অনলাইন ডেস্ক:জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য চিত্র তারকা মাসুদ পারভেজ। যিনি সোহেল রানা হিসেবেই পরিচিত চলচ্চিত্র জগতে। ১০ অক্টোবর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের বরাবর রেজিস্টার্ড ডাকযোগে তিনি পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। চলচ্চিত্রের এই উজ্জ্বল তারকা রাজনীতি থেকে নিজেকে কেন গুটিয়ে নিলেন? এই প্রশ্নের উত্তর জানতেই সোহেল রানার সঙ্গে কথা বলেছেন মাহতাব হোসেন
কেমন আছেন?
ভালোই আছি। আল্লাহ তায়ালা ভালোই রেখেছেন।
আকস্মিকভাবেই রাজনীতি ছেড়ে দিলেন যে?
রাজনীতি কোথায় ছাড়লাম, আমি তো এখনো রাজনীতির মধ্যেই আছি, তুমিও রাজনীতির বাইরে নও। আমরা কেউই রাজনীতির বাইরে নই। একটা কফি কিনতে যাও, একটা আইসক্রিম কিনতে যাওয়া এসবও রাজনীতির অংশ। হ্যাঁ, তুমি বলতে পারো আমি পার্টি ছাড়লাম কেন, এটার কারণ বলতে গেলে অনেক সময় লাগবে। তোমার লিখতেও কষ্ট হবে।
সমস্যা নেই, আপনি বলেন, আমি লিখে নেবো ঠিক…
না, আজ থাক বরঞ্চ আমার অন্যদিন বিস্তারিত বলবো। আজ মূল কারণ বলি, অল্প কথায়, ঠিক আছে?
হ্যাঁ, প্রধান কারণ বললেই হবে।
আমার জাতীয় পার্টি ছাড়ার কারণ মূলত তিনটি। এক নম্বর হলো- এরশাদ সাহেব মারা যাওয়ার পরে দলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের মতামতকে গ্রাহ্যই করা হচ্ছে না। তাদের মনের ইচ্ছা-আকাঙ্ক্ষা কিংবা বক্তব্য শোনা হচ্ছে না, শীর্ষ পর্যায়ে নিজেরাই যা ইচ্ছে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে। এটা মানতে পারছি না। তাদের মতামত নিয়েই দলকে সাজানো দরকার।
দু’নম্বর কারণ হলো- প্রত্যেক পার্টির অনেক কর্মী আছে যারা ডেডিকেটেড, পার্টির জন্য নিবেদিত প্রাণ। জাতীয় পার্টিরও এমন অনেক কর্মী আছে। এইসব কর্মীকে মূল্যায়ণ করা উচিৎ অথচ তাদের অবমূল্যায়ণ করা হচ্ছে। এরশাদ সাহেব চলে যাওয়ার সাথে সাথে এদের নেগ্লেক্ট করা আমার ভালো লাগেনি।
তিন নম্বর হলো, আমাদের পার্টিটা আসলে কী? এই প্রশ্নের উত্তর পাই না, জাতীয় পার্টি জোটের নাকি বিরোধীদল, ক্ল্যারিফাই যদি না থাকে তাহলে সেটা কেমন দল হলো? মূলত এই তিন কারণেই আমি দল ছেড়েছি।
কেউ কেউ বলছে ঢাকা ১৮ আসনে আপনি মনোনয়ন চেয়েছিলেন, পাননি- এ কারণেই নাকি পদত্যাগ?
এটা খুব হাস্যকর কথা। কিছু গণমাধ্যমে এমন কোথা কোত্থেকে আসলো কে জানে। আসলে এই ইলেকশন নিয়ে আমার মোটেও মাথাব্যাথা ছিল না, যার কারণে এই ইলেকশন কবে হবে না হবে সেটাও জানি না। কারণ গত দেড় বছর ধরে প্রেসিডিয়াম সদস্যদের নিয়ে কোনো মিটিং হয় না, তাই স্বাভাবিকভাবেই জানা সম্ভব না আসলে আওয়ামী লীগ এককভাবে মনোনয়ন দেবে নাকি জোটবদ্ধভাবে দেবে, নাকি প্রত্যেকেই আলাদাভাবে দেবে। এসব নিয়ে একদমই আমার আগ্রহ নেই।
সামনের পরিকল্পনা কী? নতুন কোনো দলে যোগ দেবেন নাকি?
শোনো, পরী থাকে যুবক বয়সে, এখন তো আমাদের বয়স শেষ, এখন পরী আশবে কোত্থেকে (হাসি) আসলে পরিকল্পনা বলতে অনেকেই তো ইনভাইট করে বলে, আসেন ইউ ক্যান জয়েন উইথ আস। কিন্তু বিষয়টা তো এতো সহজ নয়। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। পরিকল্পনাতেও নেই কিছু। কিছু সময় যাক, ভেবে দেখা যাক।
আচ্ছা, সেটাই ভালো হয়তো। ভালো থাকবেন…
তুমিও ভালো থেকো.