সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

জননেতা ও নেতৃত্বের গুনাবলি ক্ষেত্রে দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন – মোঃ নাজমুল হুদা

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বুধবার, ২৪ জুন, ২০২০, ৮:২০ অপরাহ্ণ

রাষ্টবিজ্ঞানী এরিষ্টটল মতে, মানুষ সামাজিক ও রাজনৈতিক জীব।যে সমাজে বসবাস করে না সে হয় দেবতা না হয় পশু। এই মানব সমাজ উন্নয়নে সভ্য জাতি গঠনে সমাজের নেতৃত্বদানকারী ও সর্ব সাধারনের দৃষ্টিভংগির পরিবর্তন ও মুল্যবোধ সৃষ্টি অতীব প্রয়োজন। ১.আমরা জাতি হিসাবে অলস ও অকর্মন্য,জাতিকে এই অভিশাপ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে শিক্ষা। শিক্ষায় মানব সমাজের অবক্ষয় দুরীভূত করে এবং মুল্যবোধ জাগ্রত করে। শিক্ষার অভাবে আমরা উন্নত জাতি হিসাবে বিশ্বে মাথা উচু করে দাড়াতে পাচ্ছি না।, আমরা গুনিজনকে সম্মান দিতে জানি না নিজেই সর্বোচ্চ সম্মানিত আসনে বসার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখি,সব সময় মুখে জিতার অভ্যস্থ। এই প্রবনতা বা দৃষ্টিভংগি পরিবর্তন না হলে আমরা কখনো সমাজে বা রাষ্ট্রে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারি না। সমাজে কিছু শ্রেনীর লোক আছে,সব সময় নেতা,এক কৃতত্ব,বলয় ও নিজেকে জ্ঞানী মনে করে আমিত্ব ভাব দেখায়,অর্থ প্রতিপত্তির অহংকারে নিজের পথচলা ভুলে যায়। আবার আরেক শ্রেনীর মানুষ আছে সবজান্তা যেন সে পৃথিবীর সবকিছু অবগত। একবন্ধু আরেক বন্ধুকে বড়াই করে বলেছিল, জানো বন্ধু আমি না পৃথিবীর এমন কোন দেশ নেই, ভ্রমন করি নাই,তখন ২য় বন্ধু শুনে অবাক হয়ে বলল,বন্ধু বেশ তো, জিওগ্রাফি সম্পর্কে তোমার তো বেশ ধারণা আছে,১ম বন্ধু খুশি হয়ে বললেন,”আমি না সেখানেও ২দিন ছিলাম।”এবার চিন্তা করেন আমরা কোন গ্রহে বসবাস করছি। সবজান্তাদের এ অবস্থা, তারা অশিক্ষত লোকদের পটাতে পারেন কিন্তু জ্ঞানীরা টিকই তাকে অবজ্ঞা করেন। আমাদের এই শ্রেনী মানুষদের বুঝা উচিত পরিবর্তিত হয়ে নিজেকে সমাজের সাথে খাপখেয়ে পথচলায় তাদের উত্তম উপায়। আসলে বাস্তবে চিন্তা করলে দেখা যায় সমাজ অনিয়ন্ত্রিত হওয়ার জন্য মুলতঃ তারায় দায়ী। একথা কেউ স্বীকার করবে না। কথায় আছে”অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী”এ কথায় প্রমান করে যে, আমাদের ভিতরে লোকানো অযোগ্যতাকে লালন না করে আস্তে আস্তে পরিবর্তন হয়ে সঠিক পথ অবলম্বন করা। হতাশ হওয়ার কোন কারন নেই,মোঘল সম্রাটএর প্রতাপশালী সম্রাট আকবরের কোন প্রাতিষ্টানিক শিক্ষা ছিল না।তিনি সম্রাজ্য পরিচালনা করেছেন। ২। নেতৃত্বের গুনাবলি যার নেই সেই ও নেতা হওয়ার জন্য রশি টানাটানি করে।

 

কথায় আছে”বন্যরা বনে সুন্দর শিশুরা মাতৃক্রোড়ে” যে ডাক্তারের কোন পেশাগত প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা নেই সেইও ডাক্তারি করার চেষ্টা করে।যেমন,(একটা প্রাচীন শিক্ষানীয় গল্প থেকে নেওয়া) প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাসে রাজা বাদশাদের দরবারে বিজ্ঞ পন্ডিতদের নিয়ে মজলিশ বসতেন।একদা সেই রকম মজলিশে রাজা মহাশয় বিজ্ঞ পন্ডিতদের উদ্দেশ্যে একটি প্রশ্ন করলেন, ” এ দেশে ডাক্তারের সংখ্যা বেশী না রোগী ? ” উপস্থিত বিজ্ঞ পন্ডিতগন হতচকিত হয়ে ভাবতে লাগলেন এমন সময়ে একজন বিজ্ঞ পন্ডিত আগামী কালের জন্য সময় প্রার্থনা করায় রাজা মহাশয় সভা মুলতবি ঘোষনা করেন। পরের দিন মজলিশে একজন ব্যতিত সকলেই উপস্থিত হলেন।যথারীতি মজলিশ আরম্ভ হলেন ঠিক সেই মুহুর্তে অনুপস্থিত পন্ডিত উপস্থিত হলেন,গায়ে কম্বল জড়ানো চেহারায় বিষান্নতা। রাজা মহাশয় এমন অবস্থার বিষয় জানতে চাইলেন এবং বিজ্ঞ পন্ডিত সবিনয়ে জবাব দিলেন,মহাশয় “গায়ে জ্বর”। রাজা মহাশয় সাথে সাথে বলে উঠলেন,এটা একটা কথা হলোনি সামান্য জ্বর একটা” প্যারাসিটামল” খেলে তো জ্বর সেরে যায়। পাশাপাশি আরেক জন বলে উঠলেন,বাড্ডিন গাছের রস খেলে যে কোন রোগ চলে যায়।আরেক জন বলে উঠলেন মহাশয় গতকাল আমারও জ্বর হয়েছিল খাটি সরিষার তেল দিয়ে গরম গরম যখন ভাত খাইছি জ্বর খতম,এই ভাবে প্রত্যেক পন্ডিতগন একেক ধরনের ব্যবস্থাপত্র দিতে থাকেন এমনি সময়ে রোগী পন্ডিত কম্বল ছোড়ে ফেলে দিয়ে বলে উঠলেন, রাজা মহাশয় এবার আপনি বিচার করুণ আপনি সহ “এ দেশে ডাক্তার বেশী না রোগী,”। আসলেই এদেশে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারের চেয়ে অদক্ষ ও অযোগ্য ডাক্তার যেমন বেশী তেমনি শ্রোতার চেয়ে নেতাও বেশী।

 

পন্ডিতের চেয়ে মূর্খ পন্ডিতের সংখ্যা ও বেশী। এ প্রবনতা বা দৃষ্টিভংগি পরিবর্তন না হলে কখনো আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্রের পরিবর্তন কল্পনা করা যায় না। ৩। এবার আসল কথায় বলি: বৈশ্বিক পরিস্থিতি কোভিট ১৯ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারনে দুস্থ ও গরীবদের জন্য গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,মানবতার মা, জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রণোদনার যথেষ্ট পরিমান নগদ অর্থ ও ত্রাণ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন, আলহামদুলিল্লাহ। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দীর্ঘ হায়াত দানের প্রার্থনা করছি। পরিশেষে “মানুষ মাত্রই ভুল”এই ভুলের মাশুল হবে আমরা প্রত্যকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি দিয়ে দেখব,আগামীতে আমরা প্রত্যকে সুন্দর দৃষ্টিভংগির পরিবর্তনের মাধ্যমে আগামী প্রজন্ম কে আমাদের আদর্শিক নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সমাজের উন্নয়ন ত্বরান্বিত করব এবং আমাদের এলাকা কে সু শৃংখলভাবে গঠন করে সমাজ দেশ ও জাতি উন্নয়নে এগিয়ে যাব, এই প্রত্যাশাই রাখি। পরিশেষে আমি একজন নগন্য ব্যক্তির ভুলত্রুটির জন্য ক্ষমা করবেন। আমি নিজেও এই বলয় থেকে বেরিয়ে এসে সংশোধন হওয়ার চেষ্টা করব এবং সকল পাঠক ও শুভানুধ্যায়ীদের সুস্বাস্থ্য ও উন্নতি কামনা করছি। ভাল থাকুন,শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা,স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। আপনি নিরাপদ থাকলে পরিবার,সমাজ ও দেশ নিরাপদ থাকবে। -জয় বাংলা,জয় বঙ্গবন্ধু।

#লেখক: মোঃ নাজমুল হুদা

 

সাংবাদিক ও সাবেক ছাত্রনেতা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর