একজন রিকশাচালক সারাদিন হাড়ভাঙা খাঁটুনি খেঁটে দুই/চারশত টাকা রোজগার করেন,সে টাকায় চলে তার পুরো সংসারের খরচ।
চারশত টাকা যদি প্রতিদিন গড়ে রোজগার করেন,তাহলে মাসিক সর্বমোট রোজগার হয় বারো-হাজার টাকা।যদি চার অথবা পাঁচজনের সংসার হয় তাহলে গড়ে জনপ্রতি পড়ে আশি টাকা করে।
এই টাকায় চাল,ডাল,কাঁচাবাজার,মসলা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য খরচ বহন করতে হয়।এছাড়া রয়েছে বস্ত্র,চিকিৎসা ও ছেলে-মেয়েদের শিক্ষা বিষয়ক খরচ।
যদি একদিন রিকশাচালকের শরীর অসুস্থ বা রিকশা নষ্ট হয়,তাহলে পুড়ো দিন রোজগার বন্ধ।তাহলে কিভাবে চলে তাদের সংসার?এত হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও থাকতে হয় বস্তিতে বা কোন এক অসাস্থ্যকর পরিবেশে।প্রতিটি দিন যুদ্ধ করে বাঁচতে হয় শ্রমিক,কুলি ও মজুর শ্রেণির লোকের।
এতকিছুর পড়েও তিলে-তিলে জমানো টাকা দিতে হয় সরকারি কোষাগারে জমা অর্থাৎ সরকার নির্ধারিত টাকা ট্যাক্স দিতে হয় হতদরিদ্রদের।এই টাকায় চলে দেশ,জাতি,সমাজ ও ভদ্র,শিক্ষিত নামধারী সমাজের মানুষ।
একজন রিকশাচালক বা দিনমজুর যদি জিবন যুদ্বে হার না মেনে তাদের রক্তেভেজা টাকা দিয়ে এই পুড়ো দেশ চালাতে পারে।তাহলে তারা কি কিছুই পায়না এ দেশ,জাতি ও সমাজ থেকে?এ প্রশ্ন করার জন্য হয়ত অনেকেরই সময় থাকেনা।
আমাদের দেশের বিবেগ যদি হয় শিক্ষিত সমাজ,তাহলে পরিশ্রমী দিনমজুর হলো এ দেশের চালিকাশক্তি।অশিক্ষিত,মূর্খ লোক গুলো যদি তাদের নিজের টাকা দিয়ে একটি দেশ চালাতে পারে,তাহলে শিক্ষিত লোকগুলো কি পারবে তাদের বসিয়ে রেখে খাওয়াতে?পারবে না।কারন শিক্ষিত লোকের বুদ্ধি বেশি থাকলেও সামর্থ্য নেই।
পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে এদেশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা দিনমজুর বা শ্রমিকের টাকায় বেতন-ভাতা নিচ্ছে,পরিবারের ভরণপোষণ করছো।অথচ শ্রমিক দিনমজুর জিবনের শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত গোটা দেশকে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
তারা কি চায় এ সমাজ বা রাষ্ট্রের কাছে?
একটু নিরাপত্তা জান-মাল এবং পরিবারের,একটা থাকার মত পরিবেশ।
এগুলোর কোন কিছুই জোটেনা অথচ শিক্ষিত,সমাজ পুলিশ প্রশাসন নিরাপত্তার মাঝে থেকে চাকুরি হারানোর ভয়ে দেশের বা তাদের চালিকাশক্তিকে দিনের পর দিন লাঠিপেটা করে হাসপাতাল কিংবা কবর-শশ্মাণে পাঠিয়ে দিতেছে।
তাদের নিরাপত্তা কোথায়।
হে শিক্ষিত সমাজ চাকুরিজীবি তোমরা কিন্তু জনগণের টাকার চাকর।তোমরা তাদের টাকায় বেতন-ভাতা নিচ্ছো।অতএব মনিবকে আঘাত করো না।
তোমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে সজাগ থাকো কারো তাঁবেদারি করো না।
মনিবকে সম্মান করো।
CBALO/আপন ইসলাম
আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।