নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের আধার সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা চলনবিলের বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বিল এর একাংশ। এ যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপরূপ লীলাভূমি। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ সৌন্দর্য দেখতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায়ই ছুটে আসেন উল্লাপাড়ায়।
বর্ষা মৌসুমের প্রায় প্রতিদিন দেশি-বিদেশি পর্যটক কাশেম বিল, করতোয় নদীর বুকে সোনতলা ব্রীজ, ঘাটিনা ব্রীজ মুগ্ধতা অনুভব করে। অনেকেই মনে করেন, এখানে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হলে তা অনেক চমৎকার দর্শনীয় হবে। আর শুকনো মৌসুমে মাঠজুড়ে ফুটে থাকে সরিষা ফুল আর বোরো ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ, এ যেন এক টুকরো বাংলাদেশ । মাঝ খানে গাড়ো সবুজের বুকে হলুদের ছিটা। এই সৌন্দর্য খুব কাছ থেকে দেখার মানসে, কাজের ফাঁকে ক্লান্তি দূর করতে উল্লাপাড়ায় নিত্যদিনই ছুটে আসে হাজার হাজার মানুষ। সরিষা ফুলের সমারোহে নয়নাভিরাম উল্লাপাড়া সৌন্দর্য বহুকাল ধরেই মানুষকে মোহিত করেছে। বর্ষাকালে চতুর্দিকে শুধু পানি আর পানির বিপরীতে শুষ্ক মৌসুমে চারিপাশ জুড়ে থাকে শুধুই সরিষার খেত। বিল নয়, এ যেন একটা ছোট্ট ভূ-স্বর্গ। প্রকৃতির এই অপার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হতে প্রতিদিনই এখানে এসে জড়ো হয় হাজারো মানুষ। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা ঘিরে বিপুল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও সরকারি- বেসরকারিভাবে বিনিয়োগ, প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে সেখানে পর্যটন শিল্প গড়ে উঠছে না। পর্যটকদের জন্য খাদ্য, নিরাপত্তা, যাতায়াত, আবাসন সুবিধাসহ কয়েকটি দর্শনীয় স্পটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন অন্যতম পর্যটন এলাকায় পরিণত করতে পারে বলে মনে করছেন উল্লাপাড়াবাসী। এছাড়াও আরো উল্লাপাড়া আরএস রেল ষ্টেশনে দেখার মতো বা বগুড়া-নগরবাড়ী মহাসড়কে ওভারপাস ব্রীজ নির্মাণ হচ্ছে। ব্রীজটির কাজ প্রায় শেষের দিকে।
সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া) আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম এর একান্ত প্রচেষ্টায় সোনতলা এলাকায় একটি দৃষ্টিনন্দন পর্যটন গড়ে তোলা হচ্ছে।
সোনতলা-সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলায় সরকারি খাস জমিতে গড়ে তোলা হবে পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর উদ্যোগে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ অচিরেই শুরু করবে স্থানীয় প্রশাসন। করোতোয়া নদী ঘেঁষে দৃষ্টিনন্দন সোনতলা বীজ সংলগ্ন স্থানে হবে এই পর্যটন কেন্দ্র। বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী জাবেদ আহমেদ এ তথ্য জানান। বাংলা ট্রিবিউনকে জাবেদ আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উদ্যোগে গড়ে তোলা হবে একটি নয়ানাভিরাম পর্যটন কেন্দ্র। ইতোমধ্যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে। আশা করছি স্থানীয় প্রশাসন অচিরেই কাজটি শুরু করবে। গত ২০২১ (জানুয়ারি মাসে) সরেজমিনে স্থানটি পরিদর্শন করেছেন। পর্যটন কেন্দ্রটি নির্মাণ করা হলে অনেকেরই কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশ যি এ বিশাল বাজারে টিকে থাকতে পারে, তাহলে পর্যটনের হাত ধরেই বদলে যেতে পারে দেশের অর্থনীতির ভবিষ্যত রেখা। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যে কোনো দেশের অর্থনীতিতে আশীর্বাদ হয়ে কাজ করছে সর্বজন সমাদৃত এই খাত। উল্লাপাড়ার পর্যটন শিল্পেরও আছে অপার সম্ভাবনা। সম্ভাবনাময় এই খাতকে টিকেয়ে রাখতে অবকাঠামোগত উন্নয়ন, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিশ্চিতকরণ, রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আরো নজরদারি বাড়ানো গেলে উল্লাপাড়া হতে পারে অন্যতম একটি পর্যটন নগরী।