এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলায়। দিগন্ত মাঠ জুড়ে সবুজে দোল খাচ্ছে বোরোধান ক্ষতগুলোতে।
চৌহালী বন্যাদুর্গত ও দুর্গোম এলাকা হিসাবে এ অঞ্চলের কৃষকরা এবার বোরো চাষকে সৌভাগ্য হিসাবে মনে করছেন। উপজেলার ৭ ইউনিয়নের প্রতিটি মাঠের বুকে এখন সবুজের সমারহ। দিগন্তজুড়ে সবুজের মাঠ যে দিকে তাকায় শুধু সবুজ আর সবুজ। সবুজের সমারোহে চোখ জুড়িয়ে যায় যেনো। তাই ইরি বোরো ধানের আবাদে বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে যেন হাসির ঝিলিক। বর্তমানে উপজেলার প্রতিটি কৃষি মাঠ কৃষকদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। বড় ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা দিলে মাথায় হাত ছাড়া কোন উপায় থাকবে না বলে আলাপ চারিতায় চাষীরা প্রতিবেদককে জানায়। চাষীরা বর্তমানে দু-নয়ন ভরে স্বপ্ন নিয়ে দিন গুনছেন সুষ্ঠভাবে যেন মাঠের ফসল ঘরে তুলতে পারেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারে ইরি বোরো মৌসুমে উপজেলার ৭ ইউনিয়নে ২০২৪ অর্থ বছরে,
স্থানীয় জাত যেমন সাদা বোরো, কালি বোরো,হাই ব্রিড উপসীসহ সর্বমোট ২ হাজার ৪’শ দশ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে ৷
উপশী জাত যেমন, ব্রি-ধান ২৮,২৯ এগুলো আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে কর্তন উপযোগী হবে ৷ ফলন প্রতি বিঘায় ২৪ মন হবে বলে আশা পোষণ করেন ৷
গভীর নলকূপের আওয়তায় সেচের পানি ব্যবহার করে চাষীরা সঠিক নিয়ম অনুসারে সেচে সুফল পাচ্ছেন। এছাড়া চলতি মৌসুমে বিদ্যুৎ বিভ্রাট (লোডশেডিং) এর প্রবাব বেশী অভিযোগ আছে ক্ষয়ক্ষতি নেই। এদিকে উপজেলার ডিলারদের নিকট পর্যাপ্ত পরিমান তেল ও সার পাওয়ায় কৃষকরা অনেকটা আশ্বস্ত হয়েছে।
উপজেলার খাষকাউলিয়া ইউনিয়নের কৃষক মো: সাইফুল ইসলাম জানান, অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে আমরা অধিকহারে বোরো ধান চাষ করেছি। আশা করছি এবার বোরো ধানে বাম্পার ফলন হবে। এবার বড় ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে আমরা অনেক উপকৃত হবো এবং বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবো বলে মনে করছি।
উপজেলার খাষপুকুরিয়া ইউপিতে উপসহকারী কৃষি অফিসার মোহাম্মদ আলী ও খাষকাউলিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা মো: ছানোয়ার হোসেন জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ (কালবৈশাখি ঝড়) না হলে, এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলন হবে। এতে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন। উচ্চ ফলনের প্রাপ্তির বিষয়ে চাষীদের নানা ভাবে কৃষি তথ্য ও পরামর্শ প্রদান করে আসছি আমরা। আগাম ধানের চারা রোপন এলাকায় এ দেড় সপ্তাহের মধ্যে ধান কর্তন আরম্ভ হবে। উপজেলায় পুরোদমে ধান কর্তনের ধূম পড়ে যাবে ৷
চৌহালী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষি বিদ মোঃ মাজেদুর রহমান বলেন, উপজেলায় এ বছর কোন শ্রমিক সংকট নেই ৷ উল্টো চৌহালী থেকে দেশের বিভিন্ন হাওড় অঞ্চলে ৩ হাজার শ্রমিক কৃষি বিভাগের উদ্যোগে পাঠানো হয়েছে ৷ তিনি আরো বলেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মাঠে থেকে কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে ৷ আবহাওয়া অনুকুলে এবং শ্রমিক সংকট না থাকায় বরাবরের মত চৌহালীতে এবারও বাম্পার ফলন হবে। তবে সরকার বীনা মূল্যে সার বীজ কীটনাশক ও প্রশিক্ষণ দিয়ে কৃষকরা মাঠে সফল চাষি হয়ে উঠছে। দিগন্ত মাঠ জুড়ে সবুজে দোল খাচ্ছে বোরোধান ক্ষতগুলোতে।