শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

ছবি তোলার কি আছে বসে কথা বলি ; নারী কেলেঙ্কারিতে ইউপি চেয়ারম্যান 

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শনিবার, ৬ জুন, ২০২০, ৯:১৭ পূর্বাহ্ণ

নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ
“ছবি তোলার কি আছে, বসে কথা বলি” নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলে কৌশলে পালিয়ে যান জেলার সদর উপজেলার পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ হবিবর রহমান।
একদিকে সংখ্যা লঘু, অপর দিকে সম্পর্কে ভাগ্নী জেনেও রিলিপ এর চাল, সামান্য কিছু টাকার লোভ আর মিথ্যা বিবাহের আশ্বাস দিয়ে নিজের অসৎ চরিত্রকে চারিতার্থ করে স্বীয় স্বার্থ হাচিল করে আসছেন তিনি৷
বৃহস্পতিবার পঞ্চপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান হবিবর রহমানের স্ত্রীর দাবি নিয়ে উত্তরাশশী ধনীপাড়াস্থ চেয়ারম্যানের বাড়ীতে অবস্থান নেয়  ওই ইউনিয়নের উত্তরা শশী সাইফুন তলা গ্রামের ভ্যান চালক হীরামন রায়ের স্ত্রী তমা রানী রায়৷ মুহুর্তে বিষয়টি জানাজানি হলে চেয়ারম্যানের নির্দেশে স্থানীয় দেওয়ানী দরবাররা ভুক্তভোগী  তমা রানীকে চেয়ারম্যানের বাড়ী থেকে বের করে দেয়৷
জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা খবর পেয়ে সরেজমিনে গেলে, সাংবাদিকদের দেখে মুখ খুলতে শুরু করেন স্থানীয়রা, জানালেন ভালো মানুষের আড়ালে থাকা  ইউপি চেয়ারম্যান হবিবার রহমানের নোংরা চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য৷
কিছামত পঞ্চপুকুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এসতামুল হক জানান, “উত্তরা শশী সাইফুন তলার হীরামন রায়ের স্ত্রী তমা রানীর সাথে দীর্ঘদিন ধরেই  অনৈতিক সম্পর্কে রয়েছে পঞ্চপুকুর ইউপি চেয়ারম্যান হবিবর রহমান এর এটি একালার কম-বেশি সকলেরই জানা৷  প্রায়শই সন্ধ্যা হলেই চেয়ারম্যান তার মোটর সাইকেলে করে তমাকে নিয়ে যায়, আবার অনেক রাত্রীবেলায় তমা’র স্বামীর বাসার সামনে তমাকে নামীয়ে দেয় চেয়ারম্যান হবিবর৷  কিন্তু আমার সম্পর্কে মামা হয়, তাই আমি কিছু বলতে পারি না”৷
কথা হয়, তমা’র স্বামী ভ্যান চালক হীরামন রায়ের সাথে, তিনি জানান, ” আমি সকালে বাড়ী থেকে বের হয়ে যাই, সারাদিন বাহিরেই থাকি, রাতে মাঝে মাঝে তমাকে বাড়ীতে না পেয়ে এখানে ওখানে খোজা খুজি করি৷ অনেকে তমা আর চেয়ারম্যানের সম্পর্কে অনেক কথাই বলে”৷ ‘আপনার স্ত্রী তমা এখন কোথায়?’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “শুনেছি চেয়ারম্যানের বাসায় গেছে” ‘কেন গেছে?’ জানতে চাইলে, অশ্রুজল চোখে সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে কিছু না বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তিনি”৷
এদিকে অনেক খোজার পর ভুক্তভোগী তমা রানীকে খুজে পায় গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা, কথা হয় তার সাথে, তিনি বলেন, “আমার বিয়ে হওয়ার ১৫ বছর হয়েছে। হবিবর চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে আমাকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়ে আমার সাথে অনৈতিক সম্পর্ক শুরু করে। এবং এর তিন বছর পর সে আমাকে বিয়ে করেন এবং বিয়ের সব কাগজপত্র তার কাছে রাখেন। এভাবে আমাদের সম্পর্ক চলছে কিন্তু কয়েকদিন থেকে তিনি আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করছেন আমি তার কাছে এমনটা করার কারণ জানতে চাইলে তিনি আমাকে কিছুই বলেন না। আজকে যখন শুনতে পাই তিনি আরেকটি মেয়ে নিয়ে সৈয়দপুরে বোর্ডিং যাচ্ছেন আমি সেখানে গিয়ে তাদের হাতে নাতে ধরি। এবং আমার ছোট মোবাইল দিয়ে ভিডিও করি কিন্তু চেয়ারম্যান আমার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ডাং মাইর করে৷ “
তিনি আরো বলেন, “চেয়ারম্যান আমাকে প্রান নাশের হুমকি দিয়ে বলেন তোর সাহস থাকলে আমার বাড়ী গিয়ে উঠিস। তারপর আমি সেখান থেকে চলে আসি এবং চেয়ারম্যানের বাড়ীতে বউয়ের দাবি নিয়ে যাই কিন্তু সেখানে গিয়ে চেয়ারম্যানের বউ , বউ এর ভাই (সালা ভাই) এসে আমাকে মাইর ধোরের হুমকি দিয়ে জোর করে বাসা থেকে বের করে দেয়। এখন গ্রামে আমার মুখ দেখানোর জায়গা নেই আমার আর আত্মহত্যা করা ছাড়া কোনো উপায়ো নেই”।
বিষয়টি নিয়ে পঞ্চপুকুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হবিবর রহমান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন, “আমি শহরে আছি, ব্যস্ত আছি বলেই বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন তিনি৷” পরবর্তীতে গোপন সংবাদ এর ভিত্তিতে চেয়ারম্যানের অবস্থান জানতে পেরে সেখানে উপস্থিত হয় গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা৷ সাংবাদিকদের দেখে, অনেকটা অপ্রস্তুত হয়ে সরিয়ে পরার চেস্টা করলে চেয়ারম্যানকে ক্যামেরাবন্দী করেন স্থানীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরা৷ এসময়ে তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন, “ছবি তোলার কি আছে, বসে কথা বলি” বলেই সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যান চেয়ারম্যান হবিবার রহমান৷”
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নিবার্হী অফিসার এলিনা আক্তার এর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর