‘নদী বাচঁলে, বাঁচবে দেশ’ কৃষি প্রধান এই বাংলাদেশের নদী আর্থসামাজিক ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যে অতুলনীয় ভুমিকা পালন করে তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বর্তমান সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ নদী রক্ষায় জাতীয় ভাবে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে কখনো নদীর অবৈধ্য দখল উচ্ছেদ বা সংস্কার করে নদীর প্রাণ সঞ্চার করে চলেছেন।কিন্তু পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দখল হয়ে যাচ্ছে চলনবিল এলাকার ঐতিহ্যবাহি গুমানি নদী। এক সময়ের নদী বন্দর নামে খ্যাত উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের পাশে হরিহরপুর এলাকায় গুমানি নদী দখলের এমন চিত্র দেখা গেছে। নদী দখল করে নির্মাণ করে চলেছেন প্রভাবশালী মহল বহুতল ভবন ও পাকা স্থাপনা। নদী দখল দাররা প্রভাবশালী ও বিত্তশালী হওয়ার কারণে স্থানীয়রা কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। আবার স্থানীয় ভুমি অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও তাদের এই কর্মকান্ড দেখেও কিছু না বলে রহস্যজনক কারণে রয়েছে চুপচাপ। তাদের এই নিরব ভুমিকার কারণে বেদখল হয়ে যাচ্ছে সরকারি সম্পত্তি। তবে নদী দখল করে নির্মিত ভবণের একাধিক মালিকরা জানান, নদীর ধারে নির্মিত ভবন সরকার চাইলে তারা ভেঙ্গে ফেলবেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার অষ্টমনিষার ইউনিয়নের হরিহরপুর গুমানি নদীর তীরে ‘দ্বীপ চাউল কল’ ও ‘বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেড’ নামের দুইটি প্রতিষ্ঠানের গুমানি নদী দখল করে একাধিক বড় বড় ভবন নির্মিত করেছেন। সেখানে বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেডের একাধিক বহুতল ভবন নদীর মধ্যে কলাম করে নির্মাণ কাজ চলমান আছে। অন্যদিকে গুমানি নদীর মাটি দিয়েই ওই স্থাপনার পাশ ভরাট করার চিত্র দেখা গেছে। অনুরুপভাবে দ্বীপ চাউল কল ও একই ভাবে নদী দখল করে আরসিসি কলাম করে ভবন নির্মাণ করেছে। ফলে চলনবিল অঞ্চালের ঐতিহ্যবাহি গুমানি নদী দখল হয়ে তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হুমকির মুখে রয়েছে। এভাবে গুমানি নদী দখল হতে থাকলে বর্ষা মৌসুমে চলনবিলাঞ্চলের হাজার হাজার হেক্টর ফসলি কৃষি জমির পানি দ্রুত নিষ্কাশনে বাধার সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটির একাধিক সদস্য।
দ্বীপ চাউল কলের সত্বাধিকারী স্বপন সরকার মুক্তি জানান, নদীর ৮/১০ ফুট জায়গা বালি ফেলে ভরাট করা হয়েছে বটে কিন্তু ওই ভরাটকৃত জায়গা নদীতে ভেঙ্গে যাওয়া তার নিজের জমিরই অংশ। তবে সরকার চাইলে তিনি তার নদী দখল করে নির্মিত ভবন ভেঙ্গে দিতেও রাজি আছেন বলেও জানান তিনি।
এব্যপারে বংশী মহারাজ এগ্রো লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী প্রার্থ প্রতীম সাহা জানান, এ বিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে আগ্রহী নন।
এব্যপারে অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি সহকারি কর্মকর্তা মুরারি মোহন জানান, তিনি অষ্টমনিষা ইউনিয়ন ভুমি অফিসে যোগদানের পূর্বেই তারা তাদের ভবন গুলি নির্মাণ করেছেন।
বড়াল রক্ষা আন্দোলন কমিটির সদস্য সচিব এসএম মিজানুর রহমান বলেন, নদী দখল করার এখতিয়ার কারো নেই। যারা দখল করবে তাদেরকে অবিলম্বে আইনের আওতায় আনার জন্য সংশ্লিষ্ঠদের প্রতি জের দাবী জানান তিনি।
উপজেলা নদী রক্ষা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
#আপন_ইসলাম