তথ্য সংগ্রহ মোঃ কামাল হোসেন অভয়নগর যশোর থেকে:
এই কফি হাউজকে নিয়েই প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মান্না দে গেয়েছিলেন কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই” গানটি! কফি হাউজের সেই আড্ডাটা গানটির গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের কথায় সুর দিয়েছিলেন নচিকেতার পুত্র সপর্ণকান্তি ঘোষ। মান্না দের মতে, গৌরীবাবু লিখেছিলেন দুর্দান্ত। সুরকার সুপর্ণকান্তি অসাধারণ কাজ করেছিলেন।এই গানটির জন্ম কাহিনীটি বেশ গল্পের মতো। সময়টা ১৯৮৩ সাল গীতিকার গৌরী প্রসন্ন মজুৃমদার তখন আশা ভৌসলেকে নিয়ে প্রচুর হিট প্রেমের গান লিখে চলেছেন। কিন্তু পুজার গান মান্না দের জন্য তিনি লিখতে পারছেন না সবই লিখেছেন পুলক বন্দ্যেপাধ্যয়। এ নিয়ে আক্ষেপ ছিল গৌরী প্রসন্নের মনে।এ সময় একদিন নচিকেতা ঘোষের নিউ আলিপুরের বাড়িতে গিয়েছিলেন গৌরী প্রসন্ন উদ্দেশ্য ছিল শক্তি ঠাকুরকে দিয়ে একটি গান তোলা সেই সময় সেরা জুটি ছিলেন নচিকেতা ও গৌরী প্রসন্ন।
সেই সূত্রে নচিকেতার ছেলে সুপর্ণকান্তির সংগেও বেশ ভাল সম্পর্ক। আড্ডার এক পর্যায়ে গৌরী প্রসন্ন বলেন তুমি তো অক্সফোর্ডের এম এ হয়ে গিয়াছো আড্ডা নিয়ে বাংলা গান গাইবে। সুপর্ণকান্তি এবার বলে কেন নয়।কফিহাউজের আড্ডা নিয়েও তো একটা গান লিখতে পারো।গৌরী প্রসন্ন এবার বলেন তোমার বাবা নচিকেতা ঘোষ কি আর সে গান গাইবেন শুরু হলো তর্ক চলছে বটে কিন্তু গৌরী প্রসন্ন এরই মধ্যে মনে মনে তৈরী করে ফেলেন দুটি লাইন,এর পরেই সুপর্ণকান্তিকে বললেন,লিখে নাও,কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই। কোথায় হারিয়ে গেল সোনালী বিকেল গুলো সেই। সুপর্ণকান্তি সংগে সংগে দুটো লাইনের সুর দিয়ে শুনিয়ে দেন। উপস্থিত শক্তি ঠাকুর সেবার পূজায় গানটা গাওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও সুপর্ণকান্তি রাজি হয়নি। তিনি সংগে সংগেই ঠিক করে নিয়েছিলেন মান্না দের কথা। কিন্তু গানের বাকি লাইন গুলো পরের দিন সকালেই গৌরী প্রসন্নের স্রী সুপর্ণকান্তিকে ফোন দিলেন।সারা রাত জেগে বহুদিন পরে গান লিখেছেন অসুস্থ গৌরী প্রসন্ন।
তখনই তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত দুদিন পরে গানটা নিয়ে হাজির। কিন্তু শেষ স্তবক যোগ করার পক্ষপাতী ছিলেন না গৌরী প্রসন্ন। সুপর্ণকান্তি চান যোগ করুন একটি স্তবক।শেষ পর্যন্ত রাজি হন। লেখেন সেই দুর্দান্ত লাইন,সেই সাতজন নেই,তবুও টেবিলটা আজও আছে। কিন্তু শেষ তিনটি লাইন তিনি লিখেছিলেন চেন্নাইয়ে চিকিৎসা করাতে যাওয়ার পথে হাওড়া স্টেশনে বসে। একটি সিগারেটের প্যাকেটের উল্টো পিঠে। এক চেনা লোকের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দেন সুপর্ণকান্তির কাছে। তার পর সুপর্ণকান্তির সুরে মুম্বাইয়ে গানটি রেকর্ড করেন মান্না দে। তৈরী হয়ে যায় আরও একটি ইতিহাস। এই নোভেল করোনা ভাইরাজ কালে চা অথবা কফি হাউজ বন্ধ লকডাউন না খেয়ে মরছে চা/কফি হাউজের মালিক কর্মচারীগণ তৈরী হলো আরো একটি নতুন ইতিহাস।