নীলফামারীর ডোমারে ২রা নভেম্বর আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনী। এই নির্বাচনকে ঘিরে গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে উৎসব মুখর পরিবেশে চলছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা। পাড়া মহল্লায় প্রার্থীদের নির্বাচনী স্লোগানে এক প্রকার উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। তবে এবার এই স্লোগানে কিছুটা ভিন্নতা লক্ষ্য করা গেছে। প্রার্থীদের পরিচয় প্রতীক সহ রাজনৈতিক দলের পরিচিতিও তুলে ধরছে গানের সুরে সুরে।
এবারের নির্বাচনী প্রচারে ভিন্নতা লক্ষ করা যাচ্ছে। একটা সময় ছিল মানুষ রিক্সা,ভ্যান,অটো,এবং টেম্পুতে মাইক বেঁধে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাতো। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশে মেমোরী কার্ডে নির্বাচনী গান ও শ্লোগান রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে চলছে প্রচারণা। বিভিন্ন ধরনের জনপ্রিয় গানের তালে তালে প্রার্থীদের প্রতিক ও উন্নয়নের কথা তুলে ধরছে। নির্বাচন কমিশনের দেয়া নির্ধারিত সময় অনুযায়ী দুপুর ২টা থেকে রাত ৮টা অবধি চলবে মাইকিং প্রচারণা।
প্রার্থীদের প্রতীক ও উন্নয়নের চিত্র তুলে ‘ওরে আইলো এবার আইলোরে পৌর নির্বাচন। দে দে সিল মেরে দে, তোরা দেরি করিস না……. প্রতীক ছাড়া তোরা সিল মারিস না।’,‘ আমি রাজা নামে এক গোলাম, শুধু হুজুর হুজুর করে গেলাম, এসব বিভিন্ন বাংলা সিনেমার বিভিন্ন গানের তালে তালে সুর মিলিয়ে পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে এমন নানা সুরে গান গেয়ে মাইকে মাইকে প্রচারণা চলছে সর্বত্র।
২রা নভেম্বর ডোমার পৌরসভার ৫ম নির্বাচনে মেয়র পদে তিন জন প্রার্থী একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এর মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতিক নৌকার মাঝি হলেন উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক গনেশ কুমার আগরওয়ালা।
অপরদিকে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নারিকেল গাছ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন পরপর ২ বারের নির্বাচিত মেয়র আলহাজ্ব মনছুরুল ইসলাম দানু এবং ডোমার পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে এই প্রথম সতন্ত্র নারী মেয়র প্রার্থী হিসেবে মোবাইল ফোন প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন আফরোজা নাজনীন রুমি, তিনি পৌরসভা প্রতিষ্ঠাকাল থেকে শুরু করে পরপর ২ বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন মরহুম আল-আজাহার হোসেনের ছোট বোন। নৌকা, নারিকেল গাছ এবং মোবাইল ফোনের রেকর্ডিং করা গানের সুর এখন পৌর এলাকার মানুষের মুখে মুখে। শুধু এখানেই শেষ নয় পৌর এলাকার ৯টি ওয়ার্ডে হাটে, বাজারে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে লিফলেট বিতরণ করে ভোট প্রার্থনা করছেন মেয়র, কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা। পাশাপাশি প্রতি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে চলছে খুলি বৈঠক, প্রার্থীরা যখন যে ওয়ার্ডে খুলি বৈঠক করছেন সেই এলাকার ছেলেরা ওই প্রার্থীর পক্ষে শ্লোগানে মুখরিত করে উৎসবের আমেজ তৈরি করেছেন। আবার সকাল ৯টা থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত পাড়া মহল্লায়, বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে চায়ের দোকানে চলছে নিজ নিজ প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা।তবে সবকিছু মিলিয়ে ডোমার পৌরসভায় জমজমাট উৎসব মুখর নির্বাচনী পরিবেশ ফিরিয়ে এসেছে।
বর্তমানে ভোটের প্রচার প্রচারণায় প্রার্থীদেরকে নিয়ে জনপ্রিয় বাংলা সিনেমার গানের সুরে নির্বাচনী গান তৈরি করা এখন কোন ব্যপারে নয়।এর আগে ঐতিহ্যবাহী গ্রামের পালা গানের শিল্পীরা এ ধরনের গান তৈরি করে থাকলেও এবার শহরের নামকরা শিল্পীদের নিয়ে তৈরী করা সুরের গান নিয়ে প্রচারনা চালাতে দেখা যাচ্ছে। পৌরসভা এলাকায় এখন ভোটের গানে সরব রয়েছে ভোটের প্রচারণার নতুন এই কৌশল অনেকের মনে দাগ কেটেছে। আগামী ২রা নভেম্বর এই প্রথম বারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
#চলনবিলের আলো / আপন