সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শখের- লেখা লেখি, সাংবাদিকতা ও জীবনের কিছু প্রাসঙ্গিক কথা;পর্ব-৫

কে,এম আল আমিন:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:০২ অপরাহ্ণ

মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ পাঠাগার ও সমাজ কল্যাণ সমিতি সলঙ্গার উদ্যোগে যে কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , বিতর্ক প্রতিযোগিতা,রচনা লেখা প্রতিযোগিতা, বই পড়া প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভা হলে অংশ গ্রহণের জন্য ডাক পড়ত। আমি ডাকে সারা দিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করতাম।অংশ গ্রহণ করতে আমার বেশ ভালো লাগত। অনুষ্ঠানে এমপি মহোদয়, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার অতিথি হিসাবে ও এ অঞ্চলের গুণিজনেরাও উপস্থিত থাকতেন। তাই এই অনুষ্ঠান গুলো আমার নিজেকে তুলে ধরার অন্যতম মাধ্যম ছিল।

আমাদের জাতীয় জীবনে ৫২’র ভাষা আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। সলঙ্গার সূর্য সন্তান জাতীয় নেতা মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশের ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলা ভাষার দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রদের উপর পুলিশের গুলি বর্ষণ করে হতাহতের ঘটনায় মাওলানা তর্কবাগীশ সর্ব প্রথম পাকিস্তানের আইন পরিষদে তুমুল প্রতিবাদের ঝড় তোলেন। আইন পরিষদে রাষ্ট্রীয় ভাষা বাংলার দাবীতে প্রথম বাংলা ভাষায় বক্তব্য দেন। হয়তো তাঁকে বাদ দিয়ে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। মাওলানা তর্কবাগীশ পাঠাগারের উদ্যোগে ভাষা আন্দোলনের উপর রচনা লেখা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। আমি উক্ত রচনা লেখা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে রচনা লিখে জমা দেই।

সমাজ কল্যাণ সমিতি ও তর্কবাগীশ পাঠাগারের দর্শক গ্যালারী কানায় কানায় পরিপূর্ণ। মঞ্চে বিচারক হিসেরে ছিলেন সলঙ্গা ডিগ্রি কলেজের অধ্যাপক মোঃ মনিরুজ্জামান মাহফুজ স্যার সহ আরও দু’জন শিক্ষক। যাদের নাম আমার স্মৃতিতে নেই। একের পর এক প্রতিযোগিরা মঞ্চে এসে তাদের লিখিত রচনা উপস্থাপন করে যাচ্ছিল। আমিও আমার রচনা উপস্থাপন করলাম। কিন্তু আমার রচনা উপস্থাপনের সময় দর্শকদের মুহুর্মুহু করতালি আমাকে দারুণ ভাবে উজ্জীবিত করেছিল। স্মৃতিতে দর্শকদের ভালোবাসা অম্লান হয়ে আছে।

বাদ মাগরিব আলোচনা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক, সিরাজগঞ্জ। জেলা প্রশাসকের নাম স্মরণে আসছে না। মনের মধ্যে নানা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছিল। আমার রচনা লেখা ও উপস্থাপন কেমন হয়েছে? বিজয়ী হয়ে পুরুস্কার পাব কিনা? বেলা কাটতে চাইছিল না।এভাবে কেটে যায় সারা বিকেল। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। কাঙ্ক্ষিত সময়ে শুরু হলো আলোচনা ও পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।উপস্থাপকের কণ্ঠে ভেসে এলো রচনা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে মোঃ শাহ আলম। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের তুমুল করতালি। সম্ভবত আনন্দে আত্মহারা হয়ে আমার কয়েক সেকেন্ড জ্ঞান ছিল না। চোখে ছিল অশ্রু। তারপর ধীর গতিতে মঞ্চে এসে ডিসি স্যারের হাত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করি। এ সময় বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকেরা পুরস্কার গ্রহণের দৃশ্য ধারণ করে নেন।

দৈনিক করতোয়া, দৈনিক সাতমাথা সহ বিভিন্ন পত্রিকায় অনুষ্ঠানের খবর প্রকাাশিত হলেও আমার সবচেয়ে ভালো লাগে দৈনিক চাঁদনী বাজার পত্রিকার তৎকালীন সলঙ্গা প্রতিনিধি, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট মরহুম সোলায়মান হোসেন ( আমার সাংবাদিকতা জীবনের অন্যতম শিক্ষা গুরু) সাহেবের অনুষ্ঠান সম্পর্কিত ফিচার নিউজ। তিনি অতি দরদ দিয়ে প্রাঞ্জল ভাষায় লিখেছিলেন। লেখার মাঝ খানে ছিল আমার পুরস্কারের গ্রহণের ছবি। তাঁর অপূর্ব শব্দ শৈলীর লেখা পত্রিকার কাটিং বাঁধাই করে রেখেছিলাম অনেক দিন।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর