সাইফুল ইসলামঃ প্রকৃতপক্ষে ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণ আর তাঁকে গ্রেফতারের পূর্বমূহূর্ত পর্যন্ত দেওয়া নানামূখী ঘোষণাই ছিল মুক্তিকামী বাঙালির বীরত্বগাঁথার অমর আখ্যান। কারাগারে যাবার আগে যার যতটুকু প্রয়োজন সেই বার্তাই রেখে যান বাংলার মুকুটহীন সম্রাট শেখ মুজিবুর রহমান। ততক্ষণে ইপিআরের বাঙালি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে ছাত্র-জনতা, কৃষক মজুর আর কুলি-শ্রমিকেরা।
১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী যে নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা স্পষ্ট হয়েছিল ২৬ শে মার্চ। শুধু ঢাকাতেই নয় যশোর, চট্টগ্রাম সেনানিবাসসহ অন্যান্য স্থানেও ধ্বংশযজ্ঞ চালিয়েছিল বর্বর পাক হানাদার বাহিনী। এরপর যুদ্ধ ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছিল শহর থেকে প্রত্যন্ত এলাকায়।
১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ সশস্ত্র প্রতিরোধ যুদ্ধে নেমেছিলেন লক্ষ লক্ষ বাঙালি। এরই ধারাবাহিকতায় সুদীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম-আন্দোলনের পর অবশেষে ১৬ ডিসেম্বর অর্জিত হয়েছিল স্বাধীনতা¡। বাঙালি জাতি পেয়েছিল একটি স্বাধীন দেশ, একটি পতাকা এবং জাতীয় সঙ্গীত। রক্তাক্ষরে বিশ্ব ভূ-খন্ডের বুকে লেখা হয়েছিল একটি নাম ‘বাংলাদেশ’।
বাঙালি জাতি দীর্ঘ বছর ধরে পরম আনন্দে উৎসবী আমেজে নিজের মতো করে স্বাধীনতা দিবসটিকে উদযাপন করে আসছেন। শিল্প, সাহিত্য, কবিতা, গল্প, সঙ্গীত, চিত্রকলা, নাটক, চলচ্চিত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থেকে ফ্যাশনসহ নানা অনুুষঙ্গে স্বাধীনতা দিবসের লাল সবুজের রঙে গাথা বাংলার ছন্দময়, সুরেলা আবেশ যেন বুকজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে মহান স্বাধীনতা দিবসটি। স্বাধীনতা দিবসের আকণ্ঠ প্রভাব বাঙালি সংস্কৃতির সকল শাখাতেই রয়েছে এবং এ প্রভাবের সংস্পর্শেই ফ্যাশনধারাকেও করেছে উজ্জীবিত। এক্ষেত্রে নগর জীবনের দিকে দৃষ্টি রাখলেই এর প্রতিবিম্বটা চোখে পড়বে।
স্বাধীনতা দিবসের ছাপটা সব বয়সের বাঙালি নারী-পুরুষের মধ্যেই বিশেষভাবে লক্ষণীয়। শাড়ি, থ্রিপিস, পাঞ্জাবি, ফতুয়া, শার্ট, ট্রিশার্টসহ সব ধরনের পোশাকেই স্বাধীনতা দিবসের চিত্র ফুটে উঠে।ইতিহাসের এই অবিস্মরণীয় দিনটিকে মহিমান্বিত করে তোলার লক্ষ্যে ফ্যাশন ডিজাইনাররাও কবিতার পঙ্কতিমালা থেকে শুরু করে নানা বিষয় তুলির আঁচড়ে উৎকীর্ণ করে থাকেন।