নড়াইলের গর্ব নড়াইলের অহংকার,বাংলা নাটকের শীর্ষে থাকা সবার প্রিয় মুখ,হৃদয়ের স্পন্ধন অভিনতা এস এম কামরুল বাহার দর্শকের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে একটা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন নাট্যাঙ্গনে।অভিনয়ের শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দুই তিনশত নাটকে অভিনয় করেছেন এই মেধাবী অভিনেতা। নড়াইলের কালিয়া উপজেলার নড়াগাতী থানার দক্ষিণ যোগানীয়া গ্রামে জন্ম এই কৃতি সন্তানের। তার পিতা শেখ বাদশাহ মিয়া তৎকালীন নড়াগাতী, খাশিয়াল ও লক্ষ্মীপাশা কাচারির নায়েব ছিলেন।পরর্বতীতে খুলনা প্লাটিনাম জুট মিলে কর্মরত আবস্থায় অবসর গ্রহণ করেন। তার দাদা শেখ লায়েক মিয়া এ অঞ্চলের বিখ্যাত গায়ক হিসাবে বেশ জনপ্রিয় ছিল বলে জানা যায়।এছাড়া খান সাহেব উপাধি পেয়েছিলেন তার বাবার দাদা, শেখ আব্দুল হক। তিনি বাঐসোনা ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট ছিলেন, নড়াইল ঋণ সালিশি বোর্ডের ম্যাজিস্ট্রেট ও যশোর জেলা বোর্ডের মেম্বার ছিলেন। ১৯৪৬ সালে নড়াইল-১ আসনের এমপি প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন চলাকালিন তিনি মৃত্যু বরন করেন। এছাড়া আব্দুল হকের দাদা ছিলেন এ অঞ্চলের গাতীদার বলে জনশ্রুতি আছে।
বর্তমানে তার চাচা হাজী শেখ শামসুর রহমান অস্ট্রিয়া প্রবাসী এবং অষ্ট্রিয়া আওয়ামীলীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এলাকার মানুষকে বিভিন্নভাবে সাহায্য সহযোগিতার পাশাপাশি সমাজ সেবা মুলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত আছেন।
এস এম কামরুল বাহার ছোট বেলা থেকে গায়ক দাদার সাহ্নিধ্যে থাকায় গানের প্রতি দুর্বল ছিলেন। কিন্তু তার বাবা শেখ বাদশা মিয়া গান পছন্দ না করায় কামরুলকে নিয়ে চাকুরীস্থল খুলনার খালিশপুর প্লাটিনাম জুটমিল স্কুলে ভর্তি করে দেন। ১৯৮১ সালে প্লাটিনার স্কুলের পক্ষে প্লাটিনাম অডিটরিয়ামে প্রথম মঞ্চ নাটক “রক্তিম বাংলা” মঞ্চস্থ করে প্রশংসা পান কামরুল বাহার। অতঃপর আশির দশক থেকেই ঢাকা থিয়েটারের অংগ সংগঠন “গ্রাম থিয়েটারে” যুক্ত হন। তার পর থেকেই ২০০৫ সাল পর্যন্ত টানা ২৫ বছর মঞ্চ নাটকে কাজ করেছেন। ১৯৯৬ সালে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের তালিকাভূক্ত শিল্পী হিসাবে কাজ শুরু করেন। ঢাকা পদধ্বনি থিয়েটারে শহিদুজ্জামান সেলিম পরিচালিত হুমায়ুন আহমেদের নাটক “১৯৭১” প্রথম মঞ্চে প্রদর্শন করে, যার কেন্দ্রীয় চরিত্রে ছিলেন কামরুল বাহার। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের বিশেষ শ্রেনীর অভিনেতা।
চলতি সময়ে এস এম কামরুল বাহার একজন ব্যস্ততম অভিনেতা। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে বর্তমানে তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক সম্প্রচারিত হচ্ছে। এছাড়া টিভি ও ইউটিউবের নাটকেও তিনি অভিনয় করে যাচ্ছেন নিয়মিত। তার অভিনীত ধারাবাহিক নাটক চাঁপাবাজ প্রচারিত হচ্ছে বৈশাখী টিভিতে, একশো তে একশো মাছরাঙ্গা টিভিতে, একুশে টিভিতে নাটাই ঘুড়ি, চ্যানেল আইতে ডিগবাজি, এটিএনে রং-বেরংয়ের মানুষেরা, বাংলাভিশনে নাটক হৈচৈ ডটকম ও রং তামাশার খেলা, দীপ্তি টিভিতে প্রচারিত হচ্ছে ধারাবাহিক নাটক মান অভিমান, নাগরিক টিভিতে বউ বিরোধ এবং চলতি মাসের ৫ তারিখ থেকে তমাল মাহাবুবের পরিচালনায় নতুন ধারাবাহিক নাটক নাটবল্টু একুশে টিভিতে প্রচারিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ধারাবাহিক নাটকে কাজ করে যাচ্ছন এই জনপ্রিয় অভিনেতা এবং সব ধারাবাহিকেই তিনি কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করছেন। এছাড়া চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ১০ তারিখ থেকে শাপলা মিডিয়ার প্রজোযনায় জেমমিন আক্তার নদীর পরিচালনায় “চৈত্র দুপুর” ছবিতে একটি প্রধান চরিত্রে অভিনয় করছেন বলে তিনি জানান। কামরুল বাহার শুধু ভাল অভিনেতাই নয়, ভাল মানুষ হিসাবে দর্শকের ভালবাসায় সিক্ত হতে চান নিরন্তন।
#চলনবিলের আলো / আপন