আগামী বছরের আগস্ট মাস পর্যন্ত মিয়ানমারে জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন জান্তা বাহিনীর অধীন রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কাউন্সিল।
সোমবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ভয়েস অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে জরুরি অবস্থার মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানো হয়েছে। এই সময় রাষ্ট্রীয় প্রশাসনিক কাউন্সিলের নেতা জেনারেল মিন অং হ্লাইং প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন।
সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে গত ফেব্রুয়ারিতে ক্ষমতা দখলের পর মিয়ানমারের জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইং রোববার নিজেকে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন এবং তিনি জানিয়েছেন, ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত আগামী জরুরি অবস্থা বজায় থাকতে পারে।
এর আগে আগামী দুই বছরের মধ্যে অঘোষিত একটি তারিখে বহুদলীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দেন জেনারেল মিন অং হ্লাইং। সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী অং সান সু চির ক্ষমতাসীন দলকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখলের ছয় মাস পর টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে মিন অং হ্লাইং এ কথা বলেন।
পাশাপাশি ১০ সদস্য রাষ্ট্রের অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথ ইস্ট এশিয়ান নেশনস (আসিয়ান) মনোনীত যেকোনো বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে তার সরকার কাজ করতে প্রস্তুত বলেও গতকাল জানান মিয়ানমারের এই শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা।
মিন অং হ্লাইং বলেন, ‘মিয়ানমার আসিয়ানের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে সংলাপসহ আসিয়ান কাঠামোর মধ্যে থেকে জোটের সহযোগিতার বিষয়ে কাজ করতে প্রস্তুত।
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার ক্ষেত্র তৈরিতে একজন বিশেষ প্রতিনিধি চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে আসিয়ান। এ লক্ষ্যে আজ সোমবার বৈঠকে বসছেন জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।
মিয়ানমারে সর্বশেষ নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল সুচির দল। কিন্তু, নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ জানিয়ে আসছিল সেনাবাহিনী। যদিও দেশটির নির্বাচন কমিশন সেনাবাহিনীর এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়। পরে গত ১ ফেব্রুয়ারি সুচির দলকে সরিয়ে ক্ষমতার দখল নেয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর জোর করে ক্ষমতা দখলের প্রতিবাদে এরপর থেকেই বিক্ষুব্ধ আন্দোলন চলছে দেশটিতে।
এতে অচল হয়ে পড়েছে দেশটির সরকারি ও বেসরকারি খাতগুলো। গত শনিবারও রাজপথে বিক্ষোভ করেছেন দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকালও বিক্ষোভ হয়েছে। এ অবস্থায়ও জেনারেল হদ্মাইং দাবি করেছন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে। দেশে ‘কিছু সন্ত্রাসী হামলা’ ছাড়া আর কোনো সমস্যা নেই।
তবে সেনা অভ্যুত্থানের পর গত ছয় মাসে মিয়ানমারে জান্তাবিরোধীদের বিরুদ্ধে চালানো অভিযানে অন্তত ৯৩৯ নিহত ও ছয় হাজার ৯৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী শুরু থেকেই এএপিপির দেওয়া নিহতের সংখ্যা নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছে।