বাংলা সাহিত্যে ” অনল প্রবাহ “এর স্রষ্টা, গাজীয়ে বলকান সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজীর দৌহিত্র ও পীর এ কামেল সৈয়দ আসাদউদ্দৌলার সিরাজীর পুত্র সৈয়দ শামীম সিরাজীর সঙ্গে ঘটনা ক্রমে পরিচিত হই।তিনি ছিলেন জাতীয় দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ও বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক চাঁদনী বাজার পত্রিকার সিরাজগঞ্জ জেলা ব্যুরো প্রধান।।তিনি আমাকে তার আদর,স্নেহ ও ভালোবাসার মায়ায় আজও জড়িয়ে রেখেছেন। আমার জীবন গঠনে তার আদেশ,উপদেশ ও লেখালেখির অনুপ্রেরণা আমাকে বিষম অনুপ্রাণিত করেছিল।
আমাদের জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ৫২’র ফেব্রুয়ারি মাসেই বাংলা ভাষার জন্য শহিদ হয়েছিল বেশ কয়েক জন ভাই।শহিদ ভাইদের উদ্দেশ্য করে কাঁচা হাতে ভয়ে ভয়েএকটি কবিতা লিখে শামীম সিরাজী কাকার কাছে পাঠাই।কবিতার চরণ গুলো এখনো মনে পড়ে-
আজ আমাদের শহিদ দিবস
রইব নাতো ঘরে,
সবার সাথে থাকব মোরা
শহিদ মিনারে।
বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা কল্পে
যারা দিয়ে গেছে আত্মদান
তাদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলিতে
করব মোরা মাল্যদান।
শিক্ষা নিব,দীক্ষা নিব
এইতো মহৎ আশা
মহান শ্রষ্টা তাই আমাদের
রইল ভরসা।
শামীম সিরাজী কাকা কয়েক দিন পর দৈনিক কলম সৈনিক নামক একটি পত্রিকা আমার ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন।পত্রিকা খুলে পড়তে পড়তে দেখি আমার ছোট কবিতাটি প্রকাশিত হয়েছে। অন্তরে আনন্দের জোয়ার প্রবাহিত হয়ে যায় ।তার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ আমার আরও বেড়ে যায়।
শামীম সিরাজী কাকা আমাকে দিয়েছে লেখার অনুুপ্রেরণা। আর সেই সূত্র ধরেই সম্ভবত তিনি সলঙ্গা অঞ্চলের পাশে ছিলেন পত্রিকায় বিভিন্ন রিপোর্ট প্রকাশ করে।৯০’র দশকে তিনি অনেক বার স্বাধীনতা সংগ্রামের রক্তস্নাত সলঙ্গা বিদ্রোহ ও মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্বাগীশের ইতিহাস নিয়ে প্রবন্ধ- ফিচার পত্রিকায় কলমের খোঁচায় তুলে ধরেছেন।সলঙ্গা বিদ্রোহের ঘুমন্ত ইতিহাস প্রসারে তার অনেক অবদান রয়েছে।
দৈনিক করতোয়ার সবুজ আসরের পাতায় আমার লেখা দুয়েকটি করে ছড়া,কবিতা ও কৌতুক প্রকাশিত হতে থাকে।এ সময় সলঙ্গা অঞ্চলের গুরুত্ব বিবেচনা করে ও শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে সলঙ্গা ডিগ্রি কলেজ,সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও সলঙ্গা সিনিয়ার ফাজিল মাদ্রাসায় পরীক্ষার কেন্দ্র স্থাপনের দাবী করে কয়েকটি পত্রিকার চিঠিপত্র বিভাগে লিখি।যা সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।তখন আমার মনে লেখার তৃষ্ণা বেড়ে যায়। চিন্তা এসে মস্তিষ্কে ঘুরপাক খায়।মনে হয় আমার লেখার মান ভালো। তাই পত্রিকায় প্রকাশ করে। মানুষ হয়তো আমার লেখাও পড়ে।আমি ও আমার প্রিয় জন্মভূমি সলঙ্গা এক সঙ্গে দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হচ্ছি।সেই মধুর স্মৃতি আমাকে আজও তাড়িয়ে বেড়ায়।
(দ্বিতীয় পর্ব) লেখক,শিক্ষক শাহ আলম,সলঙ্গা।( চলবে),,,
#চলনবিলের আলো / আপন