শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৭:১০ অপরাহ্ন

ই-পেপার

বঙ্গবন্ধু বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক

প্রতিনিধির নাম:
আপডেট সময়: রবিবার, ২ আগস্ট, ২০২০, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

মোঃ নাজমুল হুদা:

শোকের মাস আগস্টের আজ ২য় দিন। মানবসভ্যতার ইতিহাসে ঘৃণ্য ও নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের কালিমালিপ্ত মাস এটি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট মানবতার শত্রু প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন।আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাশ্রিত রাজনৈতিক ধারাকে বদলে ফেলার কুপ্রচেষ্টা ছিল। শুধু দিক পরিবর্তন নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দর্শনাশ্রিত গতিধারা চিরতরে রুদ্ধ করে বাংলা ও বাঙালির চিরায়ত রাজনীতি, সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং ঐতিহ্যবিরোধী দর্শন চালুরও অপচেষ্টা হয়েছে।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ছিল রাতের চেয়েও অন্ধকার। সৌভাগ্য বাঙালির যে, সেদিনের নৃশংসতা থেকে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা- শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।শেখ হাসিনা তার পিতার অসমাপ্ত কাজগুলো করতে পারছেন বলেই আজ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, দর্শন, আদর্শকে আঁকড়ে ধরে বাঙালি জাতীয়তাবাদের পথে চলতে পারছে। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছেন। কার্যকরও করেছেন বিচারের রায়। স্বাধীনতাবিরোধী মহল ছাড়া এটি সব বাঙালির কাঙ্ক্ষিত ছিল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক। তিনি বাংলার মাটি ও মানুষের পরম আত্মীয়, শত বছরের ঘোর নিশীথিনীর তিমির বিদারী অরুণ, ইতিহাসের বিস্ময়কর নেতৃত্বের কালজয়ী সষ্টা, বাংলার ইতিহাসের মহানায়ক, স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাঙালি জাতির পিতা। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। উন্নত সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’র স্বপ্নসারথি।

কিশোর বয়স থেকেই প্রতিবাদী ছিলেন। সর্বদা সত্য ও ন্যায়ের কথা বলেছেন। সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে তিনি কখনও দূরে সরে যাননি। ভীতি ও অত্যাচারের মুখেও সর্বদা সত্য ও ন্যায়ের পথে থেকে শোষিত মানুষের অধিকারের কথা বলেছেন। আর এভাবেই তিনি হয়ে ওঠেন স্বাধীনতার মূর্ত প্রতীক।

শোষিত মানুষের পক্ষে নির্ভীক অবস্থানের কারণে তিনি কেবল বাংলাদেশ নয়, সারাবিশ্বে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে স্বীকৃতি পান।
১৯৭৩ সালে আলজিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জোটনিরপেক্ষ আন্দোলনের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ, যেখানে তিনি স্পষ্ট করে বলেছিলেন- ‘বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত, এক পক্ষে শোষক, আরেক পক্ষে শোষিত। আমি শোষিতের পক্ষে।’

জোটনিরপেক্ষ আন্দোলন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে শোষিত মানুষের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর এই অবস্থান বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়। বিশ্বের শোষিত-নির্যাতিত মানুষ বঙ্গবন্ধুকে গ্রহণ করে নেয় নিজেদের নেতা হিসেবে।

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন গণতন্ত্রের অতন্দ্র সৈনিক। কৈশোর থেকেই তিনি মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে ছিলেন সোচ্চার। বায়ান্নর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, চুয়ান্নর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, আটান্নর সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, বাষট্টির শিক্ষা-আন্দোলন, ছিষট্টির ছয় দফা, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ- প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন নেতৃত্বের ভূমিকায়।

বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলনের প্রধান শক্তির উৎস ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে তিনি ছিলেন সর্বদা বজ কণ্ঠ। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের তার ভাষণ গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে, স্বাধিকারের পক্ষে, স্বাধীনতার পক্ষে এক ঐতিহাসিক দলিল। ওই ভাষণ একটি জাতিকে জাগ্রত করেছে, একবিন্দুতে মিলিত করেছে। এমন ঘটনা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।

 

বাংলাদেশের মুক্তি আন্দোলনে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নাম চিরদিন স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এ কথাই যেন ব্যক্ত হয়েছে অন্নদাশঙ্কর রায়ের এই শব্দগুচ্ছে- ‘যতদিন রবে পদ্মা-যমুনা গৌরী-মেঘনা বহমান/ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
#লেখক: গণমাধ্যমকর্মী ও সাবেক ছাত্রনেতা,


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর পড়ুন
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com
Raytahost Facebook Sharing Powered By : Raytahost.com