সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:৪৬ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা আওতা বাড়ছে সুবিধাভোগীর

নিজস্ব  প্রতিবেদকঃ
আপডেট সময়: শনিবার, ৫ জুন, ২০২১, ৩:২০ অপরাহ্ণ

নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে আরও প্রায় ১৪ লাখ গরিব মানুষ সরকারের সহায়তা পাবে।
কোভিড-১৯ সংকটের মধ্যে নতুন অর্থবছরের বাজেটে ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা খরচের যে পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাজিয়েছেন, তার মধ্যে ১ লাখ ৭ হাজার ৬১৪ কোটি বরাদ্দ রেখেছেন সামাজিক নিরাপত্তা খাতে।
এই অঙ্ক মোট বাজেটের প্রায় ১৮ শতাংশ। আর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৩ দশমিক ১১ শতাংশ।
নতুন বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এতে সব মিলিয়ে আরও প্রায় সাড়ে ১৪ লাখ লাখ গরিব মানুষ সরকারের সহায়তা পাবে। এত দিন এই ভাতা পাচ্ছিলেন ৮৮ লাখ গরিব, অসহায় মানুষ। নতুন করে সুবিধাভোগীর সংখ্যা যোগ হলে ভাতা পাওয়া গরিবের সংখ্যা এক কোটি ছাড়িয়ে যাবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১–২২ অর্থবছরের নতুন অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা, প্রতিবন্ধীসহ বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়েনি, তবে সুবিধাভোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ানো হয়েছে। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১২ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৮ হাজার টাকা করা হয়েছে। এই ঘোষণা অবশ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগেই দিয়েছিলেন।
বিদায়ী ২০১৯-২০ অর্থবছরের মূল বাজেটে এ খাতে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল।
করোনাভাইরাস মহামারিতে সবেচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। প্রায় আড়াই কোটি মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে বিভিন্ন গবেষণা জরিপে তথ্য দেয়া হয়েছে।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও স্বামী নিগৃহীত নারীরা মাসে ৫০০ টাকা ভাতা পান। গত তিন বছর ধরে এই একই পরিমাণ ভাতা পাচ্ছেন তারা। এই তিন বছরে গড়ে সাড়ে ৫ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়েছে, কিন্তু ভাতার পরিমাণ বাড়েনি। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও তাদের ভাতার পরিমাণ একই রেখেছেন অর্থমন্ত্রী।
নতুন অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতের আওতা বাড়াতে কিছু প্রস্তাব আর উদ্যোগের কথা অর্থমন্ত্রী বলেছেন তার বাজেট প্রস্তাবে।
বিদায়ী ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১১২টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী দরিদ্র প্রবীণ ব্যক্তিকে শতভাগ বয়স্ক ভাতার আওতায় আনা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ‘বয়স্ক ভাতা’ কার্যক্রমে উপকারভোগীর কাভারেজ প্রাপ্য শতভাগ বয়স্ক মানুষকে অতি উচ্চ ও উচ্চ দারিদ্র্যভুক্ত গ্রুপের আরও ১৫০টি উপজেলায় সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। আর এতে ৮ লাখ জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ৪৮১ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১১২টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী শতভাগ বিধবা, স্বামী নিগৃহীত মহিলাকে ভাতা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। নতুন বাজেটে এ কার্যক্রমে আরও ১৫০টি উপজেলায় এ উপকারভোগী শতভাগ করা হবে। এতে করে ৪ লাখ ২৫ হাজার জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ২৫৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে।
সর্বশেষ প্রতিবন্ধিতা শনাক্তকরণ জরিপ অনুযায়ী অস্বচ্ছল প্রতিবন্ধী ভাতাভোগীর সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার জন বৃদ্ধি পাবে। যার ফলে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এ বাবদ ২০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দের প্রয়োজন হবে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করার ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে ১২ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হচ্ছে। এতে বরাদ্দ বাড়বে ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় বলেন, বর্তমান সরকার দরিদ্র জনগণের উন্নয়নে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে প্রতিবছর বরাদ্দ বৃদ্ধি করে চলেছে। ২০০৮-২০০৯ অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা বলয় খাতে বরাদ্দ ছিল ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে তা প্রায় ৭ গুণ বৃদ্ধি। 

 

#চলনবিলের আলো / আপন


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর