আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনা ভাইরাসে ভ্যাকসিন নিলেও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে না বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এই কথাটি যেন আশার আলোকে অন্ধকারে পরিণত করে দিল। সোমবার (১১ জানুয়ারি) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে ডয়েচে ভেলের একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
মহামারি করোনা ভাইরাস আবারও ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। এ অবস্থায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। কিন্তু এই ভ্যাকিসিন নিয়ে দুঃসংবাদ শোনাল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা বলছে, ভ্যাকসিন গ্রহণ করলেও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী সৌম্য স্বামীনাথন বলেন, ভ্যাকসিন বাজারে এলেও এই বছর হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে না। মানতে হবে করোনাবিধিও।
তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে জনসংখ্যাগতভাবে অনাক্রমতা বা কঠোর অনাক্রমতা (হার্ড ইমিউনিটি) তৈরি হবে না। তাই করোনাবিধি মেনে চলতে হবে। শারীরিক দূরত্ব, হাত ধোওয়া, মাস্ক পরতে হবে।’
দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফেরা নিয়েও সতর্ক হতে বলেছেন তিনি।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের প্রথম সারির দেশগুলি টিকাকরণ শুরু করেছে। কিন্তু টিকাকরণ সম্পর্কে সন্দেহ আছে অনেকের। আবার ভাইরাস গঠনগত পরিবর্তনের সম্ভাবনা আছে। তাই এই অবস্থায় টিকাকরণ হলেও হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
এদিকে আমেরিকা, ব্রিটেন, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে গণ টিকাকরণ। মূলত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, বায়োএনটেক-ফাইজার, মডার্নার টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো।
স্বামীনাথন বলেন, সারাবছর মেনে চলতে হবে করোনাবিধি। যেভাবে গবেষক, বিশেষজ্ঞরা কাজ করে চলেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
গত বছরই ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন তথা প্রজাতি ছড়িয়ে পড়ে ব্রিটেনসহ বিভিন্ন দেশে। পরিস্থিতির মোকাবিলায় বন্ধ করে দেওয়া হয় সব সীমান্ত। ব্রিটেনের সব বিমান বাতিল করে দেয় একাধিক দেশ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই নতুন ধারা করোনা ছড়াতে পারে খুবই দ্রুত হারে। ভাইরাসের অন্য প্রজাতির তুলনায় এটি ৭০ শতাংশ ক্ষতিকর। আর তাতে ৬০ শতাংশ সংক্রমণ বেড়েছে লন্ডনে।
মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৯ কোটি ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৭৬ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৮৭৯ জনের। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ কোটি ৫২ লাখ ৮৭ হাজার ১০২ জন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২১৮টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।