সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ার লাহিড়ী মোহনপুর ইউনিয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ সড়ক লাহিড়ী মোহনপুর থেকে তালগাছি পর্যন্ত রাস্তা বর্তমানে চরম বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। বহু প্রত্যাশা নিয়ে শুরু হওয়া সড়ক সংস্কার প্রকল্পটি মাঝপথে এসে হঠাৎ থেমে যায়। কাজ শুরু হওয়ার পর প্রায় অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হলেও বিগত কিছু দিন ধরে কোনও রকম কার্যক্রম নেই, নেই কোনো দায়ী কর্তৃপক্ষের তদারকি। ফলে এই রাস্তাটিকে ঘিরে এলাকাবাসীর আশা পরিণত হয়েছে হতাশায়।
বর্তমানে বর্ষাকালীন সময়ে সড়কের দুরবস্থা আরও প্রকট আকার ধারণ করেছে। বৃষ্টি হলে সড়কের বিভিন্ন স্থানে পানি জমে ছোট ছোট খাল বা পুকুরের মতো দৃশ্য তৈরি হয়। কাদার মধ্যে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন দুর্ঘটনার মুখোমুখি হচ্ছেন পথচারীরা। পাশাপাশি ছোট যানবাহন থেকে শুরু করে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স বা স্কুল ভ্যান চলাচলেও মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।
এই রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন বহু ছাত্রছাত্রী স্কুল ও কলেজে যাতায়াত করে। অসংখ্য মানুষের কর্মস্থলে যাওয়া, বাজারে আসা, চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌঁছানো সবকিছুই নির্ভর করে এই রাস্তাটির ওপর। জরুরি অবস্থায় রোগী নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স আটকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
স্থানীয় কলেজছাত্র জিকো জানান,
আমাদের প্রতিদিন কলেজ যেতে হয় এই রাস্তা দিয়ে। কাদা আর পানি দেখে ভয় লাগে। কখন যে পড়ে যাই বা গাড়ির চাকার পানি গায়ে এসে পড়ে, সেটা বলা মুশকিল।
একই কথা বলেন কৃষক খাইরুল ইসলাম । তিনি বলেন, আমাদের ফসল বাজারে নিতে সমস্যা হয়। ভ্যানে বা সিএনজি কাদা জমে থাকে, অনেক সময় মাঝপথে আটকে যায়। আমরা তো চাই রাস্তা ঠিক হোক, যাতে সময়মতো কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারি।
অভিযোগ রয়েছে, রাস্তার কাজের জন্য বাজেট বরাদ্দ করা হলেও কার্যক্রমের গতি শ্লথ ছিল শুরু থেকেই। তারপর হঠাৎ বেশ কিছুদিন ধরে কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্বশীলতা নেই বলেই এই ভোগান্তি দীর্ঘায়িত হচ্ছে। অনেকেই বলছেন, রাস্তার কাজের তদারকি বা প্রকৌশল দপ্তরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার দায়িত্ব জনপ্রতিনিধিদের হলেও তাঁরা বিষয়টি নিয়ে উদাসীন।
এলাকার এক প্রবীণ নাগরিক বলেন,
ভোটের সময় সব নেতাই রাস্তা পাকা করার প্রতিশ্রুতি দেন। এখন দেখছি, কেউ পাশে নেই। রাস্তার কাজ মাঝপথে থেমে আছে। কোথায় গেল সেই ঠিকাদার, কই গেল প্রকৌশলী?
অবিলম্বে রাস্তার সংস্কার কাজ পুনরায় শুরুর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরা বলেন, যদি এখনই ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তাহলে আরো দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে, কৃষি ও ব্যবসায়িক ক্ষতির পাশাপাশি শিক্ষা ও চিকিৎসা ক্ষেত্রেও বড় ধরনের প্রভাব পড়বে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী ( এলজিইডি ) মো: শহীদুল্লাহ বলেন , বৃষ্টির কারনে রাস্তার কাজ বন্ধ রয়েছে অচিরেই কাজ শুর করা হবে।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং এলজিইডি কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানানো হয়েছে — যেন দ্রুত রাস্তার কাজ পুনরায় শুরু করে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ লাঘব করা হয়।