শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৩৯ অপরাহ্ন

ই-পেপার

এনায়েতপুরের জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে অর্ধলক্ষাধিক টাকা নেয়ার অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০, ৫:৪৫ অপরাহ্ণ

চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:

সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদের বিরুদ্ধে বয়স্ক ও বিধবা ভাতার কার্ড করে দেওয়ার কথা বলে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রায় ৩ বছর আগে তিনি ৮ জনের কাছ থেকে অর্ধলক্ষাধিক টাকা নিয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী হতদরিদ্র মহিলারা মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে এনায়েতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। অভিযোগে জানা যায়, এনায়েতপুর থানাধীন জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারমান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী সুলতান মাহমুদ তার নিকটতম লোকজনদের দিয়ে বিভিন্ন গ্রামের অসহায়, দুস্থদের নিকট থেকে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্ত ও প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড করে দেয়ার কথা বলে কারও কাছ থেকে ৬-৭ হাজার টাকা করে আদায় করেছেন। যারা টাকা দিতে পারেননি তাদের কপালে ভাতা বইয়ের কার্ড মেলেনি।

 

এজন্য ভাতার কার্ডের আশায় ৩ বছর আগে ১নং ওয়ার্ডের দ্বাদশপট্রি গ্রামের মৃত নুরু খার স্ত্রী মর্জিনা বেওয়া, স্বামী পরিত্যক্তা লিপি রানী, গোবিন্দ হালদারের স্ত্রী চায়না, দিনমুজুরি অঞ্চনা, আশরাফের স্ত্রী বাতাসি খাতুন, মৃত রেজাউল করিমের স্ত্রী আছিয়া, তারাভানু ও শাহানা খাতুন জনপ্রতি ৭ হাজার করে মোট ৫৬ হাজার টাকা সৈয়দপুরের আব্দুস ছামাদের মাধ্যমে সুলতান চেয়ারম্যানকে দেয়া হয়। টাকা দেয়ার পর চেয়ারম্যানের নিকট যোাগাযোগ করা হলে কার্ড করে দেই দিচ্ছি বলে দুস্থদের ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি ও ছবি জমা নেন। এরপর থেকে কার্ড হবে হচ্ছে বলে কাল ক্ষেপন করেন তিনি। এভাবে ৩ বছর পার হলেও ওই মহিলাদের ভাতার কার্ড করে দেয়া হয়নি। পরে ভুক্তভোগীদের মধ্যে আছিয়া সহ দু একজন কিছু টাকা ফেরত পেলেও বাকি টাকা ফেরত চাইতে গেলে বিভিন্ন ধরনের গালমন্দ ও হুমকি ধমকী দেয়া হচ্ছে।

 

এ ঘটনায় এনায়েতপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে চেয়ারম্যানের পক্ষে বুধবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য মহির উদ্দিন ভুক্তভোগীদের নিকট এসে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ সৃষ্টি করেন। এছাড়া দুস্থ মহিলাদের পাওনা অর্ধেক টাকা ২ দিনের মধ্যে পরিশোধ করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। এ বিষয়ে বয়োবৃদ্ধ মজির্না বেওয়ার মেয়ে নুরনাহার জানান, ভাতার কার্ড দেয়া হবে সুলতান চেয়ারম্যানের এমন আশ্বাসে ৩ বছর আগে এলাকার ৮ জন মহিলার নিকট থেকে জনপ্রতি ৭ হাজার করে টাকা তুলে আমি নিজে ছামাদের মাধ্যমে চেয়ারম্যানকে দিয়েছি। এখন চেয়ারম্যান কার্ডও করে দিচ্ছে না, আবার টাকাও ফেরত দেয় না। তাই বাধ্য হয়ে থানায় অভিযোগ করেছি। এদিকে দুস্থদের নিকট থেকে টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে আবদুস ছামাদ বলেন, চেয়ারম্যানের নিকট সব টাকা জমা দেয়া হয়েছে।

 

এখন সে কার্ড না দিলে আমি কি করবো। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ জানান, আমার হাতে কেউ টাকা দেয়নি। এ বিষয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি মোল্লা মাসুদ পারভেজ জানান, সরকারী ভাতা প্রদানে টাকা নেয়ার কোন নিয়ম নেই। তবে বিষয়টি উপজেলা সমাজসেবা অফিসের অধীনে। কিন্তু ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি ধমকি দেয়ার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর