মোঃ কামাল হোসেন যশোর থেকে:
যশোর জেলার সদর উপজেলার বসুন্দিয়ায় অবস্থিত মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী কথিত ডাঃ খলিলুর রহমানের খুঁটির জোর কোথায়? এমন প্রশ্ন স্থানীয় সচেতন মহলের মুখে মুখে। তার অপকর্মের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বারবার সংবাদ প্রকাশিত হলেও থেমে নেই তার অপকর্ম। সম্প্রতি সামাজিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে খলিলুর রহমান পরিচালিত মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকের বর্তমান ও অতীতের বিভিন্ন কর্মকান্ডের বহুমূখী ক্ষোভ, ঘৃণা ও প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। সর্বশেষ গত ২৬জুন বৃহস্পতিবার রাতে মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন একজন দরিদ্র পরিবারের প্রসূতি মায়ের জরুরী রক্তের প্রয়োজনে রক্তদাতা ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘পাশে আছি আমরা’র নেতৃবৃন্দের সাথে রক্তের ক্রস-ম্যাচিং না করায় ক্লিনিকের পরিচালক খলিলুর রহমানের সাথে বাকবিতন্ডা ও বিরোধ সৃষ্টি হয়। ঘটনার বিবরণে রক্তদাতা জানান, ঐদিন রাত সাড়ে ১১টায় একজন গর্ভবতী রোগীর জন্য ‘এ’ পজেটিভ রক্তের চাহিদা জানিয়ে স্থানীয় সামাজিক সংগঠন ‘পাশে আছি আমরা’র হেল্পলাইনে ফোন করা হয়।
করোনাকালীন এই দুর্যোগের মধ্যেও সংগঠনের মোট ৩জন স্বেচ্ছাসেবী ঐ ক্লিনিকে উপস্থিত হলে খলিলুর রহমান তাদের কাছ থেকে এক ব্যাগ রক্ত সংগ্রহ করে কোনরকম পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়াই রোগীর শরীরে সরবরাহ করার উদ্যোগ নেন। এছাড়া খলিলুর রহমান স্বেচ্ছাসেবীর কাছ থেকে ‘এ’ পজিটিভ রক্ত সংগ্রহ করে রেজিস্টারভূক্ত করার সময় রক্তের গ্রপের স্থানে ‘ও’ পজিটিভ লিখে রাখেন। স্বেচ্ছাসেবীরা খলিলুর রহমানকে প্রশ্ন করেন, “আমরা আপনাকে ‘এ’ পজিটিভ গ্রুপের রক্ত দিয়েছি, কিন্তু আপনি আপনার রেজিস্টারে ‘ও’ পজিটিভ কেন লিখলেন? ভিন্ন গ্রুপের রক্ত রোগীর শরীরে পুশ করা হলে রোগীর প্রাণনাশের শংকা রয়েছে।
এমনকি আপনি আমাদের রক্ত পরীক্ষা এবং ক্রস-ম্যাচিং না করেই কীভাবে রোগির শরীরে পুশ করতে উদ্যোগী হলেন?” এমন বিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে একপর্যায়ে খলিলুর রহমান তাদেরকে সন্তোষজনক কোন উত্তর না দিয়ে তাদের সাথে বাক- বিতন্ডায় মেতে ওঠেন। তারা আরও জানায়, মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিকে যে সকল রক্তদাতা ইতিপূর্বে রক্ত দিয়েছেন তাদের অনেকেই রক্তের শিরায় বেশ কিছুদিন যাবৎ যন্ত্রনায় ভুগেছেন। এব্যাপারে খলিলুর রহমানকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি খুবই দক্ষতার সাথে বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলেও একপর্যায়ে তার ভুল স্বীকার করেন। উল্লেখিত ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের দ্বারা ঘটিত বিভিন্ন সময়ের অপচিকিৎসার বিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে সংবাদ প্রকাশের পরও কিভাবে এখনও তা চালু রয়েছে- এ ব্যাপারে এলাকাবাসী বিস্ময় প্রকাশ করেন।
তবে অনেকের মন্তব্য, এখানকার কিছু অসাধু ব্যক্তি পরোক্ষভাবে তার সহযোগিতা করায় তিনি তার ব্যবসা চালু রেখে সাধারণ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার এই ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারছেন। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত দীর্ঘদিন যাবৎ চলে আসা এই ক্লিনিকের অপচিকিৎসার বিরুদ্ধে স্থানীয় যুব সমাজের পক্ষ থেকে গণস্বাক্ষর সম্বলিত আবেদনপত্র প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছিল।