রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু, ঝালকাঠি:
ঝালকাঠিতে সর্দি, কাশি ও বুকে ব্যথা নিয়ে আজ সোমবার ও মঙ্গলবার ২ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ ৩জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন, ঝালকাঠি পৌরসভার পশ্চিম চাদকাঠির সাবেক কমিশনার ও মুক্তিযুদ্ধা মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন(৭০), পূর্ব চাদকাঠির, মুক্তিযোদ্ধা মোয়াজ্জেম হোসেন পাটোয়ারী (৬৭) ও কাঠালিয়ার রেনু বেগম (৪০)। এদিকে জেলার ঝালকাঠি নলছিটি ও রাজাপুর উপজেলা হাসপাতালে কর্মরত বেশ কয়েকজন চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্য কর্মীর করোনা পজেটিভ হওয়ায় তাদের হোমকোয়ারেনটাইনে রাখায় জনবল স্বল্পতা প্রকট রুপ ধারন করেছে। জনবল স্বল্পতা ও কীট সংকটের কারনে পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগে খোজ নিয়ে জানাগেছে। এঅবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ করতে হলে জরুরী ভিত্তিতে জনবল ও পর্যাপ্ত কীট সরবারহ করা প্রয়োজন বলে স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানিয়েছে।
জানাগেছে, মোয়াজ্জেম হোসেন শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকার নিজ বাসায় মারা যান। তিনি মুক্তিযোদ্ধা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক কর্মচারী ও জেলা শ্রমিকদলের সাধারন সম্পাদক। এক সপ্তাহ ধরে তিনি জ্বর, কাশি ও বুকে ব্যথায় ভুগছিলেন। অনুরুপ সমস্যা নিয়ে মারা গেছেন পশ্চিম চাঁদকাঠির সাবেক কমিশনার মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জেল হোসেন। রেনু বেগম কাঠালিয়া উপজেলার জয়খালী গ্রামের গৃহবধূ ছিলেন। তাঁর ৮ দিন ধরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট ছিল। রবিবার পূর্ব চাদকাঠির কুয়েত প্রবাসি আসলামের স্ত্রী নয়ন আক্তার করোনারি উপসর্গ নিয়ে রাতে হঠাৎ মৃত্যু বরণ করেন। রেনু বেগম কাঠালিয়া জয়খালী গ্রামের মৌজে আলীর স্ত্রী।
স্বাস্থ্য বিভাগ তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করেছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন আবুয়াল হাসান।
এদিকে ঝালকাঠিতে স্বাস্থ্য বিভাগের জনবল সংকটের কারণে জেলা-উপজেলা করোন উপসর্গ নিয়ে বহুলোক নিজেদের পরীক্ষা করাতে গিয়ে হিমসীম খাচ্ছে। আবার ঝালকাঠি স্বাস্থ্য বিভাগের অধীন যারা স্যাম্পল দিতে সক্ষম হচ্ছে তাদের বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাব থেকে পরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত হয়ে আসতে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ দিন সময় লেগে যাচ্ছে। এরফলে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ মানুষ দারুন উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তায় দিন পার করতে বাধ্য হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শুরুতে জেলায় প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠালেও এখোন করোনা উপসর্গের রোগীদের নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা তুলনা মুলক কমে গেছে। প্রয়োজনীয় জনবল শুন্যতার মধ্যেও সম্প্রতি সদর উপজেলার দুজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় নমুনা সংগ্রহ কার্যক্রম খুবই বিগ্ন হচ্ছে। বর্তমানে জেলার সদর হাসপাতাল, নলছিটি, রাজাপুর ও কাঠালিয়ার আমুয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন করে স্বাস্থ্যকর্মী নমুনা সংগ্রহ করায় সারা দিনে ২০ থেকে ২৫ জনের নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। তাছাড়াও উপসর্গ নিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে থাকলেও বাড়িতে গিয়ে তাঁদের নমুনা সংগ্রহ করতে পারছে না স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ।
এ ব্যাপারে জেলা সিভিল সার্জন (ভারপ্রাপ্ত) আবুয়াল হাসান বলেন, সদর হাসপাতালে মাত্র একজন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নমুনা সংগ্রহ করছেন। তাই উপসর্গ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের নমুনা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে পর্যাপ্ত নমুনা সংগ্রহ করার লক্ষে দক্ষ জনবল ও কীট সরবারহ বাড়ানোর জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।