চলনবিলের আলো বার্তাকক্ষ:
করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে রাতের আধারে অসুস্থ গরু এনে জবাই করে মাংস বিক্রি করার অভিযোগ উঠেছে কসাইয়ের বিরুদ্ধে।ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে ভাঙ্গুড়া বাজার বেইলী ব্রীজের পশ্চিম পাশে ‘‘ভাই ভাই মাংস ভান্ডারে’’।এদিকে কতিপয় অসাধু কসাই বেশি মুনাফার লোভে অসুস্থ গরু-ছাগল কম দামে কিনে এনে মাংস বিক্রি করছেন বলে জানাযায়।অপরদিকে জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না।
ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশ সংবাদিকদের জানায়,ভাঙ্গুড়া বাজারের কসাই মানিক হোসেন,আজমত আলী,মোন্নাফ আলী,আঃ ছাত্তার,নয়ন হোসেন,বাচ্চু মোল্লা ব্যাপারী ও নজরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন শহীদ মিনারের পাশে পিলখানায় অনুমানিক ৪মন ওজনের একটি অসুস্থ গরু জবাই করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল।এমন সময় সেখানে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গরুটি রেখে তারা পালিয়ে যায়।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল ও ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হক।পরে সেখানে গরুটি অসুস্থতার বিষয়টি সত্যতা পেয়ে গরুটিকে চিকিৎসা দেওয়ার নির্দেশ দেন মেয়র।কিন্তু কসাই মানিকসহ অন্যান্যরা মেয়রের নির্দেশ অমান্য করে শুক্রবার ভোর রাতে ওই অসুস্থ গরুটি জবাই করে মাংস বিক্রি করে দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পার্শবর্তী ফরিদপুর উপজেলার চড়পাড়া গ্রামের জনৈক এক ব্যক্তির বাড়ি থেকে অসুস্থ ওই গরুটি ৩২ হাজার টাকার বিনিময়ে কিনে আনেন তারা।করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে অসুস্থ গরু জবাই করে বিক্রি করায় স্থানীয়দের মনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।তবে প্রশাসনকে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান স্থানীয়রা।
অসুস্থ গরু বিক্রির বিষয়ে জানতে চাইলে সংবাদিকদের মানিক কসাই বলেন,স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের সঙ্গে আলাপ করে গরু জবাই করে বিক্রি করেছি।
স্থানীয়দের অভিযোগ,ওই মাংস ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যে এমন ঘটনা ঘটায়। কিন্তু তারা অধিকাংশ সময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়। বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত তদারকি করার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হক হোসেন সংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমিসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছিলাম।কিন্তু আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে গরুটি রেখে পালিয়ে যায় তারা।পরে ফোন করে কসাই মানিককে ডেকে আনেন মেয়র।
পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন,খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে পশুটিকে চিকিৎসা দেয়ার জন্য নির্দেশ করেছিলাম কসাই মানিককে।কিন্তু তাকে গরু জবাই করে মাংস বিক্রি করার অনুমতি দেয়া হয়নি।তবে পৌরসভার নিয়ম অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা পানি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. তোফাজ্জল হোসেন বলেন, জবাইয়ের আগে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষার নিয়ম রয়েছে।কিন্তু করোনার এই সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই রোগাক্রান্ত পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করা হলে জন স্বাস্থ্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।