চলনবিলের আলো বার্তাকক্ষ:
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) মোঃ ইব্রাহীম হোসেনের বিরুদ্ধে স্থানীয় সংবাদকর্মী শ্রী বিকাশ কুমার চন্দ ও আব্দুর রহিমের উপর মারমুখি আচারণ ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের সদস্য দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রতিনিধি শ্রী বিকাশ কুমার চন্দ। অভিযুক্ত ইব্রাহীম উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পার-ভাঙ্গুড়া গ্রামের মৃত জয়ধর মোল্লার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভুক্তভোগী ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের ৪ নং ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া মহল্লার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল হাই গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট ইব্রাহীমের লাখ টাকা ঘুষদাবীর অভিযোগ করেন বলেন, জমিজমা মালিকানা নিয়ে ২০০১ সালে যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালত পাবনাতে একটি বাটেয়ারা মামলা করেন মজিরন। যাহার মামলা নং- ১২০/২০০১। এবং ২৭শে মার্চ ২০১২ সালে মামলাটির রায়ও হয়। মামলার রায়কৃত নথিপত্র নিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে পূর্বের খারিজ বাতিল করে পূর্নরায় মজিরনের অনুকুলে খারিজের জন্য উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিসে যায় । এসময় অফিস সহায়ক ইব্রাহীম হোসেন ভুক্তভোগীকে আড়ালে ডেকে নথিপত্র দেখে বলেন কাজটি জটিল ১ লক্ষ টাকা দিলে অফিসের বড় স্যারের সাথে যোগাযোগ করে কাজটি করে দিবেন।
তবে ভুক্তভোগী আব্দুল হাই ঝালমুড়ি বিক্রেতা হওয়ায় তাঁর চাহিদা অনুযায়ী টাকা দিতে বিলম্ব হয়। কিন্তু ইব্রাহিম হোসেন তাঁর দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পাওয়ায় দীর্ঘ দুইমাস পর কৌশলে কোর্টের রায় এর কপি গায়েব করে কিছু নথিপত্র তাঁকে ফিরিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার সকালে দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রতিনিধি শ্রী বিকাশ কুমার চন্দ ও দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার প্রতিনিধি আব্দুর রহিম ভূমি অফিসের অভিযুক্ত অফিস সহায়ক ইব্রাহীম হোসেনের নিকট আনিত অভিযোগ সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি তাদের উপর মারমুখি আচারণ ও প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে অফিস থেকে বের করে দেন। এমন সময় অফিসের কর্মকর্তারা এসে পিওন ইব্রাহীমকে নিবৃত করেন।
ঘটনার পর বিকেলে ভাঙ্গুড়া প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস উদ্দিন,যুগ্ন সম্পাদক অধ্যক্ষ হেলাল খান,সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ রায়হান আলী,সদস্য মোঃ মানিক হোসেন,মিনু রহমান,সিরাজুল ইসলাম আপন ও আব্দুর রহিমের উপস্থিতে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার হাবীব এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন শ্রী বিকাশ কুমার চন্দ । পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান কে মৌখিকভাবে অভিযোগ করা হয়।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার হাবীব অভিযোগপ্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন,বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন,গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে অশোভন আচারণের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এবিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভুমি)কে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছি।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৩১শে মার্চ পার-ভাঙ্গাড়া ইউনিয়র ভুমি অফিসে থেকে দুর্নীতি ও অনৈতিক আচারণের কারণে ইব্রাহীমকে উপজেলা ভূমি অফিসে বদলী করেন কর্তৃপক্ষ। তিনি স্থানীয় হওয়ায় যোগদানের পর থেকেই ভুমি অফিসের চিহ্নিত দালালদের সহযোগীতায় ভুমি খারিজ, নামজারিসহ বিভিন্ন ভাবে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা আঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। অপরদিকে সম্প্রতি স্ত্রী সন্তান থাকা সত্বেও আবার উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের আয়ার সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়ে লম্পট ইব্রাহীম। চাকরি বাঁচাতে অবশেষে তাকেও বিবাহ করতে বাধ্য হয় ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইব্রাহীমের মুঠো ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
CBALO/আপন ইসলাম