দেশের বৃহত্তম চলনবিলে মধ্যে মহাসড়ক নির্মাণ, অপরিকল্পিত বাঁধ, খাল ভরাট ও দখল এবং পুকুর খননে বিলের এক সময়ের খরস্রোতা নদনদীগুলো শুকিয়ে এখন মরা খালে পরিনত হয়েছে। কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম এই নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ চান সচেতন নাগরিক সমাজ।
সরজমিনে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চলনবিলে মধ্যে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক নির্মাণ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত বাঁধ, ক্রসবাধ নির্মাণ, নদীর খাল ভরাট করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করায় নদীর গতিপথ বন্ধ হয়ে গেছে। গত ৪-৫ বছর ধরে চলনবিলের খাল ও মাঠ দখল করে পুকুর খননে প্রতিযোগীতা চলছে ফলে চলনবিলের মাঠগুলো এখন মৎস খামারে পরিনত হচ্ছে।
চলনবিলের মধ্যে প্রবাহিত ভদ্রাবতী, করতোয়া, আত্রাই, নন্দকুজা, বড়াল, গুমানি, গোহালা, বেহুলা, ঝবঝবিয়া, কাকন, ফুলজোড়সহ ১৪-১৫টি নদনদী ছিল চলনবিলেন প্রাণ। নদী পথে ঢাকা, চট্রগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় নৌপথে এই এলাকায় ব্যবসায় বাণিজ্য এক সময় রমরমা ছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এসব নদী শুকিয়ে মরা খালে পরিনত হওয়ায় নৌপথ প্রায় বন্ধ রয়েছে।
বর্ষা মৌসুমে কয়েক মাস বাঘাবাড়ী বন্দরসহ কিছু নদীতে নৌকা ও ট্রলার ও লঞ্চ চলাচল করলেও অন্য সময় বন্ধ থাকে। বেসরকারি সংস্থা ও সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে নদী ভরাট ও খাল বন্ধের প্রতিবাদে মানববন্ধন, সেমিনার আলোচনায় সীমাবদ্ধতা রয়েছে। সরকারিভাবে বিলের খাল, নদী ও মাঠের পুকুর খনন বন্ধ কার্যকর কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান হচ্ছে না।
তাড়াশ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরদার মো. আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে চলনবিল বাঁচাও আন্দোলন নামে ও নাটোরের সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এমরান আলী রানার নেতৃত্বে চলনবিলের প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচাও নামে একটি সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে একাধিকবার মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
চলনবিল বার্তা পত্রিকার সম্পাদক ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী মো. আব্দুর রাজ্জাক রাজু জানান, দখল আর ভরাটে দেশের এতিহ্যবাহী চলনবিলের নদনদীগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। সরকারি ভাবে নদীর গতিপথের সব স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
চলনবিলের প্রকৃতি ও পরিবেশ বাঁচাও এর সভাপতি এবং সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা এমরান আলী রানা জানান, আমরা ২ মাস পূর্বে সিংড়ায় মানববন্ধন ও আলোচনা সভা করেছি। খাল ও নদী ভরাটকারীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।
CBALO/আপন ইসলাম