মামলা, হামলাসহ নিজের আধিপত্য বিস্তার ও অস্তিত্ব ধরে রাখতে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেও এখনও তিনি রয়ে গেছেন জিয়া নাগরিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক।
অস্তিত্ব ধরে রাখতে অনেকেই আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও ঘরের ছেলেরা সুযোগ বুঝে আবার ঘরে ফিরে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা করেছেন ফোরামের সভাপতি। তবে আসছে ইউপি নির্বাচনে সুযোগ সন্ধানী ওই ইউপি চেয়ারম্যান আারও নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিতে দলের শীর্ষ নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনাটি জেলার উজিরপুর উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের। অভিযুক্ত মো. ইউসুফ হাওলাদার কৌশলে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকা মার্কা বাগিয়ে নিয়ে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে নিজেকে আওয়ামী লীগ নেতা দাবি করলেও এখনও তিনি (ইউসুফ) রয়ে গেছেন জিয়া নাগরিক ফোরামের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে।
ফোরামের উপজেলা শাখার সভাপতি মো. সেলিম হাওলাদার জানান, ২০১২ সালে উজিরপুর উপজেলা শাখার ‘জিয়া নাগরিক ফোরাম’ গঠিত হয়। ওই কমিটিতে তখন ইউসুফ হাওলাদারের উপস্থিতিতে তাকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এরপর ২০১৬ সালে ইউসুফ হাওলাদার আওয়ামী লীগে যোগদান করে নৌকা মার্কা নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। কিন্তু তিনি এখনো জিয়া নাগরিক ফোরামের উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করেননি। বর্তমানেও ওই কমিটিও বহাল রয়েছে।
বামরাইল ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতারা বলেন, বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশ করেই ২০১৬ সালের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বামরাইল ইউনিয়ন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এক সময়ের উজিরপুর উপজেলা বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ইউসুফ হাওলাদার।
সূত্রমতে, ২০১০ সালে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের উজিরপুরের আটিপাড়া এলাকায় পিকেটিং করে ব্যাপক গাড়ি ভাংচুর করে। সেসময় ওই ঘটনায় উজিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় ইউসুফ হাওলাদার ও তার ভাই হিরন হাওলাদার আসামি হয়। এমনকি বর্তমানে বামরাইল ইউনিয়ন বিএনপির কমিটিতে তার (ইউসুফ) ভাই হিরন হাওলাদার আইন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার অপর ভাই ইউনুস হাওলাদারও বিএনপি সমর্থক। এছাড়া ২০১৩ সালে আইনশৃংখলা বাহিনী আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীদের যে তালিকা করেছেন তাতেও রয়েছে ইউসুফ হাওলাদারের নাম।
এ ব্যাপারে বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ হাওলাদার বলেন, ২০০৫ সালে তিনি আওয়ামী লীগে যোগদান করেছেন। জিয়া নাগরিক ফোরামের কমিটির বিষয়ে আমার জানা নেই। কিছু দুস্কৃতকারীরা আমার নাম অনুপ্রবেশকারীর তালিকায় দিয়েছে এবং মামলায় জড়িয়ে ছিলো।
বামরাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান কবির বলেন, আসছে ইউপি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আমরা কোন অনুপ্রবেশকারী চাইনা। এক্ষেত্রে দলীয় হাইকমান্ডের কাছে প্রত্যাশা থাকবে দীর্ঘদিন থেকে যারা দল করে আসছেন তাদের মধ্য থেকেই যেন প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। উজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এসএম জামাল হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে যারা দলের সাথে যুক্ত রয়েছেন তাদেরকেই মনোনয়ন দেয়া উচিত। আমরা দলীয় হাইকমান্ডের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করছি।