সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
কক্সবাজার সদর উপজেলা জাসাস এর পরিচিতি সভা, জাসাস বিএনপি গোলাপ ফুল বললেন প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরামের নির্বাহী মহাসচিব নির্বাচিত হলেন আনোয়ার হোসেন মানিকগঞ্জ ১ আসনে জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীর মোটরসাইকেল শোডাউন নাটোর ইমার্জিং কাপ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন নাটোর রেড টিম আটোয়ারীতে ‘মানিকপীর সোনালী কিন্ডার গার্টেন’-এর কৃতি শিক্ষার্থীদের মাঝে বৃত্তি ও সনদ বিতরণ আলীকদমে মাতামুুহুরী নদীতে পড়ে বৃদ্ধের মৃত্যু ভৈরব নদীতে নৌকা বাইচে উৎসবের জোয়ার, দর্শনার্থীর ঢল সাপাহারে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স জনবীমী’র পিঠা ও আনন্দ উৎসব 

বিয়ের ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার পেশা

রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
আপডেট সময়: মঙ্গলবার, ১১ জানুয়ারি, ২০২২, ৫:৫৮ অপরাহ্ণ

সম্পদশালী ব্যবসায়ী কিংবা সরকারী চাকুরীজীবী যুবকদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি ও ভিডিও চিত্র ধারণের পর ব্ল্যাকমেইল করে বিয়ে। এরপর নির্যাতনের অভিযোগে মামলা দায়েরের হুমকি দিয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই হচ্ছে বরিশালের এক যুবতীর পেশা।

ইতোমধ্যে সাথী আক্তার নামের ওই যুবতীর ফাঁদে পরে নিঃস্ব হয়েছেন একাধিক যুবক। জেলার উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নের চকমান গ্রামের বাসিন্দা সাথী আক্তার নামের ওই যুবতীর ফাঁদে পরে বিভিন্ন ধরনের হয়রানীসহ মোটা অংকের টাকা হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পরা একাধিক যুবকরা এ অভিযোগ করেছেন।

মঙ্গলবার সকালে ওই যুবতীর প্রতারণাসহ অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরে একাধিক ভুক্তভোগী যুবক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সাথীর সকল অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছেন তার নিকটাত্মীয় মো. কাওসার ও ফারুক হোসেন। তাদের সহযোগীতায় একের পর এক অপকর্ম করে যাচ্ছেন সাথী আক্তার।

ভুক্তভোগীরা জানান, নগরীতে ভাড়া বাসা নিয়ে একা বসবাসকারী উজিরপুর উপজেলার চকমান গ্রামের যুবতী সাথী ইতোমধ্যে প্রতারনার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি বিয়ে করেছেন। বিয়ের কিছুদিন পরেই সে (সাথী) মিথ্যে নির্যাতন, অত্যাচারের জন্য মামলা দায়েরের ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়াই তার ব্যবসা।

সাথীর প্রতারণা ফাঁদে পরে হয়রানির স্বীকার নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডের নবগ্রাম রোডের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার আব্দুর রব হাওলাদারের ছেলে আল-আমিন হাওলাদার বলেন, মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সূত্রধরে সাথীর সাথে আমার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।

পরবর্তীতে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে ডাক-চিৎকার দিয়ে লোকজন জড়ো করার ভয় দেখিয়ে অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ছবি তুলে ভিডিও চিত্র ধারণ করে। এরপর সাথী তার সহযোগী কাওসার ও ফারুকের মাধ্যমে আমাকে ব্ল্যাকমেইল করে ২০২১ সালের ৬ ফেব্রুয়ারী ৪ লাখ টাকার দেন মোহরের মাধ্যমে বিয়ে করে।

বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই দেন মোহরের চার লাখ টাকা দাবি করে বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য সাথী আমাকে চাঁপ প্রয়োগ করে।
আল-আমিন আরও বলেন, বিবাহ বিচ্ছেদের জন্য অব্যাহত চাঁপ প্রয়োগের মধ্যেই সাথী আমার বিরুদ্ধে কোতয়ালী মডেল থানায় একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেন।

পরবর্তীতে আমিও প্রতারক সাথীর অর্থ হাতানোর কৌশলের কথা উল্লেখ করে তার (সাথী) বিরুদ্ধে একই থানায় অভিযোগ দায়ের করি। উভয় অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসআই রুমা বেগম একাধিকবার উভয়পক্ষকে থানায় ডেকে সালিশ মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

তিনি বলেন, এসব ঘটনার পরিপ্রেেিত সাথীর হয়রানি থেকে রা পেতে ও সরকারী চাকরি বাঁচাতে দেন মোহরের টাকা পরিশোধ করার পরেও সাথী তালাক নামায় স্বার না করে উল্টো আরো টাকা দাবি করে। এজন্য সে ফের বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতর ও মানবধিকার কমিশনে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি শুরু করে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাথী মাত্র ২০ বছর বয়সে একইভাবে প্রতারণা মাধ্যমে ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট নোয়াখালী জেলার শ্রীপুর এলাকার সাহাব উদ্দিন আজাদের ছেলে শরিফ উদ্দিনের সাথে প্রথম বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

বিয়ের এক বছর যেতে না যেতেই পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৬ জুলাই সেই স্বামীর ঘর থেকে নগদ ৯০ হাজার টাকা ও তিন ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় শরিফ উদ্দিন তার আইনজীবীর মাধ্যমে একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ডাকযোগে একটি লিগ্যাল নোটিশও পাঠিয়েছিলেন।

পরে ওই বছরের ২০ অক্টোবর শরিফ উদ্দিন তাকে (সাথী) তালাক দেয়। পরবর্তীতে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করতে ২০১৯ সালে সাথী নিজে আত্মগোপনে থেকে অপহরনের নাটক সাজিয়ে নোয়াখালী জেলা ডিবি পুলিশের মাধ্যমে শরিফ উদ্দিনকে হয়রানি শুরু করেন।

তৎকালীন নোয়াখালী জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্যরা তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৯ জানুয়ারী অভিযোগকারী রুবেলের বাসায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক সাথীকে আটক করেন।

সূত্রমতে, নোয়াখালীর ওই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই সাথী বরিশালে চলে আসে। এরপরই প্রেমের ফাঁদে ফেলে ব্ল্যাকমেইল এবং প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সাথী ও তার সহযোগীরা একাধিক যুবককে নিঃস্ব করেন।

উল্লেখিত অভিযোগের ব্যাপারে অভিযুক্ত সাথী আক্তার ও তার সহযোগী মোঃ কাওসার এবং ফারুক হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে সংবাদকর্মীর পরিচয় পাওয়ার সাথে সাথেই তারা সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ায় কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে জেলা আইনজীবী সমিতির একাধিক প্রবীণ আইনজীবীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, যদি কোনো ব্যক্তি দ্বিতীয় বা পরবর্তী বিয়ে করার সময় প্রথম বা আগের বিয়ের তথ্য গোপন রাখেন, তা যদি দ্বিতীয় বিবাহিত ব্যক্তি জানতে পারেন, তাহলে ৪৯৫ ধারা অনুযায়ী অপরাধী ১০ বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।

এছাড়া ৪৯৬ ধারায় বলা হয়েছে, যদিকোনো ব্যক্তি আইনসম্মত বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা ব্যতীত প্রতারণামূলকভাবে বিয়ে সম্পন্ন করেন, তাহলে অপরাধী সাত বছর পর্যন্ত সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং অর্থদন্ডে দন্ডিত হবেন।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর