মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৩০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

চলে গেলেন ক্যাসেট টেপের আবিষ্কারক

চলনবিলের আলো ডেস্ক:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১১ মার্চ, ২০২১, ৭:৪৮ অপরাহ্ণ

কোমরে চারকোণা ওয়াকম্যান আর কানে হেডফোন- এখনকার ছেলেমেয়েরা হয়তো এর গুরুত্ব সেভাবে বুঝবে না। তবে গত শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া মানুষদের কাছে এটি ছিল পরম আরাধ্য, অনেকটা স্বপ্নের মতো! সেইসব ওয়াকম্যান ও ক্যাসেট প্লেয়ারগুলোতে গান বাজত প্লাস্টিকে খাপে তৈরি টেপের সাহায্যে। এটি আবিষ্কার করেছিলেন ল্যু ওটেনস নামে এক ডাচ বিজ্ঞানী। গত সপ্তাহে পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চিরবিদায় নিয়েছেন তিনি।

নেদারল্যান্ডসের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত ৬ মার্চ দেশটির ব্র্যব্যান্ট প্রদেশের ডুজেল শহরের নিজবাড়িতে মারা যান ওটেনস। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।

জানা যায়, প্রকৌশলী ল্যু ওটেনস ১৯৫২ সালে ডাচ্ ইলেকট্রনিক পণ্য তৈরির প্রতিষ্ঠান ফিলিপসে যোগ দেন। আট বছরের মাথায় নিযুক্ত হন প্রতিষ্ঠানটির সদ্য চালু হওয়া পণ্য উন্নয়ন বিভাগের প্রধান হিসেবে।

এর মাত্র এক বছর পরেই ওটেনস ও তার দল বিশ্বের প্রথম পোর্টেবল (সহজে বহনযোগ্য) টেপ রেকর্ডার আবিষ্কার করেন। এটি সেসময় ১০ লাখেরও বেশি পিস বিক্রি হয়েছিল।

jagonews24

দুই বছর পর এরচেয়েও বড় বিপ্লব ঘটান ল্যু ওটেনস। পুরোনো রিল-টু-রিল টেপের জায়গায় আবিষ্কার করেন ক্যাসেট টেপ।

এ বিষয়ে তার বক্তব্য, ‘এটা সহজ- আমি ভারী, ব্যবহারপ্রতিকূল রিল-টু-রিল সিস্টেমে বিরক্ত হয়ে গেছিলাম।’

ওটেনস সিদ্ধান্ত নেন, নতুন বস্তুটি এত ছোট হতে হবে, যা তার জ্যাকেটের পকেটে রাখা যাবে। বিষয়টি বুঝতে সুবিধার জন্য কাঠের একটি মডেলও তৈরি করেন তিনি।

১৯৬৩ সালে একটি বৈদ্যুতিক উপকরণ মেলায় প্রথমবারের মতো সামনে আনা হয় প্লাস্টিক কাঠামোয় তৈরি ক্যাসেট টেপ। এর স্লোগান ছিল ‘সিগারেট প্যাকেটের চেয়েও ছোট!’

jagonews24

শিগগিরই টেপটির অনুকরণ বের করে ফেলে জাপানিরা। তবে জাপানি প্রতিষ্ঠান সনির সঙ্গে ফিলিপসের নকশা ব্যবহার করে মানসম্পন্ন ক্যাসেট তৈরির চুক্তি করেন ল্যু ওটেনস। বাজারে ছাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটি সাড়া ফেলে গোটা বিশ্বে। ক্যাসেটটি ১০০ বিলিয়নের বেশি পিস বিক্রি হয়েছিল সেসময়।

এরপর কম্প্যাক্ট ডিস্ক (সিডি) তৈরিতে হাত দেন ওটেনস। সনি-ফিলিপসের যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুত এই পণ্যটি বিক্রি হয় ২০০ বিলিয়ন পিসেরও বেশি।

১৯৮৬ সালে কর্মজীবন থেকে অবসর নেন ল্যু ওটেনস। তবে নিজের আবিষ্কারগুলো সম্পর্কে প্রায়ই প্রশ্ন করা হতো তাকে।

এক সাক্ষাৎকারে ডাচ আবিষ্কারককে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোটি কোটি মানুষের কাছে সুর-সংগীত সহজলভ্য করায় অবদান রাখায় গর্ববোধ করেন কি না?

তার জবাব ছিল সহজ- ‘না, আমার কোনও গর্ব নেই। কারণ, এর সবই ছিল দলীয় প্রচেষ্টা।’

সূত্র: ডাচ নিউজ


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর