বৃহস্পতিবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ১২:৪৭ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

রশি টেনে নদী পারাপার

কে,এম আল আমিন:
আপডেট সময়: বুধবার, ২৩ জুন, ২০২১, ৩:৩৩ অপরাহ্ণ

নৌকা আছে মাঝি নেই, এমনকি বইঠাও নেই। নদীর এপার থেকে ওপারে টানানো রশি টেনেই পারাপার হতে হয় যাতায়াতকারীদের। সারা বছর যাতায়াতে নৌকাই যাদের ভরসা। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার কেসি ফরিদপুর-জিআর কলেজ ফুলজোড় নদীর খেয়াঘাটে এভাবে সারা বছর হাজার হাজার মানুষের পারাপার হতে হচ্ছে। এই নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মানের অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে নদীর দুই পাড়ে অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সহ হাজার হাজার মানুষকে। এলাকাবাসী বলছেন, প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে এই নদী পারাপার হতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসলেও স্বাধীনতার ৫০ বছরেও এখানে একটি ব্রীজ বা সেতু নির্মান হয়নি।

সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কেসি ফরিদপুর, পুর্ব ফরিদপুর, চর ফরিদপুর, এরান্দহ, তিননান্দিনা, কাঁঠালবাড়িয়া,বোয়ালিয়ার চর,বিষ্ণপুর, আংগারু সহ ৩ টি ইউনিয়নের ১০-১২ টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের পথ কেসি ফরিদপুর-জিআর কলেজ খেয়াঘাট। এসব গ্রামের মানুষের সকল কাজে যাতায়াতের একটি মাত্র পথ এটি। কৃষকদের উৎপাদিত ফসল বাজার জাত করন, শিক্ষার্থীদের স্কুল- কলেজে যাতায়াত সহ সকল প্রকার যাতায়াতে এই নদী পারাপারে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। জরুরী কাজ বা মুমুর্ষ রুগী নিয়ে খেয়াঘাটে এসে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়। মাঝে মাঝে নৌকা ডুবির ঘটনাও ঘটে। দীর্ঘদিন এখানে একটি ব্রীজ বা সেতু নির্মানের দাবি জানালেও স্বপ্ন পুরন হচ্ছে না এ অঞ্চলের মানষের। নির্বাচনের আগে জনপ্রতিনিধিরা আশ্বাস বা প্রতিশ্রুতি দিলেও পরে ভুলে যায়।তাই এখনও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না ।এমন গুরুত্বপুর্ণ একটি স্থানে ব্রীজ না হওয়ায় সারা বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দু’ পাড়ের মানুষদের।কেসি ফরিদপুর খেয়াঘাটে কথা হয় পুর্বফরিদপুর গ্রামের বৃদ্ধ জহির উদ্দিনের সাথে। বলেন,আর কবে বিরিজ ওইবো,এহোন তো মরে যামু বাবা।

কয়েকজন পথচারী জানান, মাঝে মাঝে এখান দিয়ে যাতায়াত করি। রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে নৌকার জন্য অপেক্ষা করতে হয়। এতো বড় নদী বাতাসে প্রচন্ড ঢেউ ওঠে তখন খুব ভয় লাগে। ছোট বাচ্চাদের নিয়ে যেতে খূব ঝুকির মধ্যে পড়তে হয়। এখানে একটি বিরিজ খুবই দরকার ।
কেসি ফরিদপুর হাইস্কুল ও জিআর কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী  বলেন, সারাবছর ঝুঁকি নিয়ে আমরা নৌকায় পারাপার হই ,নৌকায় বেশী মানুষ ওঠার ফলে একাধিকবার নৌকা ডুবির ঘটনাও এখানে ঘটেছে । অনেক সময় নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে বই খাতা ভিজে নষ্টও হয়ে যায়। নদী পারাপার হওয়ার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করে অনেকে অসুস্থ্যও  হয়েছেন। খেয়াঘাটে দেরির কারনে আমরা সঠিক সময়ে ক্লাসে পৌছতেও পারি না। তাই আমাদের যোগাযোগ ব্যাবস্থার উন্নয়নের জন্য এখানে একটি সেতু স্থাপনের খুবই দরকার।

কেসি ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, দশ বারোটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একটি মাত্র পথ এ খেয়াঘাট। বেশ কয়েকটি স্কুল কলেজ সহ সকল কাজে যাতায়াতকারী হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন খেয়া নৌকায় পারাপার হয়ে হয়। বিশেষ করে স্কুল কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বেশী অসুবিধা হয়। তাই একটি সেতু নির্মাণ খুবই দরকার।দাদপুর জিআর কলেজের অধ্যক্ষ জামাল উদ্দিন জানান,ফুলজোড় নদীর এই স্থানে সেতু নির্মান এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবী। আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরী পদক্ষেপ নিবেন। ৭নং নলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল জাব্বার সরকারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, এখানে ব্রীজ/সেতু তৈরির জন্য ম্যাপ এবং মাটি পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অতি দ্রুত কাজ শুরু হবে বলে আশা করছি।

এ বিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একাধিক বার তার মুঠো ফোন (০১৭১২-০৯৫০৪৩) যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি কল রিসিভ করেন নি। তাই ভুক্তভোগী মানুষেরা জনগুরুত্বপুর্ণ এই স্থানে সেতু নির্মানের জন্য রায়গঞ্জ,তাড়াশ- সলঙ্গার নয়নমনি, মাননীয় এমপি অধ্যাপক ডা: আব্দুল আজিজ সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে  জোর দাবী জানান।

 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর