শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

নাগরপুরে প্রভাবশালীদের অত্যাচারের শিকার বিশু মিয়ার পরিবার 

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: শুক্রবার, ৫ জুন, ২০২০, ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ

মোঃ আমজাদ হোসেন রতন, নাগরপুর(টাঙ্গাইল)প্রতিনিধিঃ
টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলিয়া গ্রামের কৃষক বিশু মিয়ার বসবাস। দারিদ্র হওয়ায় অতি কষ্টে জীবন চলে তার। ছেলে কামরুল প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় প্রায় ১৭ বছর পূর্বে সাটুরিয়ার হরগোজ গ্রামের মোঃ আজাহার আলীর মেয়ে মালার বেগমের সাথে পারিবারিক ভাবেই বিয়ে হয়। মালা বেগম মোঃ আহাদ মিয়া(অঃ প্রাপ্ত যুগ্ম সচিব) এর বাসায় গৃহকর্মী ছিল। একটু সুখের আশায়, অভাব মোচনের জন্য অতি কষ্টে ধার-দেনা ও তার  জীবিকা নির্বাহ করার একমাত্র অবলম্বন ঘোড়ার গাড়ি, ঘোড়া সহ বিক্রি করে ছেলে কামরুলকে ২০০৮ সনে বিদেশ পাঠান। ছেলের কষ্টার্জিত টাকা তার ছেলের স্ত্রীর নামে, ১১ লক্ষ টাকার উপরে পাঠায়(যাহার মানি রিসিট রয়েছে)। উক্ত টাকা তার ছেলের স্ত্রী কোথায়, কিভাবে খরচ তাহার হিসাব নেই।
বিশু মিয়া হৃদরোগ ও শ্বাসকষ্টের রোগী। তার চিকিৎসা বাবদ ছেলে যে টাকা পাঠায় সে টাকাও তাকে দেওয়া হয়নি। এসব বিষয়ে তার ছেলেকে অবগত করায় ছেলে বিদেশ থেকে ছুটিতে বাড়ি আসে।ছেলে টাকার হিসেব চায়। এ নিয়ে সংসারে কলহের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে বিশু মিয়া জানান, মালা যে মালিকের বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করত তার ছোট ভাই শামছুল প্রভাব খাটিয়ে গত ৩/৪ মাস পূর্বে আমার বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে হুমকি-ধামকি দিয়ে মালাকে আমার বাড়ি হতে নিয়ে, তাহার বাড়িতে উঠায় এবং আমাকে গ্রামছাড়া করে। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
তিনি আরও জানান, আমি এ ব্যাপারে গ্রামের মাতাব্বরদের নিকট সুষ্ঠু বিচার না পেয়ে টাঙ্গাইল আদালতে একটি মামলা দায়ের করি(যাহার মামলা নং ১৪৭/২০২০, তাং ০৪-০২-২০২০)। মামলা আদালতে চলমান রয়েছে।পরবর্তীতে বিভিন্ন সময়ে আমাকে হুমকি ও ভয় ভীতি প্রদর্শন করলে আমি আমার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হই। গত বোরো মৌসুমে আমার নিজস্ব ৭৬ শতাংশ জমি ও বন্ধকি ১০৫ শতাংশ জমি চাষ না করতে দেওয়ায় অনাবাদি রয়েছে। আমি কৃষিজমি চাষ না করতে পারায় ও বিভিন্ন কারণে এবারে প্রায় চার থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।এই করোনাকালে আমার খুবই করুন অবস্থা। মূলত আমাকে আর্থিক ক্ষতিগ্রস্ত ও সমাজে হেয় করার জন্য এরকম জঘণ্য ও অমানবিক কার্যক্রমে লিপ্ত রয়েছে। আমার ছেলের কষ্টার্জিত টাকা উদ্ধার, জমি চাষ না করতে পারায় ক্ষতি সাধিত হওয়া ও প্রভাবশালী শামছলের সঠিক বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে কামরুলের স্ত্রী মালা বেগম জানান, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা, আমি নিজেও একজন স্ব শিক্ষিত। হিসেব আমি রাখিনি। আমি প্রায় দীর্ঘ বছর যাবৎ স্বামীর সংসার করে আসছি। গত ৩/৪ মাস পূর্বে আমার স্বামী ছুটিতে বাড়িতে আসলে, কিছুদিন পর তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর হতেই সংসারে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মালা জানান, স্বামী একাধিক বিয়ে করতেই পারে। তবে আমি প্রথম স্ত্রী হিসেবে আমার অধিকার আমি চাই। আমি স্বামীর সংসার করতে চাই।
এ ব্যাপারে কামরুল ইসলাম মোবাইল ফোনে প্রতিবেদককে জানান ও একটি লিখিত পত্রে অভিযোগ করেন, আমি আমার স্ত্রীর নিকট আমার প্রেরিত কষ্টার্জিত টাকার সঠিক হিসাব চাইলে হিসাব দিতে ব্যর্থ হয় এবং আমার সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। আমার বিশ্বাস, আমার স্ত্রী ও শামছুল টাকাগুলো আত্নশ্বাদ করেছে। আমার কষ্টার্জিত টাকা গুলো ফেরত পাইলে তাকে নিয়ে সংসার করতে বাধা নেই।
এ ব্যাপারে শামসুল হক জানান, মালা বেগম আমাদের সন্তান বা আত্মীয় না হলেও আমাদের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতো। সে কারণে তাহার ভালো-মন্দ দেখার দায়িত্ব আমাদের রয়েছে, সেই অধিকারে তাকে আমার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছি।


আপনার মতামত লিখুন :

One response to “নাগরপুরে প্রভাবশালীদের অত্যাচারের শিকার বিশু মিয়ার পরিবার ”

  1. Dhaniram Mondal says:

    ঘটনাটা খুবই দুঃখজনক। কামরুল বিদেশে থাকা অবস্থায় অবশ্যই সময়ে সময়ে টাকার হিসাব মালার কাছ থেকে নিয়েছে এটা ধরে নেয়া যেতে পারে। কামরুল বিদেশে থাকা অবস্থায়ই হয়তো দ্বিতীয় বিয়ে করার পরিকল্পনা করে এবং নতুন বউয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ঘটনাটা মালা জানতে পেরে টাকাগুলো আত্মসাৎ করে বলে মনে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর