সোমবার, ০৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৫৯ পূর্বাহ্ন

ই-পেপার

শিরোনাম :
শিরোনাম :
অন্তবর্তী সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে এটাই জনগণের প্রত্যাশা- নূরুল ইসলাম বুলবুল সাতক্ষীরার স্থানীয় ই-কমার্স হাটকরো (hatkoro.com)আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু ভোমরা সি এন্ড এফ এজেন্টস্ এসোসিয়েশনের স্বচ্ছতায় শৃঙ্খলা ফিরেছে স্থলবন্দরে, বাড়ছে এক্সপোর্ট ও রাজস্ব সময় টিভির সাংবাদিকের ওপর হামলার প্রতিবাদে বেনাপোলে মানববন্ধন নাগরপুরে সাবেক মন্ত্রীর মতবিনিময় সভা ডাঃ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহনের অভিযোগ  বাগেরহাটে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত আটোয়ারীতে বীর মুক্তিযোদ্ধা পিতর দাসের লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন

ফরিদপুরে অবাধে তৈরি হচ্ছে নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল, ব্যবস্থা নেই প্রশাসনের

মেহেদী হাসান, ফরিদপুর (পাবনা) প্রতিনিধি:
আপডেট সময়: বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই, ২০২৪, ১১:১১ অপরাহ্ণ

বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকে চলনবিলে খালবিলে নদী-নালায় ঢুকেছে নতুন পানি। বেড়েছে দেশী মাছের আনাগোনা। আর এই সুযোগে অসাধু মৎস্য শিকারিরা নেমেছে এসব মাছ নিধনে। প্রতিদিন স্থানীয় হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে মাছ। বিশেষ করে ছোট মাছ ও পোনা মাছ বিক্রি হচ্ছে বেশি।

এর মধ্যে চাহিদা বেড়েছে মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণের। বেশি চাহিদা নিষিদ্ধ চায়না দুয়ারী জাল। তাই চলনবিলের বিভিন্ন এলাকায় ছোট ছোট কারখানায় অবাধে এসব চায়না দুয়ারী জাল তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে।

এমনই এক কারখানার সন্ধান মিলেছে পাবনার ফরিদপুরন উপজেলার পুজ্ঞলী ইউনিয়নের নারায়ণ পুর গ্রামের মো: নুরুল ইসলাম ও আল আমিনের নিজ বাড়িতে। যেখানে দিনে দুপুরে প্রশাসনের নাকের ডগায় অবাধে তৈরি ও বিক্রি হচ্ছে চায়না দুয়ারী জাল। নির্বিঘ্নে নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের চেয়েও ক্ষতিকর চায়না দুয়ারী জাল তৈরি করছেন বেড়া উপজেলার শ্রী ইর্শ্বর হালদার নামের এক অসাধু ব্যবসায়ী। এবং এই কারখানা দেখাশুনা করেন নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা শ্রী পলান হলদার। পাশেই রয়েছে আল আমিন নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে কারখানা। ইর্শ্বর আরো একটি কারখানা রয়েছে গোপাল নগর গ্রামে। নুরুল ইসলাম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন,আমি জায়গা ভাড়া দিয়েছি।কারখানার মালিক আমি না।কারখানার কাগজ পত্র দেখতে চাইলে কর্মচারী পলান বলেন,আমি এই কারখানা দেখাশোনা করি।কারখানার মালিকের সাথে আপনি কথা বলেন।

নারায়ণপুর বাজারের পাশে অবস্থিত চায়না দুয়ারী জালের কারখানাটি সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, কারখানাটির চারপাশ একটি বিশাল টিন সেট ঘরের চারপাশ বাউন্ডারি দিয়ে ঘেরা। কারখানার ভেতরে ঢুকতেই চোখে পরে চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এ জাল তৈরির বিভিন্ন উপকরণ। জালের মধ্যে প্রবেশ করানোর জন্য তৈরি করে রাখা চারকোনাকৃতির লোহার চিকন রডের ফ্রেম। রড ঢেকে দেয়ার জন্য প্লাস্টিকের চিকন পাইপ। পাশেই পরে রয়েছে বিপুল নতুন জাল। পাশের শেডে ফ্রেমে তৈরি হচ্ছে চায়না দুয়ারী জাল। এই চাইয়া দুয়ারী জালের বিভিন্ন পকেট, রড ইত্যাদি উপজেলার বেড়হাউলিয়া, চিথুলিয়া সহ অন্যান্য গ্রামে তাদের এজেন্সি লোকদের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে।

এলাকাবাসী জানায়, অনেক দিন যাবত এ বাড়িতে তৈরি হচ্ছে চায়না দুয়ারী জাল। বাইরের কাউকে এ বাড়িতে ঢুকতে দেয়া হয় না। শুধু এখানকার নারী-পুরুষ কারিগররা আসে যায়।
আরো খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই উপজেলার ডেমরা,রতনপুর, সাথিয়া উপজেলায়,রুপসী গ্রামেও অসংখ্য চায়না দুয়ারী জালের কারখানা রয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জলজ জৈববৈচিত্রের জন্য চায়না দুয়ারী জাল বা মাছ ধরার এ ফাঁদ কারেন্ট জালের চেয়েও ক্ষতিকর। এ জাল সূক্ষাতিসুক্ষ্মভাবে মাছ আটকে রাখতে সক্ষম। জালের বুননে এক গিঁঠ থেকে আরেক গিঁঠের দূরত্ব খুব কম হওয়ায় মাছ বা অন্য কোনো ক্ষুদ্র জলজ প্রাণী একবার এ জালের মধ্যে প্রবেশ করলে আর বের হতে পারে না। অন্য জালের চেয়ে কম পরিশ্রমে চায়না দুয়ারী জালে অধিক পরিমাণ মাছ পাওয়া যায়। ফলে এ এলাকার জেলেদের কাছে কদর বেড়েছে চায়না দুয়ারী জালের।

জেলেরা এখন মাছ ধরতে কারেন্ট জালের পরিবর্তে ঝুঁকছেন চায়না দুয়ারী জালের দিকে। উৎপাদন, বিক্রয়, বিপণন, ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও ফরিদপুরের বিল, নদীগুলোতে প্রতিদিন হাজার হাজার জাল পেতে মা ও পোনা মাছ নিধন করছেন অসাধু মৎস্যজীবীরা। ফলে ক্রমশই বিলুপ্ত হচ্ছে দেশী প্রজাতির মাছ। এ জালের ব্যবহার অব্যাহত থাকলে মাছের পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষুদ্র জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। জলজ জীব বৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হবে।

জানতে চাইলে পুজ্ঞলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো: সাজেদুল ইসলাম (সুমন) বলেন,আমি উপজেলায় প্রতি মাসিক মিটিংয়ে এই চায়না দুয়ারী জালের উৎপাদন নিয়ে প্রশাসন কে বলি,কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে না।যদি করে তা শুধু লোক দেখানো অভিযান পরিচলনা করেন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার সুজিত কুমার মুন্সী বলেন, আমি একটা অভিযান পরিচলনা করেছি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও ম্যাজিস্ট্রেট সাথে কথা বলে আরো অভিযান পরিচলনা করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর