প্রবাসীর ফসলী জমিতে জোরপূর্বক বসতঘর উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে বাবুগঞ্জ উপজেলার জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের ঠাকুরমল্লিক গ্রামে।
ওই গ্রামের সৌদি প্রবাসী নজরুল ইসলাম সিকদারের স্ত্রী সাবিনা আক্তার অভিযোগ করে বলেন, ঠাকুরমল্লিক গ্রামের আজাহার মাঝি, শাহজাহান মাঝি গংরা চর ঠাকুরমল্লিক মৌজার বিএস খতিয়ান ১২০১ ও এসএ ১৬৯ দাগের ৬০ শতক ফসলী জমি একই গ্রামের আব্দুল মান্নান ফকিরের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। আব্দুল মান্নান ফকিরের মৃত্যুর পর গত বছরের ২৫ অক্টোবর ওই ৬০ শতক জমি মান্নান ফকিরের পুত্র মনজুর হোসেন ও তার ওয়ারিশদের কাছ থেকে একই গ্রামের মৃত হাসেম সিকদারের পুত্র প্রবাসী নজরুল ইসলাম সাবকবলা দলিলমূলে ক্রয় করেন। সেই থেকে ওই জমি ভোগদখল করে আসছেন।
গতবছরের ২৯ নভেম্বর বিক্রিত ওই জমিতে জোরপূর্বক ঘর উত্তোলন করতে যায় পূর্বের দলিলদাতা মৃত আজাহার মাঝির পুত্র এনামুল মাঝি। এতে প্রবাসী নজরুলের ভাই আলিম সিকদার বাঁধা প্রদান করলে তাকে (আলিম) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে এনামুল ও তার লোকেরা।
পরবর্তীতে ওই জমি নিয়ে বরিশাল বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করা হয়। আদালত মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাবুগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কে নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশনা পেয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন।
সাবিনা অভিযোগ করে আরও বলেন, ওই ৬০ শতক সম্পত্তি তার (সাবিনা) ভোগদখলে থাকলেও ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ করিম রহস্যজনক কারনে প্রতিপক্ষ এনামুল মাঝি ০.০৪৫ একর সম্পত্তি ভোগদখলে রয়েছে বলে প্রতিবেদন দাখিল করেন। কান্না জড়িত কন্ঠে প্রবাসীর স্ত্রী সাবিনা বলেন, ভূমি কর্মকর্তা মাসুদ করিমের অসত্য প্রতিবেদন দেয়ার পরপরই তার স্বামীর কষ্টে অর্জিত টাকায় ক্রয় করা সম্পত্তি দখলে নিতে মরিয়া হয়ে উঠে এনামুল। ইতিমধ্যে প্রভাবশালীদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ওই জমিতে ঘর উত্তোলনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।স্বামীর জমি রক্ষায় তিনি (সাবিনা) প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে এনামুল মাঝি বলেন, কারো জমি দখলের পাঁয়তারা নয় বরং নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষার চেষ্টা করছি।
ওই গ্রামের প্রবীন আলম মাল (৬৫) জানান, এনামুল মাঝির পিতা আজাহার মাঝি ও তার চাচা শাহজাহান মাঝি জমিটা বিক্রি করে দিয়েছেন। বর্তমানে ওই জমি নজরুল মাঝির পরিবার ভোগদখলে রয়েছেন। কিছুদিন পূর্বে এনামুল মাঝি জমিটা দখলে নিতে চাইলেও দখল করতে পারেনি।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুল আহসান খাঁন জানান, প্রবাসীর জমি দখলের পাঁয়তারার বিষয়টি স্থানীয়রা তাকে অবহিত করেছেন। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ করিম জানান, ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করে এবং বিরোধীয় সম্পত্তির কাগজপত্র দেখে সঠিক প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
#চলনবিলের আলো / আপন