বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

ই-পেপার

অভয়নগরে মহাকাল স্কুল এন্ড কলেজের ঢালাই কাজ বন্ধ করলেন এলাকাবাসি

মোঃ কামাল হোসেন, অভয়নগর(যশোর):
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬:২১ অপরাহ্ণ

যশোরের অভয়নগর উপজেলার মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের নির্মাণ কাজে নিন্ম মানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন এলাকাবাসি। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বললেন ভুল করে নিন্মমানের খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ার জানালেন এলাকাবাসির চাপে কাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। অধ্যক্ষকের কারসাজিতে ক্ষোভেু ফুসছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও এলাকাবাসি।

জানা গেছে, শিক্ষা ও প্রকৌশলী অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ১ কোটি ৬১ লাখ ৭৪ হাজার ৪শ’ টাকার বাজেটে অভয়নগর উপজেলার মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের এক তলা বিল্ডিংয়ের উপর ২য়, ৩য় ও ৪র্থ তালার কাজের অনুমতি পায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আ: সামাদ। তিনি কাজটি নগদ টাকা লাভে বিক্রি করে দেন যশোরের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রীন এন্টারপ্রাইজের মালিক মো: হাফিজুর রহমান খশরুর নিকট।

কাজের মেয়াদ প্রায় ৬ মাস আগেই শেষ হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রীন এন্টার প্রাইজ সম্প্রতি দ্বিতীয় তলার কাজ শুরু করেন। দ্বিতীয় তালার ছাদ ঢালায়ের সময় নিন্ম মানের খোয়া ও মরিচাপড়া রড দিয়ে তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করেন। পরে একই মানের সামগ্রী দিয়ে তৃতীয় তালার কাজ করার সময় এলাকাবাসির নজরে আসলে তাদের বিক্ষোভের মুখে কাজটি বন্ধ করে দেয়।

সংবাদ পেয়ে সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ফয়সাল খান ও কথিত সভাপতির দায়িত্বে চলছে নির্মাণ কাজ। অধ্যক্ষ ফয়সাল খান জানান, আমাদের প্রতিষ্ঠানের কাজ আমার শিক্ষকদের মধ্য থেকে একটি নির্মাণ কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তাদের তত্বাবধানে চলছে কাজটি। এসময় নির্মাণ কমিটির সদস্য খান-এ মজলিসকে আমাদের সাথে কথা বলার জন্য তিনি ডেকে পাঠান। কিন্তু খান-এ মজলিস জানান, তিনি নির্মাণ কমিটির কেউ নন। অধ্যক্ষ ফয়সাল খান তাকে ফোন করে ডেকে পাঠিয়েছেন।

অধ্যক্ষ ফয়সাল খানের সাথে কথা বললে তিনি প্রতিষ্ঠানের সভাপতি মো: শাহাজান সিরাজের সাথে কথা বলার জন্য অনুরোধ জানান, মহাকাল পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের সভাপতি দাবি করা ব্যক্তির সাথে কথা বললে তিনি জানান, কাজের মান ভালো হচ্ছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমি এখনও সভাপতি নিয়োগ সংক্রান্ত কোন চিঠি পাইনি। তবে চেষ্টা চলছে আমি এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নিযুক্ত হব।

এসময় কলেজের শিক্ষকরা জানান, অধ্যক্ষের অনিয়মের কারণে এই প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যত অন্ধকার হতে বসেছে। ভবন নির্মানের সময় নিন্মমানের খোয়া ও মরিচাপড়া রড ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদের কোন কথা শোনেননি অধ্যক্ষ।

এব্যাপারে অধ্যক্ষ ফয়সাল খান জানান, সভাপতির কাগজ ডিসি অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। আশা করি দ্রæত উনি সভাপতির দায়িত্ব পাবেন। এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ ফয়সাল খান জানান, কাজের মান খারাপ হওয়ার কারণে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।

নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গ্রীন এন্টার প্রাইজের মালিক মো: হাফিজুর রহমান খসরু জানান, কাজটি আমি মেসার্স আ: সামাদের নিকট থেকে ক্রয় করে কাজ করছিলাম, কিন্তু যেখান থেকে আমি খোয়া ক্রয় করেছি সেখান থেকে ভুল করে কিছু নিন্মমানের খোয়া দিয়ে দিয়েছে। আমি এই খোয়া পাল্টে ভালো খোয়া দিয়ে কাজ করব।

এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়দেব চক্রবর্তী জানান, সুনির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ পেলে অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এব্যাপারে শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তর যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: ইলিয়াজ হোসেন জানান, নিন্মমানের সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগে কাজটি বন্ধ রয়েছে। আগামীকাল অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করে পুনরায় কাজ চালানো হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর