সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

মাসুদ রানা প্রতিবন্ধী হলেও মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চান 

আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ
আপডেট সময়: সোমবার, ৬ জুন, ২০২২, ৯:৫১ অপরাহ্ণ

নাম মাসুদ রানা। লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারলেও দু-চার কদমের বেশি হাঁটতে পারেন না সে। ২২ বছর বয়সী এ তরুণ জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। দুই পা হাঁটুর নিচ থেকে অবশ। বাবা ছিলেন দিনমজুর। অভাব-অনটনের সংসারে তার চিকিৎসা করা সম্ভব হয়নি।
সে ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের চরসাহাপুর গ্রামের ইমান আলীর ছেলে। তিনি নিজ বাড়ির সংলগ্ন সড়কের পাশে প্রায় দুই মাস হলো টিনের ছাউনি দিয়ে চা, সিগারেট, বিস্কুট, চিপস, চকলেট, আচারসহ হরেক রকমের মালামালের পসরা সাজিয়েছেন।
এলাকার শিশু-কিশোররা তার দোকানের কাস্টমার। প্রতিদিন যা বেচাকেনা হয় দিন শেষে তা ভাইয়ের হাতে তুলে দেন।
বাবা বেঁচে নেই। বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিকের স্বল্প আয়ের সংসারে মাসুদ রানার ঠাঁই হলেও তিনি ভাইয়ের কাঁধের বোঝা হয়ে থাকতে চান না। পড়াশোনা না জানলেও হিসাব-নিকাশে বেশ পারদর্শী। বাড়ির সামনে কাঠের চৌকির ওপর টিনের ছাউনি দিয়ে চা-বিস্কুটসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র বেচাকেনা শুরু করেছেন।
দরিদ্র পরিবারের প্রতিবন্ধীরা ভিক্ষাবৃত্তিকে যখন স্বাভাবিকভাবে পেশা হিসেবে বেছে নেন, সেখানে মাসুদ রানা ব্যতিক্রম। মানুষের কাছে হাত পেতে সাহায্য নিতে চান না। আত্মপ্রত্যয়ী মাসুদ রানা স্বপ্ন দেখেন ছোট পরিসরে হলেও ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করবেন।
মাসুদ রানা বলেন, সংসারে অভাব থাকলেও কখনো মানুষের কাছে হাত পেতে সহযোগিতা চাইনি। ছোটবেলা থেকেই ভিক্ষাবৃত্তিকে অপছন্দ করি। আমার বড় ভাই দোকান দিয়ে দিয়েছেন এতেই আমি সন্তুষ্ট।
তিনি জানান, তার দোকানে প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা বেচাকেনা হয়। পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রতিবন্ধী ভাতা পান। তার আশা দোকানটি আরও বড় করবেন।
মাসুদ রানা বলেন, ‘প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। মনোবল ও আত্মপ্রত্যয় থাকলে প্রতিবন্ধীরাও স্বাবলম্বী হতে পারে।’
মাসুদ রানার বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘জন্ম থেকেই মাসুদ রানা প্রতিবন্ধী। হাঁটতে পারে না বলে স্কুলে যেতে পারেনি। এখনো হাঁটু গেড়ে চলাফেরা করে। একটি হুইল চেয়ারের জন্য বহুবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু এখনো ব্যবস্থা হয়নি। তবে জেলা সমাজসেবা অফিসার বলেছেন, এবার হুইল চেয়ার দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির সামনে টিনের ছাউনি দিয়ে দোকানটি করে দিয়েছি। এখানে বসে টুকটাক বেচাকেনা করে। কয়েক মাস পর টাকার ব্যবস্থা করে এখানে দোকানঘর নির্মাণ করে দেবো, যাতে সে ব্যবসা করে জীবন চালাতে পারে।’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক রাশেদুল কবির বলেন, ‌‘এখনো বরাদ্দ আসেনি। বরাদ্দ এলে প্রতিবন্ধী মাসুদ রানাকে একটি হুইল চেয়ার দেওয়া হবে। 

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর