সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:২১ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

মাগফিরাতে মাহে রমজান – মাওলানা:শামীম আহমেদ

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২১, ১১:০৭ পূর্বাহ্ণ

আজ ১০ রমজান। দ্রুতই বিদায় নিচ্ছে মাহে রমজানের রহমতের  দিনগুলো। আর এজন্য মাহে রমজানকে বলা হয়েছে গুনাহ মাফের মাস। সিয়াম সাধণা বান্দাহর গুনাহ মাফ করে এবং তাকে নিষ্পাপে পরিণত করে।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কোরআন মজিদে এরশাদ করেন,, ‘আর তিনিই (আল্লাহ) তার বান্দাদের তওবা কবুল করেন এবং পাপগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (সূরা আশ শুরা :১৫)

কোরআনে করীমে আয়াত দ্বারা বুঝা যায়, বান্দা যখনি খালেছ নিয়্যতে কবিরা গুনাহ থেকে তওবার মাধ্যমে ক্ষমা চান, আল্লাহ বান্দার তওবা কবুল করে তাকে ক্ষমা করে দেন। একইভাবে যে কোনো ছগিরা গুনাহের জন্য মাফ চাইবেন আল্লাহ সেই পাপগুলোও ক্ষমা করে দেন।

মূলত আল্লাহ পাকের এই ঘোষণা সব সময়ের জন্য। আর মাহে রমজানের এই দশদিনে যদি কেউ রোজা রেখে এবাদ বন্দেগির মাধ্যমে একাগ্রচিত্তে নিজের ছগিরা ও কবিরা গুনাহের জন্য ক্ষমা চায়, তাহলে তো অবশ্যই আল্লাহ পাক তার সবগুনাহ মাফ করে দেন। সেই গুনাহ থেকে মুক্ত হয়ে নিষ্পাপ হয়ে যায়। তবে শর্ত থাকে যে, সে আর কখনও পূর্বাবস্থায় ফিরে যেতে পারবে না, তথা আগের মত গুনাহে লিপ্ত হতে পারবে না।

‘মাগফিরাত’ অর্থ ক্ষমা। রমজানের এই দশদিনে বেশি করে নিজের কিংবা সেই পিতা-মাতা ও অন্যের কৃতকর্মের জন্য বেশি করে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করুন, ক্ষমা প্রার্থণা করুন, অবশ্যই আল্লাহ পাক ক্ষমা করে দেবেন।

সাহাবি সৈয়্যদুনা হযরত আবু হুরায়রা (রাদি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াব লাভের আশায় কিয়ামে রমজান আদায় করবে তার পূর্ববর্তী গুনাহসমুহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারী- ২য় খন্ড)

মাহে রমজান আমাদের জন্য মাগফিরাতের সুবর্ণ সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগকে যদি আমরা কাজে লাগাতে পারি তাহলে আমরা সার্থক। আমাদের রোজা রাখা, ক্ষমা চাওয়া, দোয়া প্রার্থণা সবকিছুই সফল হবে।

প্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মাহে রমজানের প্রতি রাতেই একজন ফেরেশতা ঘোষণা করতে থাকেন, ‘হে পুণ্য অন্বেষণকারী! অগ্রসর হও। হে পাপাচারী! থামো, চোখ খোলো।’ তিনি আবার ঘোষণা করেন, ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করা হবে।

প্রিয়নবী (সা.)এর ফরমান অনুযায়ী মাগফিরাতের এই মাসে আমরা নিজেদের পাপকাজের জন্য বেশি করে আল্লাহ দরবারে ফরয়াদ জানাই। কৃতকর্মের জন্য বেশি করে অনুশোচনা করি।

নিশ্চয়ই আল্লাহ আমাদের দোয়া এই মাগফিরাতের মাসের উছিলায় কবুল করবেন। মূলত রমজান মাস বান্দার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ এক উপহার স্বরূপ। যা যথাযথভাবে আদায় করতে পারলে সমস্ত পাপ মোচন হয়ে যায়। নিষ্পাপ হিসেবে মুক্তি মিলবে বান্দার।

আমিরুল মুমেনিন সৈয়্যদুনা হযরত আলী শেরে খোদা (রা.) বলেন, যদি আল্লাহ তাআলা উম্মতে মোহাম্মদীকে শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্য থাকতো, তাহলে ‘রমজান ও সূরা এখলাস’ শরীফ কখনও দান করতেন না। (নুযহাতুল মাজালিস, ১ম খন্ড)।

আসলেই এই রমজান মাস এসেছে আমাদের সিয়াম সাধনার মাধ্যমে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে অতীত গুনাহ থেকে মুক্তি দিয়ে বান্দাকে ‘খাঁটি’ বান্দায় পরিণত করতে। রমজান মোবারক পেয়েও যারা কাজে লাগাতে পারলো না, নিজেদের ‍গুনাহ মাফ করাতে পারলো না তার চেয়ে দূর্ভাগা আর কে হতে পারে?

রমজানে মাগফিরাতের গুরুত্ব বর্ণনা করে প্রিয়নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়ে নিষ্পাপ হতে পারল না, তার মতো হতভাগা এই জগতে আর কেউ নেই।’

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘এ মাসে চারটি কাজ অবশ্যকরণীয়। দুটি কাজ এমন যে, তার দ্বারা তোমাদের প্রতিপালক সন্তুষ্ট হন। অবশিষ্ট দুটি এমন, যা ছাড়া তোমাদের কোনো গত্যন্তর নেই। এই চারটির একটি হলো কালেমায়ে শাহাদাত পাঠ করা, দ্বিতীয়টি অধিক পরিমাণে ইস্তেগফার বা ক্ষমা চাওয়া, এ দুটি কাজ আল্লাহর দরবারে অতি পছন্দনীয়…….।’ (ইবনে খুজাইমা)।

তাই আসুন! ইসলামী শরীয়ত মতে রোজা রেখে নামাজ দোয়া, দান-সদকা, এবাদত বন্দেগিতে চোখের পানি ঝরিয়ে আল্লাহর দরবারে একাগ্রচিত্তে ক্ষমা চাই। আল্লাহ পাক আমাদের ও আমাদের পরিবার, মা-বাবা আত্মীয় স্বজনসহ মুসলিম মিল্লাতের সবার গুনাহ মাফ করুন। আমিন।

 

#CBALO/আপন ইসলাম


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর