যশোর জেলার অভয়নগরে নবনির্বাচিত ইউপি সদস্য উত্তম সরকারকে (৩৫) শপথের আগেই গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার রাতে হরিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন নিজ বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত উত্তম সরকার গত ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে ১নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (ফুটবল প্রতিক) হিসেবে নির্বাচিত হন। তিনি হরিশপুর গ্রামের মৃত অশান্ত সরকারের পুত্র। এ ব্যাপারে সুন্দলী ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান বিকাশ রায় কপিল জানান, রাত আনুমানিক ৮ টার সময় নিজ বাড়ির সামনে উত্তম সরকারকে কে বা কারা গুলি করে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। শপথের আগে এভাবে একজন নবনির্বাচিত ইউপি সদস্যকে গুলি করে হত্যা করা দুঃখজনক বিষয়। দ্রæত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি। অভয়নগর থানার ওসি একেএম শামীম হাসান জানান, উত্তম সরকার নামে নবনির্বাচিত এক ইউপি সদস্য খুন হয়েছেন। তাঁর বুকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে। ঘটনাস্থালে প্রাথমিক তদন্ত শেষে প্রশাসন মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায় এবং ওই রাতেই অভয়নগর থানা পুলিশ সন্দেহমূলক ভাবে ওয়ার্ড মেম্বর অর্ধেন্দু মল্লিককে হেফাজতে নেন। মৃত উত্তম সরকারের বড় ছেলে হিরণময় সরকার সকলের কাছে তার বাবার খুনিদের ফাঁসির দাবি করেন। রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন অভয়নগর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র সুশান্ত কুমার দাশ শান্ত, প্রেমবাগ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মফিজ উদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনারা পার্ভিন, বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদের যশোর জেলা সভাপতি দিপংকর দাস রতন, সুন্দলী ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অধীর কুমার পাঁড়ে, নওয়াপাড়া সার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মুকিত জিলানী, সাবেক সুন্দলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বিকাশ মল্লিক ও পরিতোষ বিশ্বাস, সুন্দলী ইউনিয়ন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক পল্লব বিশ্বাস প্রমূখ। এসময় তাঁরা দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। ময়না তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিকেলে যশোর মর্গ থেকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরিবার-পরিজন ও এলাকাবাসী মিলে বিকেলেই স্থানীয় শুড়িরডাঙ্গা মহাশ্মশানে তার শেষ কৃত্য সম্পন্ন করেন। পারিবারীক সূত্রে জানা যায় তাঁর ২টি শিশু পুত্র, স্ত্রী, বিধবা মা ও ঠাকুরমা রয়েছে। সুন্দলী এলাকার সহকারী অধ্যাপক তিমির বরণ সরকার, প্রভাষক সমিরণ সরকার, শিক্ষক সপিন সরকার, বিধান মল্লিক ও গোবিন্দ মন্ডল, সমাজসেবক হরেকৃষ্ণ সরকার এই নিকৃষ্টতম হত্যাকান্ডে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। এখনওপর্যন্ত থানায় কোন মামলা দায়ের করা হয়নি তবে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
#চলনবিলের আলো / আপন