শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ০৮:৫৭ অপরাহ্ন

ই-পেপার

আটঘরিয়ায় সরিষা ফুলের মধু বিক্রি করে লাখ টাকা আয় ফজল প্রাং

মাসুদ রানা, আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: রবিবার, ১৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১০:৪৩ অপরাহ্ণ

মাঠজুড়ে সরিষার ক্ষেত। যেদিকে চোখ যায় সরিষার হলুদ ফুলের সৌন্দর্যে মন জুড়িয়ে যায়। শীতকালীন শস্য সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌচাষি ফজল প্রামানিক। বর্তমানে সরিষা ক্ষেতের মধু আহরণে ব্যস্ত মৌমাছিরা। মধু সংগ্রহের জন্য স্টিল ও কাঠ দিয়ে বিশেষ ভাবে তৈরি করা ১২৪টি বাক্স সরিষা ক্ষেতের লাগোয়া স্থানে সারিবদ্ধভাবে রেখে দিয়েছেন মৌচাষি ফচল প্রাং।

মৌমাছিতে টইটম্বুর প্রতিটি বাক্স। বাক্সগুলো থেকে সরিষা ক্ষেতের ফুলে ফুলে ভোঁ ভোঁ শব্দ তুলে ঢুঁ মারতেছে প্রশিক্ষিত মৌমাছিরা। এভাবে ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে চলে আসে বাক্সে। বাক্সগুলোর ওপরের অংশটা মোড়ানো কালো রঙের পলিথিন ও চট দিয়ে।

বাক্সগুলোর ভেতরে কাঠের তৈরি আটটি ফ্রেমের সঙ্গে মোম দিয়ে বানানো এক ধরনের সিট বিশেষ কায়দায় লাগানো। সেগুলো সরিষা ক্ষেতের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি বাক্সগুলোর ভেতরে দেওয়া হয়েছে রানি মৌমাছি। যাকে ঘিরে আনাগোনা করছে হাজারো পুরুষ মৌমাছি। রানির আকর্ষণে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌমাছিরা। একটি রানি মৌমাছির বিপরীতে কয়েক হাজারের মতো পুরুষ মৌমাছি থাকে একেকটি বাক্সে।

স¤প্রতি সরেজমিনে পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার একদন্ত ইউনিয়নের গোপালপুর চরপাড়া গিয়ে চলতি মৌসুমে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে দেখা গেছে সুজানগর উপজেলার রাধারনগন গ্রামের বাসিন্দা ফজর প্রাং। প্রতি বছরের এসময়ে তিনি এভাবেই মধু সংগ্রহ করেন। একই ধারাবাহিকতায় এবারো ৪০ দিন সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করবেন তিনি।

মৌচাষি ফজল প্রামামনিক এপ্রতিনিধিকে জানান, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে উপজেলারএকদন্ত ইউনিয়নের গোপালপুর চরপাড়া মাঠে মধু সংগ্রহ করছেন। ওই গ্রামের বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত সংলগ্ন জমিতে ১২৪টি বাক্স বসিয়েছেন তিনি। এসব বাক্স থেকে প্রতি ১০-১৫ দিন গড়ে প্রায় ৬-৭ মণ মধু পাওয়া যাচ্ছে। পুরো মৌসুমে ৪০-৫০ মণের উপরে মধু পাওয়ার আশা তার।
ফজল প্রাং আরও বলেন, আমি ১২৪টি বাক্স থেকে এখন পর্যন্ত ২৫ মণ মধু পেয়েছি। ৪০ দিনে ৪০ মণের উপরে মধু পাওয়ার আশা আছে। ৎুতি সপ্তাহে বাক্সগুলো থেকে মধু সংগ্রহ করছি। ৎুতি মণ মধু বর্তমানে পাইকারি ৮০০০-১০০০০ টাকায় বিক্রি করছি।

খুচরা ক্রেতাদের কাছে প্রতি কেজি মধু ৩০০-৪০০ টাকা দরে বিক্রি করছি। তবে বাজার দর ভালো পেলে ৎুতি মণ মধু পাইকারি ১২০০০-১৬০০০ টাকা দরে বিক্রি হবে। আশা করছি ৪০ দিনে যে পরিমাণ মধু সংগ্রহ হবে তা বিক্রি করে খরচ বাদে এক লাখ টাকার উপরে আয় করব।

স্থানীয়রা জানান, মৌচাষি ফজল প্রাং অত্যন্ত পরিশ্রমী। সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে মৌচাষিগুলো বাক্সে ফিরে আসার দৃশ্য খুবই ভালো লাগে। আমরা স্থানীয়রা দেখে আসছি ফজল সরিষা ফুলের মধুতে কোনো প্রকার ভেজাল নেই। গুণে ও মানে অত্যন্ত ভালো।

আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সজীব আল মারুফ বলেন, লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে আটঘরিয়া উপজেলায় এবারও সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। বাক্স পদ্ধতি ব্যবহার করে এসব সরিষা ফুল থেকে বাণিজ্যিক ভাবে মধু সংগ্রহ করছে মৌচাষিরা। সরিষা ফুল থেকে সংগ্রহ করা মধু গুণে ও মানে অত্যন্ত ভালো। সরিষা ফুলের মধুতে কোনো প্রকার ভেজাল থাকে না। একেবারে খাঁটি। আর এভাবে মৌমাছি চাষ করে মধু আহরণের মাধ্যমে বাড়তি আয় করে লাভবান হচ্ছেন অনেকেই।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com