রবিবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০৮ অপরাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
পাবনায় বাঁশঝাড়ে কিশোরী খুন, টাঙ্গাইল আশেকপুর থেকে প্রধান আসামী গ্রেফতার অভয়নগরে ঘাট নিয়ে দ্বন্দ্বে অপহরণের পর আ.লীগ নেতাকে হত্যা বেনাপোলে ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক আজিম উদ্দীনের নামে মিথ্যা সংবাদের নিন্দা রামগড়ে “বাঁশরী ওয়াদুদ” ফুটবল টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন দূরন্ত লামকুপাড়া যুব স্পোর্টিং ক্লাব নতুন বাংলাদেশ হবে শ্রমিকের বাংলাদেশ – রফিকুল ইসলাম খান সভাপতি বকুল সম্পাদক এরশাদ নাগরপুর প্রেসক্লাবের নির্বাচন অনুষ্ঠিত  আটঘরিয়ায় ক্ষুদ্র নি-গোষ্ঠীর নারী নির্যাতন বন্ধ ও সক্ষমতা উন্নয়নে করণীয় শীর্ষক আলোচনা সভা  অভয়নগর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষথেকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লাখ-লাখ টাকা আদায় 

ঈশ্বরদীতে টিসিবির কার্ড থাকলেও মিলছে না পণ্য

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি: 
আপডেট সময়: শুক্রবার, ২ আগস্ট, ২০২৪, ৬:৩৯ অপরাহ্ণ

ডিলার কর্তৃক টিসিবির পণ্য কালবাজারে বিক্রয়। পাবনার ঈশ্বরদীতে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) খাদ্য পণ্য নানা অজুহাত দেখিয়ে নয়ছয় করে ও নিয়োগকৃত ট্যাগ অফিসারের যোগ সাজছে উচ্চ মুল্যে কালবাজারে বিক্রয় করার অভিযোগ উঠে এসেছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় উপজেলার মুলাডুলির পতিরাজপুর খয়বার মালিথার দোকানের সামনে ৭৬৩ জন গ্রাহকের মধ্যে ৫৪ টিসিবির পণ্য কার্ডধারী গ্রাহককে পণ্য দেওয়া হয়নি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে দূরদূরান্ত থেকে আগত কার্ডধারী গ্রাহকরা ক্ষিপ্ত হয়ে টিসিবির পণ্য বহনকারী গাড়ি ও ডিলারকে আটকিয়ে রাখেন। পরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার, ট্যাগ অফিসারের সমন্বয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে আসেন টিসিবির ডিলার। এর আগে গত মঙ্গলবার বিকেলে পৌর এলাকায় ৫৪ কার্ডধারীকে পণ্য দেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টিসিবির পণ্য সুবিধাভোগি কার্ডধারীদের মধ্যে বিক্রয়ের জন্য সরকারীভাবে নির্ধারিত ঈশ্বরদী কলেজ রোডস্থ আবুল খয়ের মিয়ার ছেলে সামিউল হাসানের মালিকানাধীন মেসার্স সামিউল ট্রেডার্স পৌর সভার সরকারী সাঁড়া মারোয়াড়ী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠ, দাশুড়িয়ার কালিকাপুর স্কুল মাঠ ও মুলাডুলির পতিরাজপুর খয়বার মালিথার দোকানের সামনে গত তিন দিনে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করেন। প্রতিটি স্থানেই অন্তত ৫৪ থেকে ৭০জন কার্ডধারীর নিকট টিসিবির পণ্য বিক্রয় করেননি। সরকারীভাবে নিয়োগকৃত ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে বিশেষ যোগসাজছে নানা টালবাহানা ও সুবিধাভোগিদের সঙ্গে নয়ছয় করে পণ্যগুলো ফেরত এনে কালোবাজারে বিক্রয় করেন। দাশুড়িয়ার কালিকাপুর স্কুল মাঠ এলাকায়  ৭শ গ্রাহককের প্রত্যেক গ্রাহককে ৪৭০ টাকা প্যাকেজে ২ কেজি মসুরের ডাউল, ২ লিটার সয়াবিনের তেল ও ৫ কেজি চাউল বিক্রয়ের অনুমতি পেয়েছেন। প্রতিমাসে তিনি এক বার করে করে চাহিদা প্রদান করে পাবনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশে জেলা থেকে গ্রহন করেন। সরকারী নিয়মানুসারে ট্রাকযোগে টিসিবির পণ্যগুলো সরাসরি নির্ধারিত বিক্রয়কৃত স্থানে গ্রাহকের মাঝে এনে বিক্রয় করার কথা রয়েছে। কিন্তু মেসার্স সামিউল ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী মোঃ সামিউল ইসলাম কিছু পণ্য বিক্রয় করেন। অবশিষ্ট মালামাল নানা কারণ দেখিয়ে বিক্রয় না করে ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে যোগ সাজছে নিজের গোডাউনে নিয়ে আসেন। সেগুলো উচ্চ মুল্যে ঈশ্বরদী বাজারে সামিউলের নির্ধারিত কিছু দোকানে বিক্রয় করেন। এর আগে গত মঙ্গলবার গ্রাহকদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল থেকে ডিলার সামিউলের টিসিবির পণ্য ভর্তি ট্রাক অনুসরণ করে দেখা যায়, ট্রাকটি ঈশ্বরদী বাজারের ব্যবসায়ী খয়ের মিয়ার নিজ বাড়ির গোডাউনে আনলোড করা হয়। বিষয়টি হাতে নাতে ধরার পর সংবাদকর্মীদের ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন সামিউল ও তার বাবা ব্যবসায়ী খয়ের মিয়া। মুলাডুলির পতিরাজপুর বটতলা মোড়ের খয়বার মালিথা, আব্দুস সামাদ মালিথা অভিযোগ করে জানান, ইউপির ৩, ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের মোট ৭৬৩ জন কার্ডধারী টিসিবির পণ্য নেওয়ার জন্য দূর দূরান্ত থেকে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেন। এরমধ্যে ৫৪জনের পণ্য কম আনেন। পণ্য নেই জানালে ডিলার ও পণ্যবাহি গাড়ি আটক করেন এলাকাবাসী।  পরে স্থানীয় ইউপি মেম্বার, ট্যাগ অফিসারের সমন্বয়ে ডিলার গাড়ি নিয়ে পালিয়ে যান। মুলাডুলি ইউপির স্থানীয় মেম্বার জাহিদুর রহমান তাঁরা মালিথা জানান, টিসিবির ডিলার ৫৪ জন কার্ডধারীকে মালামাল দেয়নি। পরিকল্পিতভাবে ডিলার কম এনেছিলো। কালোবাজারে বিক্রয় করে দেওয়ায় ডিলার ৫৪জন গ্রাহককে মালামাল দিতে পারেনি। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। মুলাডুলি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মালিথা জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। ডিলারের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর অভিযোগ করা হয়েছে। ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র মো. ইছাহক আলী মালিথা জানান, টিসিবির ডিলার সামিউল হাসান সঠিকভাবে কার্ডধারীদের নিকট পণ্য বিক্রয় করছেন না। কালোবাজারে উচ্চমুল্যে বিক্রয় করার প্রমান রয়েছে। এতে সরকারের মহৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ব্যহৃত হচ্ছে। বিষয়টি লিখিতভাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হবে। এ ব্যাপারে ডিলার সামিউল ইসলাম বলেন, আমার ভুল হয়ে গেছে। আর হবে না। আমার প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিকদের দেওয়ার জন্য মালামালগুলো আনা হয়েছে। নতুন কার্ড হলে এই সমস্যা আর হবে না। তবে কালোবাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন ডিলার সামিউল।
টিসিবি পণ্য বিক্রয়ের ট্যাগ অফিসার উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আলিউজ্জামান জিয়া জানান, পতিরাজপুরে টিসিবি পণ্য বিতরণের শুরুর বেশ কিছুক্ষণ পরে সেখানে গিয়েছিলাম। ৫৪ জন গ্রাহক মালামাল না পাওয়ায় হৈচৈ বাধিয়েছিলেন। তবে ডিলার কর্তৃক কালোবাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান এই কর্মকর্তা। ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাস জানান, টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের ডিলার সামিউল হাসানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ প্রেরণ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর