বড় হলেও পানির অভাবে গাছ পুড়ে যাওয়ায় অপরিপক্ক পাট কেটে ফেলতে হচ্ছে। আঁশের ফলনও কম হচ্ছে। সেই সঙ্গে নদীনালা, খাল-বিল, ডোবা, নালায় পানি না থাকায় পাট চাষিরা পাট পঁচাতে পারছেন না।

উপজেলা কৃষি অফিসার এ এ মাসুম বিল্লাহ বলেন, মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি ভাল। রোগ ও পোকা-মাড়ক দমন ব্যবস্থাপনাসহ অন্যান্য পরিচর্যা বিষয়ে পরামর্শ নিয়ে মাঠ পর্যায় কাজ করছেন উপ-সহকারী কর্মকর্তাবৃন্দ। গত কিছু দিন আগে উজান থেকে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির পানিতে বিলের নিম্নাঞ্চালের পাট ডুবে যাওয়ার মহুর্তে কিছু পাট কাটা হয়েছে। হঠাত পানি চলে যাওয়ায় এবার উপজেলায় উচু এলাকায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে, এটা প্রাকৃতিক দুযোগ এখানে কারো কোন হাত নেই।

 

 

#CBALO / আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর