পাবনার ভাঙ্গুড়ায় জরিনা রহিম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ ও দুর্নীতির ভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে ৯ সেপ্টেম্বর একাধিক ছাত্রীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ করেন।
জানা যায়, ছাত্রী ভর্তির সময় অতিরিক্ত ভর্তি ফি আদায় করা, অতিরিক্ত সেশন চার্জ আদায় করা, টেন্ডার ছাড়া প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রয় করে অর্থ আত্মসাৎ করা, এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ফরম ফিলাফে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা, উপবৃত্তি প্রাপ্ত ছাত্রীদের কাছ থেকে নিয়মিত মাসিক বেতন আদায় করা, ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা আদায় করা, ইউনিক আইডি এন্টি করার নামে টাকা আদায়, উপবৃত্তি আবেদনের খরচ বাবদ ৩৫০টাকা আদায় করা, বিদ্যালয়ের শূন্য পদে কর্মচারী নিয়োগে নিয়োগ বাণিজ্যসহ মোট ২২ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেন ছাত্রীদের অভিভাবক।
জানা যায়, অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ১৯৯৬ সালে সামাজিক বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নেন এবং ২০১২ সালে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে সার্কুলার দেন অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত আলী তার আপন চাচাতো ভাই হওয়ায় কমিটিকে ম্যানেজ করে উনি সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন। যোগদানের পর প্রধান শিক্ষক শওকত আলী ও সহকারী প্রধান শিক্ষ মো. ফারুক হোসেন দুই ভাই মিলে দাপটের সাথে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে টাকা পয়সা ভাগাভাগী করে নিতেন। টাকা পয়সা ভাগা-ভাগী ও অনৈতিক সুবিধা নিয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের মধ্যে দলাদলি সৃষ্টি হয়।
এ নিয়ে ম্যানেজিং কমিটি ও আওয়ামী লীগের নেতারা একাধিকবার প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষককে মিল করিয়ে দেন। ২০১৮ সালে দুর্নীতি ও অর্থ আত্নসাত্বের দায়ে প্রধান শিক্ষক শওকত আলী বরখাস্ত হন। ২০১৮ সালের ১৮ মে ভারপাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসাবে প্রতিষ্ঠানের দায়িক্ত পান সহকারী প্রধান শিক্ষক ফারুক হোসেন। এর পর থেকে তিনি আওয়ামী লীগ নেতাদের ছত্র ছায়াই সরকারি নিয়ম নিতির তোয়াক্কা না করে প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
কোন ছাত্রীর অভিভাবক প্রতিবাদ করলে সেই ছাত্রীকে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেওয়া ও অভিভাবককে আওয়ামী লীগ নেতা দিয়ে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দেওয়া হত বলেও জানা যায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কিছু বলতে ইচ্ছুক নয় বলে জানায়।
উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা বলেন, তার বিরুদ্ধে ২২ টি অনিয়ম ও দুর্নীতির লিখিত অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর দিয়েছে। ইউএনও স্যারের নির্দেশে তাকে তিন কর্ম দিবসের মধ্যে জবাব চেয়ে নোটিশ করা হয়েছিল। তিনি আবেদনের মাধ্যমে সময় বারিয়ে নিয়েছিল এবং জবাবের কাগজ পত্র জমা দিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোছা. নাজমুন নাহার বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে অভিযোগের সত্যতা পেলে আইন গত ব্যবসস্থা নেওয়া হবে।