পাবনার চাটমোহর পৌরসভার প্রধান সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। আরসিসি এই সড়কের নির্মাণ কাজ নিয়ে উঠেছে নানা অনিয়মের অভিযোগ। সিডিউল মোতাবেক কাজ না করে সাব ঠিকাদার ইচ্ছেমতো সবকিছু করছেন। একেক সময় একেক ধরণের সিমেন্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজের ঢালাই শেষে দেওয়া হচ্ছেনা পর্যাপ্ত পানি। লোক দেখানো পানি ছিটিয়ে সব জায়েজ করা হচ্ছে। ঢালাইয়ের শেষ অংশে কোন রকম ফিনিংশিং না করে পাথর ও রড বের করে রাখা হচ্ছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি এই সড়কের এক অংশের আরসিসি ঢালাই কাজের উদ্বোধন করেন পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল। বালুচর খেলার মাঠ এলাকায় উদ্বোধনীর দিনেই ব্যবহৃত সিমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এলাকাবাসী। পরে সিদ্ধান্ত হয় ঢালাই হবে ওপিসি সিম-২ (সাদা) সিমেন্ট দ্বারা। সে সময় পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী,প্রকল্পের প্রকৌশলী,ঠিকাদার এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে কাজ শুরু করেন। আগের সিমেন্ট বাদ দিয়ে ওপিসি,সিম-২ সাদা সিমেন্ট এনে ঢালাই শুরু করা হয়। কয়েকদিন ঠিকঠাকই ঢালাই চলছিল। কিন্তু গত মঙ্গলবার ঢালাই কাজের সিমেন্ট বদলে ফেলা হয়। ঠিকাদার অন্য দিয়ে ঢালাই শুরু করেন। এই সিমেন্ট দিয়ে ঢালাই দিলে শতকরা ৬০ ভাগ ভালোভাবে জমবেনা বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাব ঠিকাদার আঃ জব্বারের সাথে কথা বললে,তিনি দম্ভোক্তির সুরে বলেন,‘যে অভিযোগ করেছে তাকে সিমেন্ট কিনে আনতে বলেন। কোন সমস্যা আমার হবেনা,সব জায়গায় ম্যানেজ করেই কাজ করছি।”
এ বিষয়ে পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রাফিউল বারীর সাথে কথা বললে,তিনি বলেন সঠিক সিমেন্ট দিয়েই কাজ হচ্ছে। সিডিউল মোতাবেক কাজ চলছে। আমি নিজে তদারকি করছি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়,উদ্বোধনীর দিন থেকে গত সোমবার (৩ মার্চ) পর্যন্ত যে সিমেন্ট ব্যবহার করা হলো,সেটি বাদ দেওয়া হলো কেন,আর সিডিউল মোতাবেক কাজ হলে উদ্বোধনীর দিন থেকে যে সিমেন্ট ব্যবহার করা হলো,সেটি ব্যবহার করতে দিলেন কেন ? এমন প্রশ্নের কোন জবাব তিনি দিতে পারেননি।
পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল বিষয়টি দেখবেন বলে জানান। কোন অনিয়ম মেনে নেওয়া হবেনা। কাজ ভালো না হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ উঠেছে,চাটমোহর পৌরসভার প্রধান সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে ঢিলেতালে। মানা হচ্ছেনা সিডিউল। মূল ঠিকাদার কাজ বিক্রি করে দিয়েছেন অন্যজনের কাছে। সেই ঠিকাদার কাজ করছেন ইচ্ছেমতো। সিডিউল বহির্ভূতভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট,পাথর,বালু ও সিমেন্ট। যেভাবে সড়কের দু’পাশে ইটের গাঁথুনি দেওয়ার কথা,তা করা হয়নি। সিডিউল মোতাবেক নির্দিষ্ট পরিমাপে করা হয়নি ইটের গাঁথুনি। কোথাও উঁচু আবার কোথাও নিচু করা হয়েছে। সড়কটির ঢালাই করার পর নিয়মিত পানি দেওয়ার কথা,তাতো করাই হচ্ছেনা। সড়কের উপরে অনেকখানি ফাঁক রেখে চটের বস্তা ভিজিয়ে ফেলা হয়েছে। সেটাও নিয়মে করা হয়নি। পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী রাফিউল বারী স্বীকার করেছেন,বস্তা ফেলা হয়েছে,ফাঁকে ফাঁকে। যা ঠিক হয়নি। সড়কটি নির্মাণ করার পর কমপক্ষে ২১ দিন পানি দিয়ে ভেজানোর নিয়ম। তার আগেই চলছে যানবাহন। সাব ঠিকাদার যেহেতু সবখানে ম্যানেজ করে কাজ করছেন,তাই কোন কিছুরই তোয়াক্কা তিনি করছেন না। এলাকাবাসী দ্রুত সঠিকভাবে সিডিউল মোতাবেক সকল কাজ সম্পন্ন করে জনদূর্ভোগ লাঘবের দাবি তুলেছেন।