বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

আমনের বাম্পার ফলন চাষিদের মুখে হাসি

মাহমুদুল হাসান, চৌহালী প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: রবিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২১, ৩:১৪ অপরাহ্ণ

এখন চৌহালীর মাঠজুড়ে সোনালী পাকা ধানে দোল খাচ্ছে। যে দিকে চোখ যায় সোনালী বর্ণ ধারন করা কৃষকের নবান্ন উৎসবের স্বপ্ন ৷ সে স্বপ্নকে সামনে নিয়ে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার  কৃষকদের মুখে এখন তাই হাসি। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে মনে করছেন তাঁরা। মাঠে মাঠে চলছে ধান কাটার উৎসব। বাজারে চালের দাম চড়া থাকায় এবার লাভও বেশি হবে বলে আশা করছেন কৃষকেরা।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাঠের পর মাঠ জুড়ে সোনালী আমন ধানের ছরা। আমন ধান কেটে বাড়ির আঙিনায় আনার কাজ চলছে পুরোদমে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ধান মাড়াই শেষ হলে রোদে শুকিয়ে ধান গোলায় তুলবেন কৃষকেরা। এরপর কৃষকদের ঘরে ঘরে নবান্নের উৎসব শুরু হবে।
গ্রাম বাংলায় কৃষকেরা নবান্ন উৎসব পরিপূর্ণ ভাবে উদযাপনের জন্য মেয়ে জামাইসহ আত্মীয় স্বজনদের বাড়িতে আমন্ত্রণ করার পাশাপাশি ধুম-ধামে চলবে নতুন চালের পোলাও, গরম গরম ভাঁপা পিঠা, রসে ভরা দুধ চিতই, দুধ পুলি, নোঁকশি পিঠা, মুঠি পিঠা, খেজুর রসের খীর ও পায়েসসহ রকমারি লোভনীয় নিত্য নতুন খাবারের ধুম ও নবান্নের উৎসবে ৷
বাংলার মুসলমান কৃষক সমাজ অগ্রহায়নের প্রথম শুক্রবার, হিন্দু সম্প্রদায়ের কৃষকেরা পূঞ্জিকা অনুসারে ১লা অগ্রহায়ন থেকে নবান্ন উৎসব পালন করে থাকে ৷
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায় , এবার বন্যা ও  আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও সময়মতো বীজ ও সার পাওয়ায়  আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ জমির ধান পেকে গেছে।
বর্তমানে আমন ধানের জাত গুলোর মধ্যে, ঢেপা-১১০০ হেক্টর, হিজল দিঘা- ৭০০ হেক্টর, সরসরিয়া-৬২৫ হেক্টর,ভাওয়ালিয়া-৫৫০ হেক্টর, দিঘা-৪০০ হেক্টর, কার্তিকঝুল-১৭৫ হেক্টর ও  ধান চাষ হচ্ছে ৷ চলতি মৌসুমে উপজেলার মোট ৩ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে।  গত বছরের চেয়ে ৫১৩ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে ৷ গত বছর ৩ হাজার ৩৭ হেক্টর জমিতে ৫ হাজার ৮৩১ মেট্রিক টন ধান উৎপাদিত হয়েছিল। চলতি মৌসুমে ৬ হাজার ৮১৫.৯৫ মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করছেন কৃষিবিদরা ৷
পশ্চিম খাষকাউলিয়া গ্রামের কৃষক গোলাম মোস্তফা  (৭৫) বলেন, ‘আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার আমন ধানের ফলন ভালো হয়েছে। পোকার আক্রমণে কিছুটা ক্ষতি হলেও এত বেশি ফলন হবে সেটা কল্পনাও করতে পারিনি। পাকা ধান কাটা শুরু করতে খুব ভালো লাগছে।’
খাষধলাই গ্রামের কৃষক মহাআলম (৪৮) বলেন, এবছর আমি ৫ বিঘা জমিতে আমন ধান চাষ করেছি ফলন ভালো হয়েছে, আমন ধানে দুই/তিনবার নিড়ানি আর সামান্য কিছু সার দিলে চলে, কিন্ত আমন ধানে উপযুক্ত পানির প্রয়োজন হয় । পানি ছাড়া আমন ধান ভালো হয় না ৷
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জেরিন আহমেদ প্রতিবেদককে বলেন,এবারের আবহাওয়া আমন চাষের উপযোগী হওয়ায় এবং বন্যার পানি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পাওয়ায় ও তা সহনীয় মাত্রায় থাকায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এছাড়াও কৃষি অফিসের সার্বিক সহযোগীতা ফলন বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর