সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ফাজিলনগর গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী (আদিবাসী ) পরিবারগুলো এখন আর আগের দিনের মতো থাকছে না। নিজেদেরকে এরা বদলে ফেলছে। জীবন মানের উন্নয়ন হচ্ছে। বাড়ছে শিক্ষার হার। জীবন জীবিকায় করে কঠোর পরিশ্রম। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মাঠের কাজে মজুরী খাটছে।
উল্লাপাড়ার উধুনিয়া ইউনিয়নের ফাজিলনগর গ্রামে এখন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ২৬ টি পরিবার বসবাস করছে। এরা বংশ পরস্পরায় গ্রামটিতে বসবাস করে আসছে। সব ক’টি পরিবার মিলে সদস্য সংখ্যা প্রায় দেড়শো বলে জানানো হয়। এরা সবাই ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাহাতো গোত্রের ।
সরেজমিনে গ্রামটিতে গিয়ে আরো জানা যায়, এখানকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর গোটা তিনেক পরিবার বাদে বাকীদের নিজস্ব আবাদী জমির পরিমাণ খুবই কম। এরা কৃষি পেশায় মজুরী বিক্রি করে থাকে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও মাঠের কাজে দিন হাজিরায় মজুরী খাটে। পড়ালেখা করছে এমন কিশোর যুবকেরা মাঠের কাজে মজুরের বেশী চাহিদাকালে মজুরীর কাজ করে। এখানকার পরিবারগুলো নিজেদের বসতভিটেয় বসবাস করছে। তবে পরিবার সংখ্যা বাড়তে থাকায় বসতভিটের জায়গার পরিমাণ কমছে। এদের বেশীর ভাগ পরিবারের টিনের চাল ও বেড়ার বসতঘর। শিক্ষার হার এদের মাঝে বাড়ছে। গ্রামটিতে একটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এদের পরিবারের শিশুরা বিদ্যালয়টিতে পড়ালেখায় যায়। ফাজিলনগর গ্রামে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর একটি মন্দির রয়েছে। অর্থের অভাবে এর নির্মাণ কাজ শেষ হয়নি বলে জানানো হয়। মন্দির ঘরের উপরে কোন মতে টিনের ছাউনি দিয়ে রাখা হয়েছে। বিগত ২০০৪ সালে ফাজিলনগর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সমিতি গঠন করা হয়েছে।
গ্রামের সড়ক পথের ধারে নিত্য রঞ্জন মাহাতো নিজ কামারশালায় কাজ করেন। তিনি সময়ে কৃষি কাজও করেন। এছাড়া কিশোর ও মাঝ বয়সি দশ থেকে বারোজন বিভিন্ন পেশায় কাজ করছে জানা যায়।
ফাজিলনগর আদিবাসী উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি শুশীল মাহাতো জানান, শিক্ষার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সন্তানদেরকে পড়ালেখায় স্কুলে পাঠানো হচ্ছে । এখন বিভিন্ন কলেজে ছেলে ও মেয়ে মিলে জনা দশেক পড়ালেখা করছে। তাদের মন্দির ঘরের নির্মাণ কাজ পুরোপুরি শেষ করতে অর্থের সহযোগিতা দরকারের কথা জানান।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) দেওয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন, উল্লাপাড়ার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পরিবার গুলোর জীবনমান উন্নয়ন ও তাদের পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবাওে ১শ ২০ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষাবৃত্তির অর্থ এবং ১০ জন নারী শিক্ষার্থীর মাঝে বাই সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া একেবারে হতদরিদ্র গৃহহীন ক’টি পরিবারের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বরাদ্দ পাওয়া বসত ঘর নির্মান কাজ চলমান রয়েছে।
#CBALO/আপন ইসলাম