রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
শুভ বড়দিন। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপণা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভির্যর মধ্য দিয়ে যীশু খ্রিষ্টের শুভ জন্ম দিন পালিত হবে শুক্রবার। ঈশ্বরের আত্মীক প্রেমের বন্ধনে, মানব কল্যাণের বারতা বয়ে বেড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে পৃথিবীতে জন্ম গ্রহন করেছিলেন ঈশ্বরের পুত্র রুপে মেষ পালক হিসেবে যীশু খ্রিষ্ট। তাই খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় এবং প্রধান উৎসব যীশু খ্রিষ্টের জন্ম দিনকে ঘিরে।
পবিত্র বাইবেল অনুসারে যীশু খ্রিষ্ট কুমারী মাতা মরিয়মের গর্ভে জন্ম নেয়া যীশু খ্রিষ্ট মানব কল্যানে, ধর্ম পথে মানবকে পরিচালিত করে ঈশ্বরের আশীর্বাদ লাভের প্রেরণা যোগাতে আপন অলৌকিক মহিমায় ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত ছিলেন আমৃত্যু পর্যন্ত।
তাই শুভ বড় দিনকে ঘিরে উৎসব আমেজের কোন কমতি নেই বরিশালের আগৈলঝাড়ার খ্রিষ্টান পল্লীর বাড়িতে বাড়িতে। ক্রিসমাস ট্রি, রং-বে রংয়ে কারুকার্যর আল্পনা, রঙ্গিন কাগজের বাহারী ফুলের আঙ্গিনা, আর রঙ্গিন বাতিতে সাজানো হয়েছে আবাসগৃহ, গো-শালা থেকে শুরু করে প্রার্থণার কেন্দ্রবিন্দু গীর্জাগুলো।
আয়োজনের কমতি নেই পুলিশ প্রশাসনেরও। শুভ বড় দিনের উৎসব আমেজকে নিরাপদ ও নিবিঘেœ সম্পন্ন করতে গীর্জাগুলোতে ইতোমধ্যেই পুলিশী নজরদারির মধ্যে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানা অফিসার ইন চার্জ মো. গোলাম ছরোয়ার।
ওসি গোলাম ছরোয়ার জানিয়েছেন, করোনা মোবালোয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ৬৯টি গীর্জায় যীশু খ্রিষ্টের জন্মদিন উপলক্ষে “শুভ বড় দিন” উদযাপনের ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। বড় দিন উপলক্ষে উপজেলার ৬৯টি গীর্জায় প্রায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী পরিবারের সদস্যরা যীশু খ্রিষ্টের পৃথিবীতে পুণঃআগমনী বার্তায় গীর্জায় গীর্জায় সমবেত হয়ে বিশেষ প্রার্থণায় সমবেত হবেন। এদিন গীর্জায় গীর্জায় অনুষ্ঠিত হবে ভক্তিমুলক গান। একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় শেষে কেক, মিস্টি, বিশেষ খাবার (সোমরস) দিয়ে অতিথীদের আপ্যায়ন চলবে রাতব্যাপি। পরদিন সকালেও চলবে প্রার্থণা। নির্বিঘেœ প্রার্থণা করাসহ বড় দিনের সকল উৎসব উদযাপন করতে উল্লেখযোগ্য গীর্জাগুলোতে নিছিদ্র নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থাসহ সকল গীর্জা ও যাতায়াতের পথে পুলিশী টহল অব্যাহত রাখা হবে
সরেজমিনে দেখা গেছে, বড় দিন উপলক্ষে কয়েক দিন আগে থেকেই গীর্জাগুলো সাজোনো হচ্ছে বর্নিল সাজে। বড়দিন উপলক্ষে গীর্জা ও খ্রিষ্ট সম্প্রদায়ের বাড়ি গুলোতে যীশু খ্রিষ্টের জন্মস্থান হিসেবে গো-শালা নির্মান, রঙ্গীন কাগজ ও বাতি দিয়ে সাজানো, ক্রিসমাস ট্রি সাজানো ও কেক, মিষ্টিসহ বিশেষ খাবার পরিবেশনের আয়োজন করা হয়েছে। বড় দিন উপলক্ষে প্রয়াত মা-বাবাসহ স্বজনদের কবরে করা হবে বিশেষ প্রার্থণা। তব করোনার কারণে এবছর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে না কোথাও। ইতোমধ্যেই বড় দিন উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ দেশেরে বিভিন্ন স্থান থেকে নারীর টানে বাড়ি ফিরেছেন খ্রিষ্ঠ ধর্মাবলম্বী নারী-পুরুষেরা। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই বাক্যতে ধারন করে বড় দিনের উৎসব পালনের জন্য অন্য দর্শের লোকজনেরও আগ্রহের কমতি নেই এখানে। বড় দিন উদযাপন করতে ৬৯টি গীর্জার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের অনুকূলে ২২হাজার ৩শ ৮৩টাকা করে সরকারী অনুদান প্রদান করেছে উপজেলা প্রশাসন।