রুবিনা আজাদ, আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল:
সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিভিন্ন কৌশলে মহাসড়ক ও নৌরুটে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণের গ্রামাঞ্চলে ফেরা ঘরমুখী মানুষের ঢল নেমেছে। এসব ঘরমুখী মানুষগুলো গ্রামে ফিরে কেউ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। ফলে ক্রমেই গ্রামগুলোতে করোনার ঝুঁকি বেড়েই চলেছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়ায় প্রায় প্রতিদিনই গ্রামে বসবাস করা সচেতন মানুষদের সাথে ঘরমুখীদের বাকবিতন্ডার খবর লেগেই রয়েছে। ঘরমুখীদের হোম কোয়ারেন্টিনে রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনই কার্যকরী কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা না হলে ঈদ উপলক্ষে বরিশালের গ্রামগুলোতে মহামারি আকারে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পরার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গত কয়েকদিন থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে বরিশালসহ দণিবঙ্গের ২১ জেলার ঘরমুখী মানুষের ঢল নেমেছে। সেক্ষেত্রে প্রশাসন যতোই কঠোর হচ্ছে, ঘরমুখী মানুষগুলোও ততোটাই কৌশল অবলম্বন করে নিজ নিজ গন্তব্যে পৌঁছে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলার গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে আসা ঘরমুখী একাধিক ব্যক্তিদের সাথে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আলাপকরে জানা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকায় তাদের (যাত্রীদের) মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয়েছে।
সেক্ষেত্রে তাদের গুনতে হয়েছে কয়েকগুন বাড়তি ভাড়া। তারা আরও জানান, তাদের মতো হাজার হাজার ঘরমুখী মানুষ মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ ও এ্যাম্বুলেন্সে ঢাকা থেকে পাটুরিয়া ঘাটে এসে নেমেছে। পরে তারা বিভিন্ন মাধ্যমে পদ্মা পার হয়ে দৌলতদিয়া থেকে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক, মোটরসাইকেল ও থ্রী-হুইলারযোগে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছেন। তবে বাড়ি ফেরার সময় তারা কেহই সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারেননি বলেও উল্লেখ করেন।
গৌরনদী উপজেলার গেরাকুল গ্রামের জনৈক স্বপন সরদার বলেন, তাদের বাড়ির চারিপাশে গত চারদিনে অসংখ্য মানুষ ঢাকা থেকে এসেছেন। প্রাথমিকভাবে ওইসব ব্যক্তিদের কয়েকদিন হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার জন্য অনুরোধ করায় তাদের সাথে তুমুল বাগ্বিতন্ডা হয়েছে। পরবর্তীতে ঢাকা থেকে আসা ওইসব ব্যক্তিরা অবাধে ঘোরাফেরা করায় পুরো এলাকায় করোনা আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্বপন সরদার আরও জানান, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করেও কোন সুফল মেলেনি।
এদিকে আগৈলঝাড়া উপজেলা সদর বাজারের দোকানপাট বন্ধ থাকলেও মফস্বলের বাজারগুরোতে কোন দোকানপাঠ বন্ধ করার কোন উদ্যোগ নেযনি প্রশাসন।এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জাহান বলেন, খোঁজ নিয়ে গ্রামে ফেরা ব্যক্তিদের কোয়ারেন্টিনে থাকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।